৯৯১ সালে জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে চালু হয় এশিয়া উপ-মহাদেশের বৃহত্তম, দানাদার ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড। উন্নত গুণগত মানের কারণে ধীরে ধীরে কৃষকের চাহিদার শীর্ষে পৌছায় এখানকার উৎপাদিত সার।
তবে কখনও যান্ত্রিক ত্রুটি, কখনওবা গ্যাস সংকটে সার কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হয়। এ বছরের ১৫ জানুয়ারি থেকে গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদনেই যেতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষীরা। আবাদ মৌসুমের আগে উৎপাদন না হলে, কৃত্রিম সার সংকটের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
একজন কৃষক বলেছেন, একদিকে বেকার, অন্যদিকে সার-ও বেশ চড়া মূল্যে কিনতে হয়। আবার সার-এর সংকট-ও রয়েছে। আবাদ মৌসুমের সার পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে মনে হতাশা কাজ করছে।
প্রায় নয় মাস উৎপাদন বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে কারখানার দিনমজুর ও ট্রাক চালকরা। একজন দিনমুজুর বলেন, বাহিরের থেকে সার আসে। যার কারণে, আমাদের কোন ইনকাম নাই। তাই, দিনে এক থেকে দেড়শ’ টাকা কামাই হয়। এভাবে, আমাদের সংসার চলে না।
একজন প্রবীণ যমুনা টেলিভিশনকে জানান, যমুনা সার কারখানা বন্ধ থাকার কারণে শ্রমিক কর্মচারী থেকে শুরু করে এলাকার হাজার হাজার মানুষ বেকার। তারা সবাই মানবেতর জীবনযাপন করছে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিন প্রায় ৩ কোটি টাকা লোকসান গুনছে। এছাড়া সার আমদানিতে সরকারকেও দিতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের ভর্তুকি।
যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন ফোনে যমুনা টেলিভিশনকে বলেন, কারখানার মেশিনগুলো অত্যাধুনিক। যদি কারখানা বন্ধ থাকে, তাহলে বাতাসের সাথে যেসব ধূলিকণা থাকে, সেসব ধূলিকণাগুলো-ও মেশিনগুলোর জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও, মেশিনগুলো ক্ষয় হতে থাকে। বিশেষকরে, একটা মেশিন বেশ কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর চালু করার সময় অনেক রকমের সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
আগে ১২০০ থেকে ১৩৫০ মেট্রিকটন সার উৎপাদনে খরচ হতো প্রায় ৪৩ হাজার ঘনফুট গ্যাস। বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২ হাজার ঘনফুট।