অনেকে বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। কেউ ডায়াবেটিস রোগী, কেউবা হৃদ্রোগে ভুগছেন। আবার কারও উচ্চ রক্তচাপ আছে। কেউ কেউ ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা বা কিডনি রোগে ভুগছেন। সামনে পবিত্র ঈদুল আজহা। তাই মাংস খাওয়ার ব্যাপারে কার জন্য কেমন সচেতন হওয়া উচিত, আসুন তা জেনে নিই।
এক দিনে কতটুকু মাংস খাওয়া যাবে
প্রত্যেক মানুষের শরীরের বৈশিষ্ট্য আলাদা, তাই খাবারের চাহিদাও আলাদা। একজন স্বাভাবিক ওজন ও উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওজন ৭০ কেজি হলে সারা দিনে গুণগত মানভেদে প্রায় ৩০০ গ্রাম মাংস খেতে পারেন। তবে অন্য কোনো প্রোটিনের উৎস থাকলে মাংসের পরিমাণ কমাতে হবে। সেটি একবারে না খেয়ে সারা দিনে দুই–তিনবারে ভাগ করে খেতে হবে। সঙ্গে প্রতিবেলায় কিছু শাকসবজি বা সালাদ অবশ্যই রাখতে হবে।
কিডনি রোগী
বাড়িতে যদি কোনো কিডনি রোগী থাকেন, তবে তাঁর জন্য খাবারে ভিন্নতা আনতে হবে। কিডনি রোগীদের ফার্স্ট ক্লাস প্রোটিনের পরিমাণ কমাতে হয়। তাই কিডনির রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি মাংস খাবেন কম পরিমাণে। লাল মাংসে সোডিয়ামের পরিমাণ কিছুটা বেশি থাকে। তাই গরু বা খাসি না খেয়ে মুরগির মাংস খাওয়া উত্তম। গরু বা খাসির মাংস যদি এক বেলা খেতেই হয়, তাহলে সেটি কম লবণ দিয়ে রান্না ও ঝোলছাড়া খেতে হবে। এর বাইরে ডাল ও বিচিজাতীয় খাবার (সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিন) বা এগুলো দিয়ে তৈরি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
হৃদ্রোগী
হৃদ্রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য গরু ও খাসির মাংস খাওয়া ভালো নয়। চামড়া ছাড়া মুরগি বা হাঁসের মাংস খাওয়া যাবে। তবে গরু বা খাসির মাংসের গায়ে যে সাদা চর্বি লেগে থাকে, সেটা বাদ দিয়ে কম তেলে রান্না করে বা কাবাব করে ঝোল ছাড়া পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যাবে।
উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল
কারও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে বা রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকলেও গরু-খাসির মাংস না খাওয়া উত্তম। তবে উৎসবের দিন খেতে চাইলে খুব অল্প পরিমাণে খাবেন। মাংসের গায়ের সাদা চর্বি বঁটি বা ছুরি দিয়ে আলাদা করে নেবেন। এরপর ওই মাংস রান্না করে ঝোল বাদ দিয়ে খাবেন।
ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মিষ্টি ও মিষ্টিজাতীয় খাবার খেতে নিষেধ করা হয়। সরল কার্বোহাইড্রেটের পরিবর্তে জটিল কার্বোহাইড্রেট খেতে বলা হয়। সেই সঙ্গে তৈলাক্ত ও চর্বিজাতীয় খাবার কম খেতে হবে। কারণ, তেল-চর্বি ক্যালরিবহুল খাবার। বেশির ভাগ ডায়াবেটিস রোগীরই উচ্চ রক্তচাপ, ফ্যাটি লিভার ও কোলেস্টেরল বেশি থাকে। সে ক্ষেত্রে অধিক সচেতন হতে হবে।
ইউরিক অ্যাসিড
যাদের রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি, তাঁদের গরুর মাংস না খাওয়া ভালো। তবে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে পরিমিত পারিমাণে গরুর মাংস খাওয়া যাবে।