গতকালের নাটকীয় ঘটনাবলির সূত্রপাত হয়, পেরুর জাতীয় টেলিভিশনে কাস্তিলিওর ভাষণের মধ্য দিয়ে। জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি পেরুতে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দেন।
একই সঙ্গে ৫৩ বছর বয়সী কাস্তিলিও বলেন, কংগ্রেস তিনি ভেঙে দেবেন। কারফিউ জারি করবেন। ডিক্রি দিয়ে দেশ শাসন করবেন।
কাস্তিলিওর এই ঘোষণায় সংকট আরও ঘনীভূত হয়। দেশ-বিদেশে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। প্রতিবাদে দেশটির বেশ কয়েকজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন।
দেশটির সাংবিধানিক আদালতের প্রধান কাস্তিলিওকে একটি অভ্যুত্থান শুরুর জন্য অভিযুক্ত করেন। কাস্তিলিওকে তাঁর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
পেরুর পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনী একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে। এই বিবৃতিতে বলা হয়, তারা পেরুর সাংবিধানিক আদেশকে শ্রদ্ধা করে।
কাস্তিলিওর বিরুদ্ধে নতুন অভিশংসন কার্যক্রম শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আগে দুইবার তাঁকে অভিশংসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
কাস্তিলিওকে অভিশংসন করতে বিরোধী-নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসে জরুরি অধিবেশন ডাকা হয়। কংগ্রেসে অভিশংসন ভোট হয়।
১০১ জন আইনপ্রণেতা কাস্তিলিওকে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেন। অভিশংসনের বিপক্ষে ভোট পড়ে মাত্র ছয়টি। ১০ জন ভোটাভুটিতে অনুপস্থিত থাকেন।
অভিশংসনের পর গতকাল সন্ধ্যায় কাস্তিলিওকে গ্রেপ্তার করা হয়। দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের একটি সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে।
উত্তেজনাপূর্ণ দীর্ঘ নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষে ২০২১ সালের জুলাইয়ে লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন কাস্তিলিও।
গত ৬ জুন পেরুতে দ্বিতীয় দফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই নির্বাচনে কাস্তিলিও প্রতিপক্ষ ছিলেন ডানপন্থী কিকো ফুজিমোরি। নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছিলেন ফুজিমোরি। তাই অভিযোগ পর্যালোচনা শেষে বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে প্রায় দেড় মাস সময় লেগেছিল।
কাস্তিলিও একজন দরিদ্র কৃষকের সন্তান। পেরুর গ্রামীণ দরিদ্র ভোটারদের সমর্থনে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। কাস্তিলিওর জন্ম ১৯৬৯ সালে। ১৯৯৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ছিলেন প্রাইমারি শিক্ষক। এর মধ্যে ২০০২ সালে তিনি রাজনীতিতে নাম লেখান।