কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে ধনীর দুলাল, দু’বছরে নিহত ৩৪

0
111
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

রাজধানীতে কিশোর গ্যাং-বিরোধী অভিযান অব্যাহত রেখেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত দু’দিনে তেজগাঁও, গুলশান, উত্তরা ও মতিঝিল এলাকা থেকে ৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবি জানিয়েছে, কিশোর গ্যাংয়ে বর্তমানে ধনীর সন্তানরা জড়িয়ে যাচ্ছে। তারা মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, মারামারিসহ হত্যার মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছে। কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলায় গত দুই বছরে ৩৪ কিশোর নিহত হয়েছে। কিশোর গ্যাং কালচার দমনে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের এগিয়ে আসা জরুরি।

বুধবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ের নিজকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, কিশোর গ্যাং-বিরোধী ধারাবাহিক অভিযান চলবে। তাদের পক্ষে কেউ সুপারিশ নিয়ে এলেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিবির প্রধান বলেন, রাজধানীর উত্তরা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের ইয়ংস্টার, বিগবস, ডিস্কো বয়েজ, বন্ধু মহল, শীল বিষু গ্যাং, পারভেজ গ্রুপ, রুস্তম গ্রুপ, নাইনএমএম গ্রুপ, নাইন স্টার গ্রুপ সক্রিয়। তাছাড়া রামপুরা এলাকায় রয়েছে উজ্জ্বল গ্রুপ। এই গ্রুপটির সদস্যদের অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছে।

হারুন অর রশীদ বলেন, ধারণা ছিল ভাসমান ও নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তানরা কিশোর গ্যাং চক্রে জড়িত হচ্ছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে উচ্চ মধ্যবিত্ত, আলালের ঘরে দুলালরাও এ চক্রে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের পোশাক, চুলের কাটিং ও চলাফেরা সবই ভীতিকর। এসব ধনীর সন্তানরা প্রথমে মাদক সেবন, পরে মাদক বিক্রিতেও জড়িয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া তারা এলাকায় স্থানীয় রাজনৈতিক বড় ভাই ও কাউন্সিলরদের নিয়ন্ত্রণে থেকে হত্যার মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে। বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলরদের ছত্রছায়ার অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সবাই কিশোর গ্যাং চক্রে জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছে।

অতিরিক্ত কমিশনার ডিবিপ্রধান বলেন, কিশোররা পড়ালেখা বাদ দিয়ে মাদক সেবনের মতো উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করছে। গোয়েন্দা পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। অভিভাবকদের উচিত তার সন্তান কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে তার খোঁজ রাখা। পাশাপাশি নিজ সন্তানদের সময় দেওয়া দরকার। গ্রেপ্তার করে কিশোর গ্যাং দমন করা যাবে না। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সন্তানদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে।

কিশোর গ্যাংয়ের আশ্রয় দেওয়া বড় ভাইদের পরিচয় প্রকাশ করা হবে কিনা জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে অনেকের নাম-পরিচয় পেয়েছি। তদন্ত করে দেখব কারা কিশোর গ্যাং সদস্যদের আশ্রয় দিচ্ছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে তারা একত্র হয়। পরে গ্রুপের সদস্যরা রাজনৈতিক নেতাদের পরিচয় দিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি করে। কেউ প্রতিবাদ করারও সাহস পায় না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.