খুলনা সিটি নির্বাচনে ১৫–২০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি

0
160
খুলনা নগরের কেডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ে ‘বিএনপির শান্তিপূর্ণ সকল কর্মসূচিতে পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতার আহ্বান’ এবং সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আজ বুধবার খুলনা নগর বিএনপি প্রেস ব্রিফিং আয়োজন করে

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট পড়ার হার বেশি দেখানো হয়েছে বলে দাবি করছে খুলনা নগর বিএনপি। খুলনা নগর বিএনপির নেতারা দাবি করছেন, এই নির্বাচনে ১৫ থেকে ২০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি। কে জিতবে বা হারবে, তা ইভিএমে নির্ধারণ করে রাখা সম্ভব বলে দাবি করেন তাঁরা।

আজ বুধবার দুপুরে নগর বিএনপি আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি নেতারা এসব কথা বলেন। নগরের কে ডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ে ‘বিএনপির শান্তিপূর্ণ সকল কর্মসূচিতে পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতার আহ্বান’ এবং সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ওই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে নগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম ওরফে তুহিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,  ‘নির্বাচনে ভোট পড়ার হার দেখলে বোঝা যায়, এটা পাতিয়ে–সাজিয়ে দেখানো হয়েছে যে “এত শতাংশ” ভোট পড়েছে। ভোট শেষে বিকেলে টেলিভিশনে দেখানো হলো ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে। রাতে দেখলাম ৪৮ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। আসলে ১৫ থেকে ২০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি। ইভিএম এমন এক বাক্স, যে বাক্স দিয়ে সবকিছু করা সম্ভব। এই জাদুর বাক্স দিয়ে কাউকে জেতানো আবার কাউকে হারানো যায়। কে জিতবে বা হারবে, তা ইভিএমে নির্ধারণ করে রাখা সম্ভব।’

নগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘ভোটের দিন বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনে ঘুরে দেখেছি তেমন কোনো লোক ছিল না। সাংবাদিকদের মাধ্যমেও আমরা জেনেছি কেন্দ্রে উপস্থিতি কেমন ছিল। অনেক প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে আমাদের বলেছেন, তাঁদের কেন্দ্রে কোথাও ১৫ শতাংশ, কোথাও ১৭ আবার কোথাও ২২ শতাংশ ভোট পড়েছে। এ ছাড়া খুলনা ও বরিশালে পরাজিত মেয়রপ্রার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে ইভিএমে কেমন ভোট হয়েছে, তা বলছেন।’

বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভোট দিতে যাননি দাবি করে নগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘বিএনপিসহ দেশপ্রেমিক জনগণ নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। সরকার বিএনপি নেতা-কর্মীদের হত্যা, নির্যাতন এবং প্রায় ৫০ লাখ নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এরই মধ্যে অনেক নেতা-কর্মীকে গুম করে রাখা হয়েছে। এ সরকারের অধীন কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। আমরা আমাদের কর্মীদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলাম। নেতা-কর্মীরা আমাদের আহ্বানে শতভাগ সাড়া দিয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে নগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম ওরফে মনা বলেন, একটি অনির্বাচিত সরকার ভোটের অধিকার হরণ করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রেখেছে। দু–দুটি প্রহসনের নির্বাচনের পর ভবিষ্যতে আরও একটি সাজানো-পাতানো ভোট আয়োজনের চক্রান্তে লিপ্ত সরকার।

সারা দেশে বিএনপি কর্মসূচি পালন করতে পারলেও খুলনায় পুলিশ বিএনপির কর্মসূচিতে বারবার হামলা, মারমুখী আচরণ ও মিথ্যা মামলার হুমকি দিচ্ছে অভিযোগ করে নগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম বলেন, খুলনায় কর্মসূচি এলেই সরকারের পেটোয়া বাহিনী পুলিশ গায়েবি মামলা দিয়ে, হামলা চালিয়ে নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অহেতুক হয়রানি করে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। কেন্দ্রঘোষিত কোনো কর্মসূচি এলেই খুলনায় গণগ্রেপ্তারে নামে পুলিশ। গত বছরের মে মাসে এক কর্মসূচিতে ৮০০ নেতা-কর্মীর নামে মামলা করা হয়েছে। মাসখানেক আগেও এক কর্মসূচিতে ১ হাজার ৩০০ নেতা-কর্মীর নামে মামলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ১৬ জুন বিকেলে নগর বিএনপি ‘বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক দুর্নীতির প্রতিবাদে’ পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে জানিয়ে নেতারা তাঁদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে খুলনা পুলিশ প্রশাসনের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে নগর বিএনপির নেতা স ম আবদুর রহমান, সৈয়দা রেহেনা ঈসা আবুল কালাম, কাজী মাহমুদ আলী, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম, শের আলম, মাহবুব হাসান, শেখ সাদী, হুমায়ুন কবীর, সৈয়দ সাজ্জাদ আহসান, মিজানুর রহমানসহ বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.