কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে তাড়াহুড়া করে কারখানা থেকে বের হওয়ার সময় পদপিষ্ট হয়ে শতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন। আজ শনিবার সকালে উপজেলার ছুপুয়া এলাকায় আমির শার্ট নামের একটি পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আজ সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন ঢাকা আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রবিউল হক। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, রামগঞ্জ উপজেলা থেকে আট কিলোমিটার পূর্ব ও উত্তর-পূর্বে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল
আহত রোগী, প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ভূমিকম্পের সময় আমির শার্ট নামক ওই পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা আতঙ্কিত হয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে ও ওপর থেকে লাফ দিয়ে কমপক্ষে শতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন। এ সময় কারখানার গেট বন্ধ থাকার কারণে কেউ বেরিয়ে আসতে পারেননি বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
খবর পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া অনেকে বিভিন্ন ক্লিনিক ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, ভূমিকম্পে আতঙ্কে ছুটাছুটি করতে গিয়ে আহত হওয়া ৮০ জন পোশাকশ্রমিককে তাঁরা চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। এর মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাহেদা, আয়শা ও অজ্ঞাতনামা এক নারীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আমির শার্ট গার্মেন্টেসের সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট (এভিপি) কাজী মো. ইউসুফ ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসভিপি) শাহজাহান সাজু বলেন, তাঁদের কারখানায় তিনটি ভবন রয়েছে। তার মধ্যে একটিতে প্রশাসনিক ও অপর দুটিতে উৎপাদনের কাজ চলে। উৎপাদনের দুটি ভবনের চারটি তলায় ১ হাজার ৭০০ শ্রমিক কাজ করেন। ভবনে উঠানামার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু ভূমিকম্পের আতঙ্কে ছুটাছুটি করতে গিয়ে শ্রমিকেরা আহত হয়েছেন। তবে গেট বন্ধ থাকার বিষয়টি তাঁরা অস্বীকার করেন।
ফায়ার সার্ভিসের চৌদ্দগ্রাম স্টেশন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। তবে কতজন আহত হয়েছেন, তার সঠিক হিসাব এখনো করা হয়নি।