আর ১১ দিন পরই চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনার ৭০ কিলোমিটার এবং দক্ষিণের মা ইলিশ বিচরণকারী চারটি প্রজনন ও ছয়টি চিহ্নিত অভয়াশ্রমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে। ১২ অক্টোবর থেকে ২২ দিন জেলেরা এসব এলাকায় ইলিশ এবং যে কোনো ধরনের মাছ ধরতে পারবেন না। হাটবাজার কিংবা আড়তে ইলিশ এবং এসব নদীর অন্য মাছও কেনাবেচা করা যাবে না। এ নিষেধাজ্ঞার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই চাঁদপুরের বাজারে ইলিশ আমদানি বাড়ছে। ক্রেতা-বিক্রেতার সরগমও বেড়েছে সমানতালে।
জেলা মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবেবরাত জানান, শনিবার দুপুর পর্যন্ত চাঁদপুর বড় স্টেশন মৎস্য অবতরণ ও মাছের বৃহৎ আড়তটিতে দেড় হাজার মণ ইলিশ আমদানি হয়েছে। এর বেশির ভাগই নোয়াখালীর হাতিয়া এবং একই জেলার চর আলেকজান্ডার এলাকার ইলিশ। তিনি বলেন, চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনার ইলিশ বেশি হলে ২০০ মণ। শবেবরাত আরও জানান, গত ৫ থেকে ৭ দিনই মাছের আমদানি আগের তুলনায় বেড়েছে। তবে ‘অতিথি ইলিশ’-এর আমদানি বাড়লেও দাম আগের মতোই। তাই দাম নিয়ে ক্রেতাদের রয়েছে হতাশা।
টানা তিন দিনের সরকারি ছুটির কারণে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে অন্তত ৩ হাজার ক্রেতার আগমন ঘটে চাঁদপুরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বড় স্টেশন মাছ ঘাটে। কাকডাকা ভোর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ইলিশ বেচাকেনার ধুম।
ইলিশটা কি চাঁদপুর, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, ভোলা নাকি বরগুনার!– এসব দেখার সময় নেই তাদের। শনিবার রাব্বী নামে ঢাকার এক ক্রেতা প্রাইভেটকার নিয়ে এসেছেন ইলিশ কিনতে। বললেন, বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে মাছ কিনলেন প্রায় মণখানেক। চাঁদপুরের মাছ কিনলেন, না বাইরের– এমনটা জিজ্ঞেস করতেই উত্তর দিলেন, ‘আরে ভাই চাঁদপুর আসলাম তো চাঁদপুরেরই মাছ কিনতে। এখন কেউ যদি আমারে চাঁদপুরের মাছ বইলা হাতিয়া, সন্দ্বীপ, ভোলা বা বরগুনার হাতিয়ার মাছ দেয় জাইনা শুইনা, তয় কিছু তো করার নাই ভাই। আমরা তো মাছ চিনি না। যদি ঠকায়, তো আল্লাহ বিচার করব।’
এক ইলিশ ব্যবসায়ী জানান, বড় বলেন, ছোট বলেন, হাতিয়া থেকেই মাছ বেশি আসছে এখন। ইলিশ আকারভেদে বিভিন্ন দাম। এর মধ্যে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম সাইজের ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি। ১ কেজির ইলিশ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি। আর চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনার ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি। ১ কেজি ওজনের ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর চাঁদপুরের দেড় কেজি কিংবা এর ওপরের ওজনের ইলিশ কেজিতে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা।