কাঁটা শ্যাওলা চিংড়ির ঘেরে বাগদা চিংড়ির উৎপাদন

গবেষণা

0
147

কাঁটা শ্যাওলা এক ধরনের জলজ উদ্ভিদ। এটি বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, শ্রীলঙ্কা, চীন, থাইল্যান্ড ও আফ্রিকার কিছু দেশে পাওয়া যায়। কাঁটা শ্যাওলা অনেক দেশে ‘গাপ্পি গ্রাস’ হিসেবে পরিচিত। এটি নাজাস গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত একটি প্রজাতি। তবে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে চিংড়ি চাষিদের কাছে জলজ উদ্ভিদটি ‘লক্ষ্মী শ্যাওলা’ নামেও পরিচিত। চাষিদের ধারণা, কাঁটা শ্যাওলা চিংড়ির ঘেরে থাকলে বাগদা চিংড়ির উৎপাদন ভালো হয়। এমন ধারণার প্রমাণ মিলেছে বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে। সেই সঙ্গে ঘেরে কী পরিমাণ কাঁটা শ্যাওলা থাকলে চিংড়ির উৎপাদন ভালো হবে, তা নিয়েও করা হয়েছে গবেষণা।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করেছে, কাঁটা শ্যাওলা চিংড়ির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে যেমন বাড়িয়ে তোলে, তেমনি ক্ষতিকর জীবাণু থেকে সুরক্ষাও দেয়। গবেষক দলে ছিলেন বিএফআরআইর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. তানভিরুল হক, রাকিবুল ইসলাম, সোয়েবুল ইসলাম ও তৌহিদুল ইসলাম।

অধিকাংশ ঘেরে সনাতন এবং উন্নত সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করা হচ্ছে। তাই এসব পদ্ধতির প্রচলিত ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মানোন্নয়ন করা গেলে বিদ্যমান সমস্যাগুলো কমিয়ে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে– এমন ধারণা থেকে গবেষণা শুরু করে বিএফআরআই।

গবেষকরা জানান, কাঁটা শ্যাওলায় ফ্লাভোনয়েড, ফেনল, পলিফেনল, অলিক অ্যাসিড, পালমিটিক অ্যাসিড, লরিক অ্যাসিড ইত্যাদি বায়োঅ্যাকটিভ উপাদান আছে। ফ্লাভোনয়েডের মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টি-ভাইরাল গুণাবলি থাকায় ঘেরে চিংড়ির রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। একইভাবে ফেনল, অলিক অ্যাসিড, পালমিটিক অ্যাসিড এবং লরিক অ্যাসিড শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃত এবং প্রতিটি উপাদানেই অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-এলার্জিক ও অ্যান্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ঘেরের শতকরা ২০ শতাংশ এলাকায় কাঁটা শ্যাওলা থাকলে ভৌত-রাসায়নিক গুণাগুণ ভালো থাকে এবং চিংড়ির ভালো ফলন পাওয়া যায়। এর বেশি পরিমাণে থাকলে পানির পিএইচ বেড়ে যায় এবং তখন শ্যাওলা ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে পড়ে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.