চার দশক ফরাসি কারাগারে থাকার পর মুক্তি পেলেন জর্জ আবদুল্লাহ

0
16

দীর্ঘ ৪১ বছর কারাভোগের পর মুক্তি পেয়েছেন লেবাননের আলোচিত ফিলিস্তিনপন্হি বিপ্লবী যোদ্ধা জর্জ ইব্রাহীম আব্দুল্লাহ। ফ্রান্সে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা ও ইসরায়েলি কূটনীতিককে হত্যার অভিযোগে তাকে জেলে পাঠিয়েছিল ফরাসি পুলিশ। জীবদ্দশায় আর কখনও ফ্রান্সে প্রবেশ না করার শর্তে মুক্তি দেয়া হয় তাকে।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) বৈরুতের রাফিক হারিরি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় জর্জ ইব্রাহীমকে বহনকারী বিমানটি।

দীর্ঘদিন পর পরিবারের সদস্যদের কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন জর্জ। ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী কেফায়া পড়ে বিমান বন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি।

জর্জ ইব্রাহীম বলেন, শত্রুদের প্রতিহতে আমরা জয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। জীবনের শেষ পর্যন্ত শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। ইসরায়েলের অস্তিত্ব কিছুদিনের মাঝেই হারিয়ে যাবে। ওরা শেষ অধ্যায়ে পা দিয়েছে।

১৯৮৪ সালে ফ্রান্সের লিওন শহর থেকে আটক হন জর্জ ইব্রাহীম। প্যারিসে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা চার্লস রবার্ট রে এবং ইসরায়েলি কূটনীতিক ইয়াকোভ বারসিমানটোভকে হত্যার অভিযোগে তাকে আটক করে ফরাসি পুলিশ।

জর্জ ইব্রাহীম আব্দুল্লাহ ১৯৫১ সালে লেবাননের উত্তরাঞ্চলীয় কোবাইয়াত শহরে একটি খ্রিস্টান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চ শিক্ষার জন্য পাড়ি জমান ফ্রান্সে। টুলুজ বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিষয়ে পড়ার সময়ই বামপন্হি ও বিপ্লবী চিন্তাধারার সাথে পরিচিত হন জর্জ ইব্রাহীম। এই বিশ্বাসই তার রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তি।

লেবাননে ৭০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন জর্জ ইব্রাহীম। যোগ দেন পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন- জেনারেল কমান্ড’ নামের সংগঠনে। উপনিবেশবাদ বিরোধী ও ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার আন্দোলনের প্রতি সমর্থনে অনুপ্রাণিত হয়ে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ বেছে নেন সাহসী এই বিপ্লবী যোদ্ধা। এরফলে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর রোষানলে পড়েন তিনি।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৪১ বছর কারাবাসের পর প্রিয় নেতাকে বরণ করতে বৈরুতের রাফিক হারিরি বিমান বন্দরে জড়ো হয়েছিল শত শত মানুষ। এসময় ভক্ত-অনুসারীদের ভালোবাসায় সিক্ত হন জর্জ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.