বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা। এভারকেয়ার হাসপাতালে মেডিকেল বোর্ডের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে তার চিকিৎসা চলছে। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘উনার শারীরিক অবস্থা যেদিন ভর্তি হয়েছেন ওই দিনের মতো এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল আছে।’
তিনি বলেন, ‘উনি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে আছেন। বোর্ডের সদস্যরা সার্বক্ষণিকভাবে শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন। প্রয়োজনীয় যেসব চিকিৎসা দরকার হচ্ছে সেটার ব্যবস্থা করছেন টাইম-টু-টাইম উনার শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে।’
এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিনী ডা. জোবায়েদা রহমান ও দেশের বাইরের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন।
চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের সকল সদস্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেখেন। বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন। বুধবার বিকেলে আবারও বৈঠকে বসবে মেডিকেল বোর্ড।
দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, লিভার ও হৃদরোগে ভুগছেন ৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সোমবার রাতে গুলশানের বাসা ফিরোজায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দুই মাস আগে ২৯ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। পাঁচ দিন পর মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে বাসায় ফেরেন।
২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কয়েকবার নানা অসুস্থতা নিয়ে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। গত বছর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ওই বছরের অক্টোবরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আরও সাত বছরের সাজা হয় বিএনপি নেত্রীর। তিনি তখনও পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারে ছিলেন।
দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করেন ছয় মাসের জন্য। ওই বছরের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানে তার বাড়িতে রয়েছেন। পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে প্রতি ছয় মাস পরপর মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।