যুদ্ধবিরতি উপেক্ষা করে পবিত্র রমজানে গাজার বিভিন্ন জায়গায় বিমান হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত ২৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে অধিকাংশই শিশু। চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর থেকে গাজায় এটিই ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় হামলা।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গাজার উত্তরাঞ্চল, গাজা সিটি, দেইর আল বালাহ, খান ইউনিস, জাবালিয়াসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। হামলাগুলো বাড়ি-ঘর, আবাসিক ভবন, বাস্তুচ্যুত লোকদের আশ্রয় দেওয়া স্কুল এবং তাঁবুগুলিতে আঘাত হানে। এতে নারী ও শিশুসহ বহু মানুষ হতাহত হয়।
হামাসের দাবি, একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি শেষ করে দিয়েছে ইসরায়েল। নেতানিয়াহু ও তার উগ্রপন্ত্রী সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি বানচালের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে গাজায় থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখন অনিশ্চিত।
ইসরায়েলের এক সেনা কর্মকর্তা জানায়, হামলার পরিকল্পনা বেশ আগেই করা হয়েছিল। এবারের লক্ষ্যবস্তু হামাসের মাঝারি পর্যায়ের কমান্ডার, নেতৃত্বে থাকা লোকজন এবং তাদের অবশিষ্ট স্থাপনাগুলো। যতদিন প্রয়োজন হয়, ততদিন এই হমলা চলবে। শুধু বিমান অভিযানেই এটি সীমাবদ্ধ থাকবে না।
এদিকে, হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট জানান, গাজায় সর্বশেষ হামলা শুরু করার আগে ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেছিল ইসরায়েল।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, হামাস, হুথি ও ইরানসহ যারা ইসরায়েলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রকে আতঙ্কিত করতে চায় তাদের মূল্য দিতে হবে।
ক্যারোলিন লিভিট আরও বলেছেন, হুথি, হিজবুল্লাহ, হামাস, ইরান এবং ইরান সমর্থিত সন্ত্রাসী প্রক্সিগুলোর উচিত ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া। কারণ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র ও তার বন্ধু এবং মিত্র ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়াতে ভয় পান না।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন লাখেরও বেশি মানুষ।
এ ছাড়া দখলদারদের হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে লাখ লাখ বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।