কাশির সিরাপ খেয়ে ১১ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ভারতের মধ্য প্রদেশে। প্রভীন সোনি নামে রাজ্যটির পারাসিয়া এলাকার এক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ শিশুদেরকে এই ‘কোলড্রিফ সিরাপ’ প্রেসক্রাইব করেছিলেন।
রোববার (৫ অক্টোবর) এনডিটিভি ও ইন্ডিয়া টুডের পৃথক দুই প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
অভিযোগ অনুযায়ী, প্রভীন সোনি একজন সরকারি চিকিৎসক হলেও ব্যক্তিগত ক্লিনিকে রোগীদেরকে এই কাশির ওষুধ দিয়েছিলেন তিনি। এরই মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এছাড়া, শিশুমৃত্যুর ঘটনায় তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরম জেলার শ্রীসান ফার্মাসিউটিক্যালস নামের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করেছে মধ্য প্রদেশ সরকার। এরই মধ্যে রাজ্যে কোলড্রিফ বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি ‘নেক্সট্রো-ডিএস’ নামে আরেকটি কাশির সিরাপ বিক্রিও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সরকারি ল্যাবের পরীক্ষায় দেখা গেছে, কোলড্রিফ সিরাপে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ ডাই-ইথিলিন গ্লাইকল রয়েছে, যা অত্যন্ত বিষাক্ত। চেন্নাইয়ের ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার পর এই সিরাপকে ‘মানসম্মত নয়’ বলে ঘোষণা করেছে তামিলনাড়ুর ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ, গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে শিশুদের হালকা সর্দি-জ্বর হলে তাদের এই ওষুধ দেওয়া হয়। প্রথমে তারা কিছুটা সুস্থ হলেও কয়েক দিনের মধ্যে প্রস্রাব কমে যায়, কিডনির জটিলতা দেখা দেয় এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। কিডনি বায়োপসিতে পরে ডাই-ইথিলিন গ্লাইকলের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব বলেছেন, শিশুদের এমন মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। কোলড্রিফ সিরাপের বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য ওষুধের বিক্রিও বন্ধ করা হচ্ছে। দোষীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি আরও জানান, যেহেতু কারখানাটি তামিলনাড়ুতে, তাই রাজ্য সরকারকে পরীক্ষার জন্য বলা হয়েছিল। রিপোর্ট পাওয়ার পর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়ার পর শুধু মধ্য প্রদেশ নয়, রাজস্থান, তামিলনাড়ু এবং কেরালাতেও কোলড্রিফ সিরাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।