কাশিমপুর কারাগারে বন্দিকে নির্যাতনের অভিযোগ

0
165
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি মানি লন্ডারিং মামলার আসামি ই-অরেঞ্জের চিফ অপারেটিং অফিসার মো. আমান উল্লাহ চৌধুরীর ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত ৭ মার্চ তাঁকে সাধারণ ওয়ার্ড থেকে ফাঁসির সেলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে বলে গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন তাঁর স্ত্রী নুসরাত জাহান।

অভিযোগে বলা হয়েছে, নির্যাতন থেকে বাঁচানোর জন্য প্রথম দফায় কারাগার-১ এর জেল সুপার ও জেলারকে আমান উল্লাহর পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। পরে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করেন তাঁরা। সেই টাকা দিতে না পারায় নির্যাতন চালানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, তাঁর কাছে কোনো টাকা চাওয়া হয়নি বা তাঁকে নির্যাতন করা হয়নি। কারাগারে থাকা সরকারি মোবাইল ফোন থেকে এক সাবেক কর্মকর্তাকে হুমকি দেওয়ার দায়ে তাঁকে শাস্তি হিসেবে ২ মাসের জন্য ওই সেলে রাখা হয়েছে।

নির্যাতন করে আমান উল্লাহকে হত্যা করা হতে পারে– এমন আশঙ্কাও করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে। ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ১০/এ রোডের ৩৯ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে ই-অরেঞ্জের গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২৬টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি মামলায় জামিন হয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) করা ২৩২ কোটি টাকা লন্ডারিংয়ের মামলায় শুধু জামিন হয়নি।

নুসরাত জাহান জানান, আমানকে ২০২১ সালের ১৮ আগস্ট গ্রেপ্তারের পর কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ২০২২ সালের ১৩ মে তাঁকে কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়।

নুসরাতের অভিযোগ, জেল সুপার মো. শাহজাহান ও জেলার তরিকুল ইসলাম হাজতের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের অজুহাতে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। এক পর্যায়ে নির্যাতনের ভয়ে ওই কোম্পানির এক কর্মকর্তা তাঁদের কাছে ৫ লাখ টাকা দেন। টাকা দেওয়ার প্রমাণ আছে বলেও জানান নুসরাত। পরবর্তী সময়ে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এই টাকা দিতে না পারায় চালানো হয় নির্যাতন।

এ ব্যাপারে মো. শাহজাহান বলেন, এ অভিযোগ মিথ্যা। সাবেক এক কর্মকর্তাকে আমান চৌধুরী কারাগারের ভেতর থেকে সরকারি মোবাইল ফোন দিয়ে হুমকি দিয়েছেন। আদালতের একজন বিচারকের মাধ্যমে এ খবর জানতে পেরে গত ৭ মার্চ তাঁকে সেলে নেওয়া হয়। কারাগারের ভেতরে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আমান বিষয়টি স্বীকার করেন। শাস্তি হিসেবে ২ মাসের জন্য তাঁকে ওই সেলে রাখা হয়েছে।

অভিযুক্ত জেলার তরিকুল ইসলাম বলেন, জেলখানা উন্নয়নের জন্য গণপূর্ত বিভাগ বরাদ্দ দিয়েছে। তাঁর কাছে কেন টাকা চাইব? শাস্তি হিসেবে তাঁকে সেলে রাখার কারণে হয়তো এমন অভিযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হারুন অর রশিদ ফরিদ বলেন, একজন সাধারণ বন্দিকে কোনো অবস্থাতেই ফাঁসির সেলে রাখা যাবে না। এটি মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, অভিযোগপত্র তিনি পেয়েছেন। এ নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। বিষয়টি সত্য প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.