গভীর নিম্নচাপ রূপ নিলো ঘূর্ণিঝড়ে, বাড়ল সতর্কসংকেত

0
40
ঘূর্ণিঝড়

বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকার আকাশ মেঘলা রয়েছে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে উপকূলের বিভিন্ন এলাকায়। রাতে বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে।

আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ সৃষ্টির কথা জানায়।

আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পূর্ব–মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা গভীর নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তর–পশ্চিম দিকে এগিয়ে ও ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় দানায় পরিণত হয়েছে। এটি আজ সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর–পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত নামিয়ে ২ নম্বর দূরবর্তী হুশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আবদুর রহমান খান আজ সকালে বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নেয়। এটি আজ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এর প্রভাবে এখন আকাশ মেঘলা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আজ সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ নামটি কাতারের দেওয়া।

আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের ওডিশা বা পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের দিকে যেতে পারে; যদিও এটা খুব প্রাথমিক ধারণা। এর গতিপথ পরিবর্তন হতে পারে। তবে এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলসহ বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এটি ভারতের ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছেন আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের অতিক্রম করার পথ আরও পরে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে এর প্রভাবে খুলনা ও বরিশাল উপকূলে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি হতে পারে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি অঞ্চলেও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।

ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ যেভাবে

আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও )। ডব্লিউএমও সে জন্য পাঁচটি বিশেষ আঞ্চলিক আবহাওয়া সংস্থার (আরএসএমসি) সঙ্গে সমন্বয় করে ২০০৪ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করে। আরএসএমসি তার সদস্যদেশগুলোর কাছ থেকে নামের তালিকা চেয়ে থাকে। তালিকা পেলে দীর্ঘ সময় যাচাই-বাছাই করে সংক্ষিপ্ত তালিকা করে ডব্লিউএমওর কাছে পাঠায়।

বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা অনুমোদন করে আঞ্চলিক কমিটির একটি প্যানেল। তার নাম ডব্লিউএমও/এসকাপ প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস। এর মধ্যে আছে ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, ইয়েমেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.