কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার পর ভারতে কীভাবে থাকবেন শেখ হাসিনা

0
105
একটি সামরিক হেলিকপ্টারে শেখ হাসিনা গাড়িতে উঠছেন

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কূটনৈতিক পাসপোর্ট ছাড়া আর অন্য কোনো পাসপোর্ট নেই। ছাত্র–জনতার গণ–আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি ভারতে চলে আসেন। ইতিমধ্যে তিনি ভারতে প্রায় তিন সপ্তাহ কাটিয়ে ফেলেছেন।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে নানা জল্পনাকল্পনা চলছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তাঁর কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে। এই অবস্থায় তাঁর ভারতে অবস্থানের সময় নিয়ে জটিলতা তৈরি হতে পারে।

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি শেখ হাসিনা, তাঁর উপদেষ্টামণ্ডলী, সাবেক মন্ত্রিসভার সদস্য এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সব সদস্যের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে। একই সঙ্গে তাঁদের স্ত্রী ও সন্তানদের কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করা হয়েছে, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

শেখ হাসিনা (৭৬) ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশত্যাগ করার পরপরই রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবউদ্দিন সংসদ ভেঙে দেন। এসব ব্যক্তির পাশাপাশি কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের মধ্যে যাঁদের চাকরি বা চুক্তি শেষ হয়ে গেছে বা চুক্তি বাতিল করা হয়েছে, তাঁদেরও কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। সাধারণ পাসপোর্টের জন্য আবেদনের পর কমপক্ষে দুটি তদন্ত সংস্থার ছাড়পত্র সাপেক্ষে তাঁদের নামে পাসপোর্ট ইস্যু করা হবে।

শেখ হাসিনা কি প্রত্যর্পণের ঝুঁকিতে আছেন

ভারতের সরকারি সূত্র বলছে, বাংলাদেশ সরকার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করার পর শেখ হাসিনার এখন আর কোনো পাসপোর্ট নেই। ভারতের ভিসা নীতি অনুযায়ী, বাংলাদেশি কূটনীতিক বা কর্মকর্তাদের সরকারি পাসপোর্ট থাকলে তাঁরা ভিসা ছাড়াই ভারতে আসতে পারেন। তাঁরা চাইলে টানা ৪৫ দিন ভারতে থাকতে পারেন। আজ শনিবার হিসাব করলে ইতিমধ্যে শেখ হাসিনা ২০ দিন ধরে ভারতে অবস্থান করছেন। বৈধভাবে তিনি আরও ২৫ দিন ভারতে থাকতে পারবেন।

শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল এবং এই পাসপোর্টের কারণে তাঁর পাওয়া ভিসা–সুবিধা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে এবং এটি তাঁকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের মতো ঝুঁকিতেও ফেলতে পারে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে ৫১টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে ৪২টি হত্যা মামলা।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৩ সালে সম্পাদিত এবং ২০১৬ সালে সংশোধিত প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনা আইনি কাঠামোর মধ্যে চলে আসতে পারেন। অবশ্য মামলায় যদি রাজনৈতিক কোনো ধরন বা উদ্দেশ্য থেকে থাকে, তাহলে প্রত্যর্পণের অনুরোধ ভারত সরকার নাকচ করতে পারে। তবে খুনের মতো অপরাধের মামলাকে স্পষ্টভাবে রাজনৈতিক বলে বিবেচনা থেকে বাইরে রাখা হয়েছে।

আশ্রয়ে থাকা ব্যক্তির প্রত্যর্পণের অনুরোধ আরেকটি কারণে প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে করা মামলা ‘ন্যায়বিচারের স্বার্থে সৎ উদ্দেশ্যে’ করা না হলে সরকার প্রত্যর্পণের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.