
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস তিনজন ইসরায়েলি জিম্মিকে হস্তান্তর করেছে। অন্যদিকে ইসরায়েল ১৮৩ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে। যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, বন্দিবিনিময়ের পঞ্চম ধাপে আজ শনিবার তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়।
হামাসের পক্ষ থেকে যে তিনজন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন এলি শারাবি, ওহাদ বেন আমি এবং ওর লেভি।
গত ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এর পর থেকে এর আগপর্যন্ত ১৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ৩৮৩ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্ত করা হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ের জন্য নির্ধারিত তিন সপ্তাহের সময়সীমায় হামাসের পক্ষ থেকে আরও ৩৩ জন জিম্মি এবং ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। যদিও ইসরায়েল বলছে, ওই ৩৩ জিম্মির মধ্যে ৮ জন মারা গেছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামলা চালায় হামাস। জিম্মি করে গাজায় আনা হয় ২৫১ জনকে। নিহত হন ১ হাজার ২০০ জন। ওই দিনই গাজায় পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। শুরু হয় যুদ্ধ।
এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে গাজায় অন্তত ৪৭ হাজার ৫০০ জন নিহত হয়েছেন। হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য এটা। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় দুই-তৃতীয়াংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও গাজাবাসীর ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে অনিশ্চয়তা ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। এর কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর গত সপ্তাহে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছেন। গাজা খালি করতে চান তিনি। ট্রাম্পের এ পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ ও আরব দেশগুলো।
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তুতি হিসেবে অবশিষ্ট জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়া এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহারে সম্মত হওয়ার লক্ষ্যে এ সপ্তাহে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়েছে।
মিসরের নিন্দা
মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সৌদি ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে মিসর। তারা বলেছে, এ ধরনের মন্তব্য সৌদি সার্বভৌমত্বের সরাসরি লঙ্ঘন।
ইসরায়েলে অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন
ইসরায়েলের কাছে প্রায় ৭৪০ কোটি ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির প্রস্তাবে গত শুক্রবার অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন দেওয়া অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির প্যাকেজে ৬৭৫ কোটি ডলারের গোলাবারুদ, গাইডেন্স ও ফিউজ বিক্রির কথা রয়েছে। বোয়িংসহ কয়েকটি বড় মার্কিন ঠিকাদারের এসব সরঞ্জাম সরবরাহ করার কথা।
এমন একসময় এ ঘোষণা দেওয়া হলো, যখন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ওয়াশিংটন সফর শেষ করলেন। সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, তাঁর প্রশাসনের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন নেতানিয়াহু।
রয়টার্স, গাজা












