কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে যা ভাবছেন বিল গেটস

0
117
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় টেনিস খেলা উপভোগ করছেন বিল গেটস

চ্যাটজিপিটি একমাত্র চ্যাটবট নয়, সম্প্রতি বার্ড নামে গুগল আরেকটি এআই চ্যাটবট চালু করেছে। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে এই চ্যাটবট চালু করা হয়েছে।
বিল গেটস বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটজিপিটি উদ্ভাবনের সঙ্গে জড়িত ওপেনআইয়ের দলটির সঙ্গে তিনি ২০১৬ সাল থেকে বৈঠক করছেন।

ব্লগে মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা আরও বলেন, তিনি ওপেনআই দলকে ২০২২ সালে এসে এমন একটি এআই উদ্ভাবনের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন, যা কিনা অ্যাডভান্স প্লেসমেন্টে (এপি) জীববিজ্ঞান পরীক্ষায় পাস করতে পারে। এপি হচ্ছে এ-লেভেল পরীক্ষার সমমানের পরীক্ষা।

তবে এ ক্ষেত্রে তিনি একটি কঠোর শর্ত জুড়ে দেন। এআইকে সুনির্দিষ্টভাবে জীববিদ্যার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য তৈরি করা যাবে না। বিল বলেন, কয়েক মাস পর ওপেনআই দলটি একটি ফল প্রকাশ করে, যাতে দেখা যায় চ্যাটবট কাছাকাছি স্কোর করেছে। ৫০টি প্রশ্নের মধ্যে মাত্র একটির উত্তর সে দিতে পারেনি।

বিশ্বের অন্যতম এই প্রযুক্তি উদ্যোক্তা বলেন, পরীক্ষার পর তিনি নিজে এআইয়ের কাছে একটি অসুস্থ বাবার অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। কীভাবে এমন শিশুর বাবা সন্তানের জন্য কাজ করে।

বিল গেটস বলেন, এআই এমন দারুণ চিন্তাশীল এক জবাব দিয়েছে, যা কিনা আমরা সেখানে অবস্থানরত অধিকাংশ ব্যক্তির চেয়ে সম্ভবত ভালো উত্তর ছিল।

বিল গেটস আরও বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছিলাম, গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেসের (জিইউআই) পর এবার আমি সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি দেখতে চলেছি।’
১৯৮০–এর দশকে উইন্ডোজ ও ম্যাক ওএস অপারেটিং সিস্টেমের উন্নয়নে জিইউআই বিরাট ভূমিকা রেখেছিল।

বিল গেটস বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, এআই প্রযুক্তিও ভবিষ্যতে এমন যুগান্তকারী কোনো কিছুর উদ্ভাবনে বিরাট ভূমিকা রাখবে।

এআইয়ের ভবিষ্যৎ

বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ার বিল গেটস এআইয়ের ‘ঝুঁকি সীমিত’ করতে এই শিল্পের সঙ্গে কাজ করার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তবে তিনি বলেন, প্রযুক্তি কেবল জীবন বাঁচাতে ব্যবহৃত হতে পারে।

ব্লগে বিল গেটস লিখেন, এআইয়ের উন্নয়ন বিশেষ করে গরিব দেশগুলোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসব দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার এখনো অনেক বেশি।

মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বলেন, এসব দেশের অনেক মানুষ কখনো চিকিৎসার সুযোগ পায় না। এআই এসব দেশে স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজকে আরও সহজ করে দেবে। এ জন্য তিনি কিছু উদাহরণও তুলে ধরেন, যেমন ইনস্যুরেন্স, পেপারওয়ার্ক ও নোট নেওয়ার মতো বারবার করতে হয় এমন অনেক কাজকে সহজ করে দেবে।

ভবিষ্যতে এআই যেন এমন কাজগুলো করতে পারে, সে বিষয়ে এখনই লক্ষ্য স্থির করার আহ্বান জানান বিল গেটস। তিনি বলেন, বাজারব্যবস্থা স্বভাবগতভাবে এআই পণ্য ও সেবা উৎপাদন করবে না।

পর্যাপ্ত তহবিল ও সঠিক নীতিমালার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও মানবকল্যাণে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোই কেবল নিশ্চিত করতে পারে, এআই রাষ্ট্র-সমাজে অসাম্য দূর করার কাজে ব্যবহৃত হবে।

বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ার বলেন, ‘বড় বড় সমস্যা মোকাবিলায় বিশ্বের দরকার বুদ্ধিমান মানুষ। একইভাবে প্রযুক্তির বড় বড় সমস্যা মোকাবিলায় আমাদের বিশ্বের সেরা এআই উদ্ভাবন দরকার।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.