একুশের রাজনৈতিক অভিঘাতv

0
124
আজ মাতৃভাষা দিবস

একটি দেশে একাধিক জাতি যখন সহাবস্থানে আসে, যোগাযোগ-সুবিধার্থে ভাষার প্রশ্নে ঐক্যে পৌঁছানো জরুরি হয়ে পড়ে। অবিভক্ত ভারতে আমাদের চৈতন্যে ভাষার আধিপত্য চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলে এসেছে ত্রিশের দশক থেকেই। ১৯৩৭ সালে মুসলিম লীগের লক্ষেষ্টৗ অধিবেশনে, মুসলমানদের দাপ্তরিক কার্যনির্বাহী ভাষা হিসেবে প্রথমবারের মতো উর্দু চাপিয়ে দিতে চেষ্টা করেন মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ। বাংলার তৎকালীন প্রধান এ কে ফজলুল হক তার বিরোধিতা করেন। সেই থেকে শুরু। ভাষা নিয়ে অপকৌশল প্রয়োগের পরিকল্পনা আবারও প্রকাশিত হয়ে পড়ে ধর্মরাষ্ট্র পাকিস্তানের আবির্ভাবের পর। মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ আবারও এ অঞ্চলের হাজার বছরের দৃঢ়মূল সাংস্কৃতিক ভিতকে অগ্রাহ্য করে কথিত মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রশ্নে অবিকল্প হিসেবে উর্দুকেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাংলার ছাত্রসমাজ থেকে শুরু করে সমাজের প্রান্তিক পর্যায়ের প্রায় সকল মানুষ এর প্রবল বিরোধিতার অংশ হিসেবে এক দুর্বার সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলেন, যা ক্রমশ রাজনৈতিক রূপ পায়। ১৯৭১-এ রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে একটি স্বাধীন দেশের আত্মপ্রকাশ, যার নাম তার ভাষার নামে- বাংলাদেশ।

ভাষার প্রশ্নে কোনো আধিপত্যবাদকে প্রশ্রয় না দেওয়া আমাদের পূর্বজরা যে আর্থ-সমাজ-রাজনৈতিক ভিত তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিলেন, সেই ভিতের ওপর আদৌ কি আমরা অবস্থান করছি? মহান ভাষা আন্দোলনের ৭১তম বর্ষে আমরা পদার্পণ করতে যাচ্ছি। যে রাজনৈতিক প্রত্যয়ে ভাষা আন্দোলনের সূচনা, সমকালীন প্রেক্ষাপটে তার বিশেষজ্ঞ বিশ্নেষণ নিয়ে আমাদের নিবেদন…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.