কণ্ঠস্বর কেন বদলায়

0
145
বয়ঃসন্ধিকালে কণ্ঠস্বরের হঠাৎ পরিবর্তন কয়েক মাস পর ঠিক হয়ে যায়।

বাঁধনের বয়স সবে ১৩ পেরোচ্ছে। নাকের নিচে গোঁফের রেখা উঁকি দিচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের বাইরে ছোট্ট বন্ধুজগৎ হয়েছে তার। তাদের সঙ্গেই মাঠে বিকেলটা কাটিয়ে সন্ধ্যায় বাড়িতে ফেরে। এরই মধ্যে হঠাৎ একদিন পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারেন, তার কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে গেছে। কিছুটা ভাঙা ভাঙা, কর্কশ কণ্ঠস্বর।

নিজের এই কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন নিজে বুঝতে পারে না বাঁধন। বয়ঃসন্ধি এর একটা কারণ—কমবেশি সবাই এটা জানে। কিন্তু বয়ঃসন্ধি ছাড়াও নানা বয়সে, নানা পরিস্থিতিতে বদলাতে পারে কণ্ঠস্বর। খুব ভরাট গলার স্বর হয়ে যেতে পারে মিহি। আবার খুব মিষ্টি গলার স্বরও ভেঙে যেতে পারে।

যেমন বাঁধন নিজেই বুঝতে পারে না বড়দেরও তো গলার স্বর এক নয়। মুখ ফুটে বলতে পারে না, ‘মায়ের কণ্ঠস্বর কী শান্ত আর মিষ্টি। কিন্তু বাবা তোমার কণ্ঠস্বর এত বাজখাই কেন?’

বাঁধন এ প্রশ্ন ছুড়ে দিলে হয়তো তার মা-বাবাও সঠিক উত্তর দিতে পারবেন না। তবে বাঁধন ও তার পরিবারের সদস্যেদের মতো এসব প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্কাস্টার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও ক্লিনিক্যাল অ্যানাটমি লার্নিং সেন্টারের পরিচালক অ্যাডাম টেলর। তিনি বলেছেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার বিশ্লেষণ, মন্তব্য প্রতিবেদন ও গবেষণাধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশের অলাভজনক গণমাধ্যম নেটওয়ার্ক দ্য কনভারসেশনে গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে অ্যাডাম টেলর এ কথা বলেছেন। বিবিসি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

বয়ঃসন্ধিকালের প্রভাব
অ্যাডাম টেলর বলেছেন, কণ্ঠনালি (ভোকাল কর্ড) মূলত শব্দ তৈরি করে। এগুলো মানুষের স্বরযন্ত্রে (ল্যারিংক্স) থাকে। কণ্ঠনালি শ্বাসযন্ত্রের একটি অংশ, যা গলা থেকে ফুসফুসে বাতাস যেতে সহায়তা করে। বাতাস যখন ফুসফুস থেকে ও স্বরযন্ত্রের মধ্য দিয়ে যায়, তখন এটি কণ্ঠনালিকে কম্পিত করে। আর এতেই শব্দ সৃষ্টি হয়।

কণ্ঠনালি তিনটি প্রধান অংশ নিয়ে গঠিত—ভোকাল পেশি, ভোকাল লিগামেন্ট ও একটি শ্লেষ্মা ঝিল্লি (গ্রন্থি সমন্বিত)। এ ঝিল্লি ওপরের অংশ আর্দ্র রাখে ও যেকোনো ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া স্বরযন্ত্রের মধ্যে প্রায় ১৭টি অন্যান্য পেশি আছে। এসব কণ্ঠনালির অবস্থান ও উত্তেজনা পরিবর্তন করতে পারে, উত্পাদিত শব্দ পরিবর্তন করতে পারে।

বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের স্বরযন্ত্র খুব দ্রুত বাড়তে থাকে। সে কারণে তাদের গলার স্বর এ সময় ভেঙে যায়। কয়েক মাস পর তা আবার ঠিক হয়ে যায়। আর তাদের অ্যাডামস অ্যাপল থাকায় স্বরতন্ত্র সাধারণত লম্বা হয়। তাই তাদের গলার স্বরও নিচু আর ভরাট থাকে।

প্রাক্‌-বয়ঃসন্ধিকালে নারী ও পুরুষের মধ্যে কণ্ঠনালি যে শব্দ উৎপন্ন করে, তাতে খুব সামান্য পার্থক্য থাকে। তবে বয়ঃসন্ধির সময় হরমোনের প্রভাব শুরু হতে থাকে। এ সময় স্বরযন্ত্রের গঠনে পরিবর্তন আসতে থাকে। বিশেষ করে পুরুষের কণ্ঠনালির দৈর্ঘ্য ও ‘অ্যাডামস অ্যাপল’কে বিশিষ্ট করে তোলে। বয়ঃসন্ধির পর পুরুষের মধ্যে এই দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬ মিলিমিটার ও নারীদের মধ্যে ১০ মিলিমিটার পর্যন্ত বেড়ে যায়। পুরুষের গলার সামনে উঁচু ঢেউখেলানো অংশটির নাম অ্যাডামস অ্যাপল। এ অংশ স্থিতিস্থাপক পদার্থ তরুণাস্থি (কার্টিলেজ) দিয়ে গঠিত। বয়ঃসন্ধির পর ছেলেরা যতই বড় হতে থাকে, ততই তার স্বরযন্ত্র বড় হয় এবং এর চারপাশে তরুণাস্থি জমে শক্ত হয়ে যায়। একসময় তা কিছুটা ফুলে গলার বাইরে বেরিয়ে আসে। এই স্ফীত অংশকেই বলে অ্যাডামস অ্যাপল।

বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের স্বরযন্ত্র খুব দ্রুত বাড়তে থাকে। সে কারণে তাদের গলার স্বর এ সময় ভেঙে যায়। কয়েক মাস পর তা আবার ঠিক হয়ে যায়। আর তাদের অ্যাডামস অ্যাপল থাকায় স্বরতন্ত্র সাধারণত লম্বা হয়। তাই তাদের গলার স্বরও নিচু আর ভরাট থাকে। মূলত এ কারণেই বাঁধন বা বাঁধনের বয়সী ছেলে-মেয়েদের কণ্ঠস্বরের হঠাৎ পরিবর্তন হয়ে যায়।

এই পরিবর্তন কি স্থায়ী

বয়ঃসন্ধিকালে কণ্ঠস্বরের হঠাৎ পরিবর্তন কয়েক মাস পর ঠিক হয়ে যায়। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এটি সমস্যারও সৃষ্টি করে। যেমনটি দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার এস এম রকিব ইমরানের ক্ষেত্রে হয়েছিল। তাঁর বয়স এখন ২৭ বছর। বয়ঃসন্ধিকালের শুরুতে কণ্ঠস্বর বদলে যেতে শুরু করে তাঁর। ধীরে ধীরে রকিবের স্বর মিহি, অনেকটা মেয়েদের মতো হয়ে যায়। বয়স বাড়লেও এ সমস্যা যায়নি। ১৩ বছর ধরে বয়ে বেড়ানো এ সমস্যা থেকে অবশেষে গত বছর মুক্তি পেয়েছেন রকিব। ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড স্পিচ থেরাপি নেওয়ার ফলে স্বাভাবিক কণ্ঠস্বর ফিরে পেয়েছেন তিনি। এ নিয়ে গত বছরের ২৪ জুলাই ‘বয়ঃসন্ধিকালে কণ্ঠস্বর বদল, থেরাপিতে মুক্তি’ প্রকাশিত হয়েছিল।

গবেষণায় দেখা গেছে, জন্মনিরোধক পিল গ্রহণ করা নারীদের কণ্ঠের মানে বৈচিত্র্য অনেক কম। কারণ, পিল ডিম্বস্ফুটন বন্ধ করে দেয়। অন্যদিকে মাসিকের আগে হরমোনের পরিবর্তন কণ্ঠনালিকে বাধাগ্রস্ত করে, তাদের শক্ত করে তোলে। আর নারীদের কণ্ঠনালি পাতলা হওয়ায় তা অতিরিক্ত ব্যবহারে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

কণ্ঠস্বরের এমন পরিবর্তন রকিবের মধ্যে ভীষণ মানসিক চাপ তৈরি করেছিল। একপর্যায়ে রকিব শব্দ করে বই পড়া ছেড়ে দেন। নিচু স্বরে কথা বলতে শুরু করেন। কারও সঙ্গে মিশতে চাইতেন না। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হতো ভাইবার (মৌখিক পরীক্ষা) সময়। মেয়েদের মতো কণ্ঠস্বর হওয়ায় হরহামেশা ঠাট্টা-মশকরার শিকার হতে হয়েছে রকিবকে। পরে খোঁজ নিয়ে ঢাকায় এসে বাংলাদেশ থেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন ফাউন্ডেশনে থেরাপি চিকিৎসা নিয়ে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পান।

সে সময় বাংলাদেশ থেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন ফাউন্ডেশনের সভাপতি ফিদা আল সামস বলেছেন, রকিব পিউবারফোনিয়ায় ভুগছিলেন। বয়ঃসন্ধিকালে হরমোনজনিত ত্রুটির কারণে এটি হয়। কণ্ঠস্বর আর স্বাভাবিক না হয়ে মেয়েদের মতো হয়ে যায়। কিছু মানুষের বয়স বাড়লেও কণ্ঠস্বর স্বাভাবিক হয় না। মিহি-ভারী কিংবা শিশুদের মতো রয়ে যায়। এটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য, প্রতিবন্ধিতা নয়। থেরাপি নিলে এ সমস্যার সমাধান হয়।

বয়ঃসন্ধির পরের স্বর

অ্যাডাম টেলর বলেছেন, বয়ঃসন্ধির পর নারীদের কণ্ঠনালি মূলত ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পাতলা হয়ে যায়। এই ছোট ও পাতলা ভোকাল কর্ডের কারণেই পুরুষের তুলনায় নারীদের কণ্ঠস্বর তীক্ষ্ণ থাকে। তবে বয়ঃসন্ধির পরও হরমোন কণ্ঠস্বরকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একজন মহিলার কণ্ঠস্বর তার মাসিকের পর্যায়ের ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে। কারণ, এ পর্যায়ে গ্রন্থিগুলো অনেক বেশি শ্লেষ্মা তৈরি করে, যা কণ্ঠনালিকে কাজ করার জন্য সর্বোত্তম কার্যকর ক্ষমতা দেয়।

বয়ঃসন্ধির পর নারীদের কণ্ঠনালি মূলত ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পাতলা হয়ে যায়। এই ছোট ও পাতলা ভোকাল কর্ডের কারণেই পুরুষের তুলনায় নারীদের কণ্ঠস্বর তীক্ষ্ণ থাকে। তবে বয়ঃসন্ধির পরও হরমোন কণ্ঠস্বরকে প্রভাবিত করতে পারে।
অ্যাডাম টেলর, ল্যাঙ্কাস্টার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক

টেলর বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, জন্মনিরোধক পিল গ্রহণ করা নারীদের কণ্ঠের মানে বৈচিত্র্য অনেক কম। কারণ, পিল ডিম্বস্ফুটন বন্ধ করে দেয়। অন্যদিকে মাসিকের আগে হরমোনের পরিবর্তন কণ্ঠনালিকে বাধাগ্রস্ত করে, তাদের শক্ত করে তোলে। আর নারীদের কণ্ঠনালি পাতলা হওয়ায় তা অতিরিক্ত ব্যবহারে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

বয়সের প্রভাব

মানবশরীরের প্রতিটি অংশের মতোই কণ্ঠনালিরও বয়স বেড়ে যায়। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যে পরিবর্তন হয়, তা সবার ক্ষেত্রে লক্ষণীয় না-ও হতে পারে। মানুষের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বরযন্ত্রটি তার খনিজ উপাদান বাড়াতে শুরু করে, এটিকে তরুণাস্থির চেয়ে শক্ত ও হাড়ের মতো করে তোলে। এই পরিবর্তন ৩০ বছর বয়সের প্রথম দিকে ঘটতে শুরু করে। বিশেষ করে পুরুষদের ক্ষেত্রে এ বয়সে এটি বেশি হয়। এ সময় কণ্ঠনালি কম নমনীয় হয়ে যায়।

যেসব পেশি কণ্ঠনালিকে নড়াচড়া করতে দেয়, শরীরের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো নষ্ট হতে শুরু করে। কণ্ঠনালিকে সহায়তা করা লিগামেন্ট ও টিস্যুগুলোও স্থিতিস্থাপকতা হারায়, কম নমনীয় হয়ে যায়। এ ছাড়া এ সময় ফুসফুসের পেশির কার্যকারিতাও হ্রাস পায়, শব্দ তৈরির জন্য ফুসফুস থেকে বের হওয়া বাতাসের শক্তি হ্রাস পায়। স্বরযন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা হ্রাসের পাশাপাশি প্রতিরক্ষামূলক শ্লেষ্মা উৎপাদনকারী গ্রন্থিগুলোর সংখ্যাও হ্রাস পায়।

গ্লাসটোনবেরি উৎসবে দর্শক-শ্রোতাদের উদ্দেশে নিজের সেরাটাই দিয়েছেন ৭৬ বছর বয়সী ব্রিটিশ গায়ক স্যার এলটন জন। কিন্তু বয়স বাড়ার কারণে তাঁর কণ্ঠ আর আগের মতো নেই।
গ্লাসটোনবেরি উৎসবে দর্শক-শ্রোতাদের উদ্দেশে নিজের সেরাটাই দিয়েছেন ৭৬ বছর বয়সী ব্রিটিশ গায়ক স্যার এলটন জন। কিন্তু বয়স বাড়ার কারণে তাঁর কণ্ঠ আর আগের মতো নেই।

জনপ্রিয় ব্রিটিশ গায়ক স্যার এলটন জন চলতি বছর গ্লাসটোনবেরি উৎসবে রেকর্ড করেছেন। এ উৎসবে ইতিহাসে এবার সবচেয়ে বেশি দর্শকের উপস্থিতি ছিল। এ ছাড়া ৭০ লাখের বেশি মানুষ এলটন জনের এই শো দেখার জন্য বিবিসিতে লাইভ টিউন করেছেন।

গ্লাসটোনবেরি উৎসবে দর্শক-শ্রোতাদের উদ্দেশে নিজের সেরাটাই দিয়েছেন ৭৬ বছরে বয়সী এই সংগীত তারকা। কিন্তু যাঁরা কয়েক দশক ধরে তাঁর গান শুনছেন, তাঁরা লক্ষ করেছেন এলটন জনের কণ্ঠস্বর ধীরে ধীরে কতটা পরিবর্তিত হয়েছে। ১৯৮০-এর দশকে তাঁর কণ্ঠনালি (ভোকাল কর্ড) থেকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পলিপ অপসারণের কারণেই কেবল তাঁর কণ্ঠস্বরের এই পরিবর্তন হয়নি, বরং বয়স বাড়ার কারণেও তাঁর কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন হয়েছে বলে জানিয়েছেন অ্যাডাম টেলর।

কণ্ঠস্বর জীবনযাত্রার ধরনের ওপর নির্ভর করে

অ্যাডাম টেলর বলেন, অধিকাংশ মানুষের মধ্যে কণ্ঠনালির বয়স একই হারে বাড়ে। তবে অনেকের জীবনযাত্রার ধরনের কারণে এই কণ্ঠনালির ক্ষতির ঝুঁকি বাড়তে পারে। এতে কণ্ঠস্বরের ধরন পরিবর্তন হতে পারে। যেমন ধূমপান গলার যেকোনো সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। কণ্ঠনালির ক্ষতি করে। এতে শ্লেষ্মা উৎপাদন বেড়ে যায়। আবার কণ্ঠনালির ওপরের অংশ শুকিয়েও দিতে পারে। একইভাবে অ্যালকোহলেরও একই ধরনের প্রভাব আছে। এসব কারণে কণ্ঠনালির ক্ষতি হতে পারে এবং কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন হতে পারে।

আবার কিছু ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন হতে পারে। যেমন স্টেরয়েড ইনহেলার স্বরযন্ত্রের প্রদাহের (ল্যারিঞ্জাইটিস) চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। স্বরযন্ত্রের প্রদাহ নানা কারণে হতে পারে। এর প্রভাবে কণ্ঠ কর্কশ হয়ে যায়। এই স্টেরয়েড ইনহেলার রক্ত পাতলাকারী কণ্ঠনালির ক্ষতি করতে পারে এবং পলিপ তৈরি করতে পারে। এতেও কণ্ঠস্বর কর্কশ হতে পারে। পেশি শিথিলকারী ওষুধের কারণে গলার আশপাশে জ্বালাপোড়া ও কণ্ঠনালির ক্ষতি হতে পারে। এসব ওষুধের প্রভাবে সৃষ্ট জ্বালা ও পরিবর্তন ওই ওষুধ ব্যবহার বন্ধ করার পরে অদৃশ্য হয়ে যায়।

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কণ্ঠনালির স্বাভাবিক পরিবর্তনকে রোধ করা সম্ভব নয়। তবে গানের রেওয়াজ করা ও উচ্চ স্বরে পাঠ করলে কণ্ঠনালির ব্যায়াম হয়, যা কণ্ঠনালির ক্ষতির গতি ধীর করে দিতে পারে।

আবার সংগীতশিল্পী, শিক্ষক ও শরীরচর্চা প্রশিক্ষক বা অন্য ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, যাঁরা কাজের জন্য কণ্ঠস্বর অনেক বেশি ব্যবহার করেন, তাঁদের কণ্ঠস্বরের ক্ষতি হতে পারে। তাঁদের ক্ষেত্রে রেইনকে’স এডিমা নামের এক ধরনের রোগ হয়। এই রোগ অতিরিক্ত ধূমপানের কারণেও হতে পারে। এতে কণ্ঠনালির তরল ফুলে যায়, কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন হয়।

রেইনকে’স এডিমা কখনো কখনো জটিল আকার ধারণ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে কণ্ঠনালির তরল নিষ্কাশনের জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিশ্রাম নেওয়া, ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চললে এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কণ্ঠনালির স্বাভাবিক পরিবর্তনকে রোধ করা সম্ভব নয়। তবে গানের রেওয়াজ করা ও উচ্চ স্বরে পাঠ করলে কণ্ঠনালির ব্যায়াম হয়, যা কণ্ঠনালির ক্ষতির গতি ধীর করে দিতে পারে।

কণ্ঠনালির যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পানি পান এবং অ্যালকোহল ও ধূমপান বন্ধ করলে কণ্ঠনালির ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.