ফিলিস্তিনের গাজার দক্ষিণ খান ইউনিসে ভূগর্ভস্থ একটি টানেল থেকে ৬ ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করেছে ইসরায়েল। দেশটির সামরিক বাহিনী মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে। ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে এই জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গোয়েন্দা তথ্য ও ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিষয়টি তাঁদের স্বজনদের অবহিত করা হয়। খবর-এএফপি
জিম্মি ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠিত একটি ফোরাম বিবৃতিতে বলেছে, গাজায় আটক থাকা বাকি জিম্মিদের যেন চুক্তির মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হয়। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় এনেছিল হামাস। হামাসের আক্রমণে ইসরায়েলে আনুমানিক ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনার পর গাজায় ইসরাইলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৭,৮৭৭ জন নিহত এবং ৮৬,৯৬৯ জন আহত হয়েছে।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সমঝোতা এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য অভিযানের শুরু থেকে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার। স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির জন্য দু’পক্ষকে একটি নতুন চুক্তির আওতায় আনতে চেষ্টা করেছেন মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা।
ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে মার্কিন প্রস্তাব মেনে আলোচনা শুরু করতে রাজি হয়েছে হামাস। তবে আলোচনায় বসার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে হামাস। গোষ্ঠীটির দাবি, চুক্তি স্বাক্ষরের আগে ইসরায়েলকে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে প্রথমে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। এছাড়া প্রথম পর্বের ছয় সপ্তাহের সমঝোতা চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনার সুযোগ রাখতে হবে।
শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিকভাবে মধ্যস্থতাকারী একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেন, ‘ইসরায়েল প্রস্তাবটি গ্রহণ করলে একটি কাঠামোগত চুক্তির পথ খুলতে পারে এবং গাজায় নয় মাস ধরে চলা যুদ্ধের অবসান হতে পারে।’
ইসরায়েলের আলোচনাকারী দলের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘চুক্তিতে আসার জন্য এখন সত্যিই সুযোগ রয়েছে। এটি গত নয় মাস ধরে চলমান যুদ্ধের অতীত দৃষ্টান্তের বিপরীত। কারণ, ইসরায়েল এতদিন হামাসের শর্তগুলোকে অগ্রহণযোগ্য বলে এসেছে।’
হামাস সূত্র জানিয়েছে, দ্বিতীয় দফায় চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যতদিন পরোক্ষ আলোচনা চলবে ততদিন মধ্যস্থতাকারীরা অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি, ত্রাণ সরবরাহ ও ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা দেবেন বলে প্রস্তাবে জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির প্রচেষ্টা জোরদার হয়েছে। আঞ্চলিক এক সূত্রের দাবি, নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে একটি চুক্তি নিশ্চিত করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।