চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা, অনুষ্ঠান বর্জন শিক্ষক সমিতির

0
127
মহান স্বাধীনতা দিবসে চট্টগ্রাম বিভাগের ৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে এ অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির অধিকাংশ সদস্য ছবি: সংগৃহীত

রোববার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার ও সহ-উপাচার্য বেনু কুমার দের স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় উপাচার্য শিরীণ আখতারের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা হয়। শোভাযাত্রাটি স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর থেকে শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এরপর বেলা ১১টায় আলোচনা সভা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) পরিচালক আবদুল্লাহ মামুন।

সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী পার্থ প্রতীম মহাজন ও নাহিদ নেওয়াজ। সভায় বক্তব্য দেন উপাচার্য শিরীণ আখতার, সহ–উপাচার্য বেনু কুমার দে, প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মোহাম্মদ শাহ আলম, জাহাঙ্গীর চৌধুরী, এ এইচ এম জিলানী চৌধুরী প্রমুখ।

অনুষ্ঠান বর্জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা সমিতির

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির অভিযোগ, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির সঙ্গে যুক্ত প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদারকে আলোচনা সভার স্বাগত বক্তা করা এবং আইকিউএসির পরিচালক আবদুল্লাহ মামুনকে সভাপতি করার প্রতিবাদে শিক্ষক সমিতির অধিকাংশ সদস্য অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন।
অনুষ্ঠান বর্জনের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, উপাচার্য কারও সঙ্গে আলোচনা না করে অনুষ্ঠান পরিকল্পনা করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কীভাবে নির্বাচন করা হচ্ছে, কোন প্রক্রিয়ায় সম্মাননা দেওয়া হবে, এটা কেউ জানত না। এত বড় একটা অনুষ্ঠানে কোন যুক্তিতে আইকিউএসির পরিচালক সভাপতিত্ব করেন, সেটা নিয়েও আলোচনা করেননি তিনি। বিভিন্ন অনুষদের ডিনদেরও অনুষ্ঠান পরিচালনায় রাখেননি উপাচার্য।

মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী আরও বলেন, ‘সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তা করা হয়েছে প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদারকে, যিনি স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির সঙ্গে যুক্ত থাকার খবর আমরা পেয়েছি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দেওয়ার মতো একটা অনুষ্ঠানে তাঁকে স্বাগত বক্তা করার প্রতিবাদে আমরা সভা বর্জন করেছি।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পর্ষদ ১১ সদস্যবিশিষ্ট। এর মধ্যে তিনজন শিক্ষক আজকের অনুষ্ঠানে আলোচনা সভায় অংশ নেন। তাঁরা সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্বে রয়েছেন। এই তিন শিক্ষক হলেন আলাওল হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফরিদুল আলম, শহীদ আবদুর রব হলের প্রাধ্যক্ষ মো. দানেশ মিয়া এবং শামসুন নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ রকীবা নবী।

এদিকে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি রশীদুল হায়দার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানগুলো পরিচালনা বা সভাপতিত্ব করে থাকেন রেজিস্ট্রার। কিন্তু স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান পরিচালনা বা সভাপতিত্ব কোনোটিতেই রেজিস্ট্রারকে রাখা হয়নি। এর আগে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অফিসার সমিতিসহ অন্যান্য সমিতির জন্য মঞ্চে আসন রাখা হতো। এবার এটাও করা হয়নি। সব মিলিয়ে আমরা মনে করেছি যে অনুষ্ঠানে আমাদের মূল্যায়ন নেই, তাই সেখানে না যাওয়াই ভালো।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম  সিকদার  বলেন, শিক্ষক ও কর্মকর্তা সমিতির যদি অনুষ্ঠান নিয়ে কোনো আপত্তি থাকে, তাহলে সেটি অনুষ্ঠান শুরুর আগে বলা উচিত ছিল। অনুষ্ঠান শুরুর পর প্রশ্ন তোলা অযৌক্তিক। তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে হলেও তাঁদের (দুই সমিতির) অনুষ্ঠানে আসা উচিত ছিল। কিন্তু তাঁরা সেটা করেননি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.