আইপিএলে তাঁর স্ট্রাইক রেট নিয়ে সমালোচনা ছিল। বিরাট কোহলি রান করেন, কিন্তু যে স্ট্রাইক রেটে করেন, সেটা সন্তোষজনক নয়। অন্তত হাল আমলে আইপিএলের অন্য বিস্ফোরক নামগুলো বিবেচনায় নিলে এমন সমালোচনা কম-বেশি হয়। কিন্তু কাল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ১৮৭ রান তাড়া করতে নেমে কোহলি ফাফ ডু প্লেসিকে সঙ্গে নিয়ে দারুণ এক সেঞ্চুরিতে দলকে জেতালেন ৮ উইকেটে। ১৮৭ যে মোটামুটি কঠিন লক্ষ্য, কোহলি আর ডু প্লেসির ব্যাটিং দেখে সেটি মনেই হয়নি। এটি ছিল আইপিএলে কোহলির ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। আর এই সেঞ্চুরি দিয়ে আইপিএলের রেকর্ড বইয়ে নিজেকে বসিয়েছেন ক্রিস গেইলের পাশে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিক হিসেবে। ক্যারিবিয়ান গেইলের সেঞ্চুরিও আইপিএলে ছয়টি।
কোহলি-রোহিত নন, তরুণদের টি-টোয়েন্টি দলে চান শাস্ত্রী
৬৩ বলে ১০০ করেন কোহলি। ৬২তম বলে ভূবনেশ্বর কুমারকে ছক্কা মেরে তিন অঙ্কে পৌঁছে যান। এর বাইরেও ছিল আরও ৩টি ছক্কা ও ১২টি চারের মার। ডু প্লেসির সঙ্গে তাঁর ওপেনিং জুটি ছিল ১৭২ রানের। এর মধ্যে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানের অবদান ৭১। এটি এ মৌসুমে আইপিএলে সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড। কোহলি-প্লেসির জুটিতে আসা জয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর আইপিএলের শেষ চারে খেলার সম্ভাবনা বেড়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, পাওয়ারপ্লের ওভারগুলোতে রানের চাকা শ্লথ করে ফেলার যে সমালোচনাটা কোহলিকে নিয়ে চলছিল, কালকের সেঞ্চুরি দিয়ে কোহলি সে সমালোচনাটা আপাতত বন্ধ করে দিয়েছেন। এর আগে কোহলির পাঁচ সেঞ্চুরির সর্বশেষটি এসেছিল ২০১৯ সালে। চার বছর পর আবার আইপিএলে সেঞ্চুরির আনন্দে ভাসলেন।
দারুণ এই সেঞ্চুরির পর মাঠেই কোহলিকে ভিডিও কল দেন তাঁর স্ত্রী, বলিউড অভিনেত্রী আনুশকা শর্মা। ভিডিও কলে দুজনের কথা বলার ভিডিও এখন ভাইরাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। স্বামীর অনুপ্রেরণা হিসেবে আগে থেকেই পরিচিত আনুশকা সেঞ্চুরির পরপরই নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে লিখেছেন ‘কী দুর্দান্ত এক ইনিংস।’কোহলির এই সেঞ্চুরিতে টুইট করে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন শচীন টেন্ডুলকারও, ‘সে কাভার ড্রাইভটা খেলার পর প্রথম বল থেকেই বোঝা যাচ্ছিল দিনটা হবে বিরাট কোহলির। বিরাট ও ডু প্লেসির নিয়ন্ত্রণে ছিল ম্যাচ। তারা শুধু বড় শটই খেলেনি, জুটি গড়তে দৌড়ে রানও নিয়েছে। তারা যেভাবে ব্যাট করেছে, তাতে ১৮৬ রান খুব বড় মনে হয়নি।’
কোহলি বললেন, ‘আমি অনেক ভুল করেছি’
ম্যাচ শেষে নিজের সমালোচকদের নিয়ে কোহলির মন্তব্য, ‘আমি এমনিতেই আমাকে যথেষ্ট চাপের মুখে ফেলেছি, আমি অতীত নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না। দলের জয়ে অবদান রাখা ইনিংস খেলেও অনেক সময় আমি নিজেকে প্রশংসায় ভাসাই না। বাইরে থেকে কে কী বললেন, এটা নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। সমালোচনা করাটা তাদের কাজ।’
খেলার ধরন নিয়ে কোহলি নিজের ভাবনাটাও সবার সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন, ‘আমি কখনোই উচ্চাভিলাষী শট খেলি না। আমি টেকনিককে প্রাধান্য দিই। আমরা ১২ মাস ধরে ক্রিকেট খেলি। খেলাটা আমার কাছে এমন না যে মাঠে নামলাম, উচ্চাভিলাষী একটা/দুটো শট খেললাম আর উইকেট ছুড়ে দিয়ে চলে এলাম। আইপিএলের পরপরই আমাদের টেস্ট খেলতে হবে। সুতরাং সেটিও মাথায় রাখতে হবে।’