চুলের ৪ ধরনের সমস্যার সমাধান দেবে এই ৫ ধরনের তেল

0
166
নিয়মিত তেল লাগালে ভালো থাকবে চুল

চুলের যত্নে তেলের গুরুত্ব সবারই জানা। নানা তেলের নানা গুণ। বাজারে পাওয়াও যাচ্ছে অনেক রকমের তেল। তবে একটু কষ্ট করে আয়ুর্বেদিক উপাদান দিয়ে বাড়িতে তেল বানিয়ে নিলে ফল পাবেন ভালো। ব্যক্তিভেদে চুলের ধরন আলাদা, তাই চুলের প্রয়োজনও ভিন্ন। কারও চুল রুক্ষ, কারও বা রুগ্‌ণ। কেউ আবার চুলে রং করান। তাঁদের জন্যও প্রয়োজন আলাদা তেল। তবে তেল বানানোর আগে কিছু বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন।

নতুন চুল গজানোকে ত্বরান্বিত করবে বিশেষ তেল

বিশেষ ধরনের এসব তেল বানাতে হলে নারকেল তেলের সঙ্গে বিভিন্ন উপকরণ যোগ করে জ্বাল দিতে হয়। জ্বাল দেওয়ার পুরোটা সময়ই কিন্তু ক্রমাগতভাবে নেড়েচেড়ে দেওয়া আবশ্যক। চুলা থেকে নামানোর পরপরই তেল ব্যবহার করলে ফল পাওয়া যায় না। তেল নামানোর পর ঠান্ডা হয়ে গেলে কাচের পাত্রে রেখে দিতে হবে। সাত দিন তেল ঢেকে রাখতে হবে বা পাত্রের মুখ আটকে দিতে হবে। সাত দিন পর ছেঁকে নিয়ে তবেই ব্যবহার করা যাবে বাড়িতে বানানো এসব তেল। ছেঁকে নেওয়ার পর তেল সংরক্ষণ করতে হবে মুখবন্ধ কাচের পাত্রে। তবে ছেঁকে নেওয়ার আগে বা পরে কোনো সময়ই তেল ফ্রিজে রাখার প্রয়োজন নেই। তেল বানানোর বিস্তারিত প্রক্রিয়া জানানোর সময় এভাবেই প্রয়োজনীয় খুঁটিনাটি দিকগুলো জানিয়ে রাখলেন হারমনি স্পার আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা।

ঘন চুলের জন্য

চুল পড়ে, চুল গজায়। এ নতুন চুল গজানোকে ত্বরান্বিত করতে বিশেষ তেল তৈরি করে নিতে পারেন। এ জন্য প্রয়োজন নারকেল তেল ১ লিটার, তিলের তেল ২ টেবিল চামচ, আমলকী ৬টি, কারিপাতা ১২টি এবং নিমপাতা ১২টি। সব উপকরণ একসঙ্গে চুলায় মৃদু আঁচে জ্বাল দিন। পাতাগুলো আর্দ্রতা হারিয়ে মচমচে হয়ে ওঠা অবধি চুলায় রাখুন।

বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারেন চুল অনুযায়ী উপযোগী তেল
বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারেন চুল অনুযায়ী উপযোগী তেলছবি: নকশা

চুল পাকছে? চুল পড়ছে?

বয়সের আগে চুল পাকতে শুরু করলে এই তেল দুটির যেকোনো একটি ব্যবহার করতে পারেন। নতুন চুলের বৃদ্ধিকেও ত্বরান্বিত করবে এই দুই তেল-

• প্রথম তেলটির জন্য প্রয়োজন জবা ফুলবাটা আধা কাপ, মেহেদিপাতাবাটা ১ টেবিল চামচ, মেথিবাটা ১ টেবিল চামচ, আমলকীবাটা ১ টেবিল চামচ, হরীতকীবাটা ১ টেবিল চামচ আর নারকেল তেল ১ লিটার। অল্প তেল নিয়ে বাদবাকি সব উপকরণ একসঙ্গে জ্বাল দিন। চুলার আঁচ খুবই মৃদু রাখুন। নাড়তে হবে খুব ভালোভাবে। উপকরণগুলো লেগে আসতে থাকলে বাকি তেল যোগ করুন। বাটা উপকরণগুলো গুঁড়া গুঁড়া হয়ে এলে নামিয়ে নিন।

• একই ধরনের উপকার মিলবে আরেকটি তেলে। এর জন্য লাগবে ব্রাহ্মী লতাবাটা ২ টেবিল চামচ, কালিজিরাবাটা ২ টেবিল চামচ, নিমপাতাবাটা ২ টেবিল চামচ, আমলকীবাটা ২ টেবিল চামচ, জবা ফুলবাটা ২ টেবিল চামচ, শিকাকাইবাটা ২ টেবিল চামচ। এখানেও প্রয়োজন ১ লিটার নারকেল তেল। একই নিয়মে প্রথমে অল্প তেলে সব উপকরণ দিয়ে খুব মৃদু আঁচে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে নিন। লেগে আসতে থাকলে বাকি তেল ঢেলে নিন। বাটা উপকরণগুলো গুঁড়া গুঁড়া হয়ে এলে নামিয়ে নিতে হবে। এই তেলের আরও উপকারিতা রয়েছে। টনিকের মতো কাজে দেয় এই তেল। রুগ্‌ণ চুলকে করে তোলে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।

নিষ্প্রাণ চুল এবং আগা ফাটার সমাধান

চুলকে মসৃণ, কোমল, রেশমি ও উজ্জ্বল করে তুলতে এবং আগা ফেটে যাওয়ার সমস্যা সমাধানে কার্যকর এই তেল বানিয়ে নিতে পারেন। এটি নতুন চুলের বৃদ্ধিকেও ত্বরান্বিত করবে। এর জন্য নিন অ্যালোভেরার নির্যাস ১ কাপ, মেথিবাটা ২ টেবিল চামচ, আমলকীবাটা ২ টেবিল চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ আর নারকেল তেল ১ লিটার। প্রথমে অল্প তেলে সব উপকরণ জ্বাল দিন মৃদু আঁচে। লেগে এলে বাকি তেল দিন। বাটা উপকরণগুলো গুঁড়া গুঁড়া হয়ে এলে নামিয়ে ফেলুন। নামানোর পর ঠান্ডা হতে দিন। কুসুম গরম থাকা অবস্থায় ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন।

চুলে যাদের রং করানো

রং করা চুলের জন্য তেল বানাতে প্রয়োজন হবে অ্যালোভেরার নির্যাস ১ কাপ, আমলকীবাটা ২ টেবিল চামচ, মেথিবাটা ২ টেবিল চামচ আর নারকেল তেল ১ লিটার। এ ক্ষেত্রেও একই নিয়মে অল্প তেলে সব উপকরণ জ্বাল দিতে হবে খুব মৃদু আঁচে। লেগে আসতে থাকলে বাকি তেল দিয়ে দিতে হবে। বাটা উপকরণগুলো গুঁড়া গুঁড়া হয়ে এলে নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর পর কুসুম গরম থাকতে থাকতে ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.