চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সোমবার ৫৪১তম সিন্ডিকেট সভায় প্রভাষক পদে ৩০ জন নিয়োগের অনুমোদন করা হয়। মঙ্গলবার তাদের নিয়োগপত্র পাঠানো হয়। তবে দুটি বিভাগে বিজ্ঞপ্তির অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকে নিয়োগ না দেওয়ায় এবং শিবিরের কর্মী নিয়োগের অভিযোগ এনে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে আবারও শাটল ট্রেন অবরোধ করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার নিয়োগপ্রাপ্তদের নিয়োগপত্র পাঠানোর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে হট্টগোল করতে থাকেন ছাত্রলীগের একাকার গ্রুপের নেতারা। অন্যদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ফতেহাবাদ স্টেশনে শাটল আটকে প্রতিবাদ করেন কনকর্ড গ্রুপের নেতারা।
একাকার গ্রুপের নেতা চবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন,‘আমরা সরকারবিরোধী ও জামায়াতে ইসলামীর সমর্থকদের যেন নিয়োগ না দেওয়া হয় সেজন্য গিয়েছিলাম। আবার রাইয়ান আহমেদের নিয়োগের বিষয়ে প্রশাসনকে জানিয়েছি।’
চবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও কনকর্ড গ্রুপের নেতা আবরার শাহরিয়ার বলেন,‘জামায়াত-শিবিরের নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পায় অথচ ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতারা নিয়োগ পায় না। কয়েকজন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তারা মেধাবী হয়েও ছাত্রলীগ করার কারণে নিয়োগ পায়নি। এগুলো নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রক্টর আমাদের সঙ্গে কথা তো বলেননি উল্টো খারাপ ব্যবহার করেছেন। তাই আমরা শাটল ট্রেন আটকে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শহীদুল ইসলাম বলেন,‘শাটল আজ দুইবার আটক করা হয়েছে। এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমরা তাদের সাথে কথা বলেছি। সাড়ে আটটার পর শাটল চলাচল শুরু হয়েছে। তবে রেজিস্ট্রার অফিসের ঘটনায় তেমন কিছু শুনিনি।’
এদিকে সিন্ডিকেট সভায় গনিত বিভাগে ৬ জন, ইসলামের ইতিহাস বিভাগে ৪ জন, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে ৬ জন, মেরিন সায়েন্স ইনিস্টিটিউটে ৬ জন এবং ওশানোগ্রাফি বিভাগে ৮ জন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রভাষক পদে তাদের নিয়োগের পর মঙ্গলবার নিয়োগপত্র পেয়েছেন তারা। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মেরিন সায়েন্স ইনিস্টিটিউটে ১ জন এবং ওশানোগ্রাফি বিভাগে ২ জন অতিরিক্ত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল মনছুর বলেন,‘গতকাল সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগে প্রভাষক নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে কিছু ছেলেরা ভাঙচুর করেছে শুনেছি। পরে প্রক্টরের কাছে জানতে পারি ছাত্রলীগের সাবেক কোনো নেতা নিয়োগ পায়নি বলে এমনটি করেছে তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছভাবে হয়েছে। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ নেই। জামাত-শিবির কিংবা ছাত্রলীগ এগুলো আমাদের নিয়োগের বিষয়ে বিবেচনার বিষয়ে পড়ে না। তবে যদি কেউ অতীতে আসামি হয়ে থাকে, মামলা থাকে সেই বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়। সর্বোপরি যোগ্য ব্যক্তিকেই নিয়োগ দেওয়া হয়।’
অতিরিক্ত নিয়োগের বিষয়ে ড. মো. আবুল মনছুর বলেন,‘ কখনও কখনও দু-একটি বিভাগ থেকে সুপারিশ করা হয় তাদের লোকবল সংকট আছে। যদি দেখা যায় বিশেষ প্রয়োজন, অতিরিক্ত নিয়োগ সেই ভিত্তিতেই দেওয়া হয়। দেশের সবগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই অতিরিক্ত নিয়োগের নিয়ম আছে।’