ইউক্রেন যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়েছে তিন অস্ত্র

0
212
কাঁধ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ট্যাঙ্কবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র জ্যাভেলিন

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জিত না হওয়ার পেছনে ইউক্রেনীয় বাহিনীর দক্ষ সামরিক কৌশলসহ বেশ কয়েকটি কারণ শনাক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা মনে করছেন, পশ্চিমা বিশ্বের সরবরাহ করা অস্ত্রগুলো এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে জ্যাভেলিন, হিমার্স ও বেরাকতার টিবি২- এ তিনটি অস্ত্র বিশেষ ভূমিকা রেখেছে বলে সিএনএনের এক বিশ্লেষণে প্রকাশ পেয়েছে।

যুদ্ধের শুরুর দিকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দিকে দ্রুত এগিয়ে গিয়েছিল রুশ বাহিনী। সে সময় ইউক্রেনের জন্য এমন কিছুর প্রয়োজন ছিল, যা প্রতিপক্ষের হামলা ঠেকাতে পারবে। আর সে কাজটিই বেশ ভালোভাবে করতে পেরেছে জ্যাভেলিন। এটি কাঁধ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ট্যাঙ্কবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। যে কেউ একাই এটি পরিচালনা করতে পারেন। ব্যবহারের পদ্ধতি সহজ হওয়ায় এ অস্ত্রের গ্রহণযোগ্যতাও বেশি। মার্কিন কোম্পানি লকহিড মার্টিন ও রেথিয়ন যৌথভাবে ক্ষেপণাস্ত্রটি তৈরি করেছে।

লকহিড মার্টিনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, জ্যাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের আগে ডিসপ্লেতে কার্সর দিয়ে লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে দিতে হয়।

ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুর দিকে রুশ বাহিনী যখন শহর এলাকাগুলোয় ঢোকার চেষ্টা করছিল, তখন জ্যাভেলিন ব্যবহার করে ভালো ফল পেয়েছিল ইউক্রেন।

হিমার্স রকেট সিস্টেম যুদ্ধে ব্যাপক প্রভাব দেখিয়েছে

এদিকে হিমার্সও এ যুদ্ধে ব্যাপক প্রভাব দেখিয়েছে। এর পুরো নাম এম১৪২ হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম। মার্কিন কোম্পানি লকহিড মার্টিন হিমার্স ব্যবস্থার প্রস্তুতকারক ও স্বত্বাধিকারী। আসলে হিমার্স ব্যবস্থা হচ্ছে একটি পাঁচ টন ওজনের ট্রাক, যেখানে একটি উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা আছে এবং তা থেকে প্রায় একই সঙ্গে ছয়টি রকেট ছোড়া যায়। যুদ্ধক্ষেত্রের সম্মুখ সারিতে হামলা চালিয়ে পাল্টা হামলা এড়াতে এটি দ্রুত অবস্থান বদল করে ফেলতে পারে।

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মসূচির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মার্ক কানসিয়ান জানুয়ারিতে লেখেন, যুদ্ধের শুরুর ধাপে জ্যাভেলিন যেমন খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, তেমনি পরবর্তী ধাপে হিমার্স গুরুত্বপূর্ণ ওঠে।

হিমার্স যে ধরনের যুদ্ধাস্ত্র ছোড়ে, সেগুলোকে গাইডেড মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম (জিএমএলআরএস) নামে অভিহিত করা হয়। এসব রকেট ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।

তুরস্কের নকশায় তৈরি বেরাকতার টিবি২ ড্রোন

অন্যদিকে বেরাকতার টিবি২ ড্রোনটি তুরস্কের নকশায় তৈরি। ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে এটি বিশ্বে সবচেয়ে পরিচিত চালকবিহীন ড্রোনগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে। এ ড্রোন অপেক্ষাকৃত সস্তা। এটিতে অভিযানের ভিডিও রেকর্ড করা থাকে।

এসব ভিডিওতে দেখা গেছে, এ ড্রোন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র, লেজার নিয়ন্ত্রিত রকেট এবং স্মার্ট বোমা ছুড়ে রুশ সাঁজোয়া যান, গোলাবারুদ ও সরবরাহ ব্যবস্থা গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.