কক্সবাজার সৈকতে থার্টিফার্স্ট নাইটে সব ধরনের উন্মুক্ত আয়োজনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সকাল ৬টা পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান। তিনি জানান, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থার্টিফার্স্ট নাইটে সমুদ্রসৈকত বা উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের জমায়েত, অনুষ্ঠান, আতশবাজি, গান-বাজনা বা আয়োজন করা যাবে না। একইভাবে ইনডোর বা হোটেলেও অনুষ্ঠান সীমিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইনডোরে কোনো আয়োজন করলে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানান, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে জেলা প্রশাসনের চারটি ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন স্থানে কাজ করবে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল জোরদার রাখবেন। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত কক্সবাজারে বছর শেষে ভ্রমণে এসেছেন লাখো মানুষ। পর্যটকদের বেশিরভাগই এসেছেন খ্রিষ্টীয় বছরের শেষ রাত ও নতুন বছরের প্রথম প্রহর থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন করতে।
পর্যটকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের লাইফ গার্ড কর্মীরা বলছেন, ২০২২ সালের শেষ সূর্যকে বিদায় জানাতে প্রতিবছর এ সৈকতে সমাগম ঘটে অন্তত ৩ লাখ পর্যটকের। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটবে না। ইতোমধ্যে ২ লাখের কাছাকাছি পর্যটক কক্সবাজারে এসেছেন। শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ আরও ৫০ থেকে ৬০ হাজার আসতে পারেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান বলেন, কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সৈকতের কোথাও আতশবাজি, পটকা ফোটানোসহ গান-বাজনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিংবা ব্যান্ড সংগীতের আয়োজন করতে পারবে না কেউ। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় বালুচরে দাঁড়িয়ে সমুদ্র উপভোগ করা যাবে। বিধিনিষেধ পালনে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে।
তবে এ নিয়ে হতাশা দেখা গেছে পর্যটকদের মধ্যে। পরিবারের ছয় সদস্য নিয়ে ভ্রমণে আসা ঢাকার ব্যবসায়ী আরিফ হাসান জানান, পাঁচ বছর আগে সৈকতে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের সঙ্গে থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন করেছেন। হোটেলেও ব্যান্ড সংগীতের আয়োজন ছিল। এবার নিষেধাজ্ঞায় তিনি হতাশ।
হোটেল সি-গালের সিইও শেখ ইমরুল ইসলাম ছিদ্দিকী রুমি বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইটের কোনো আয়োজন হোটেলে রাখা হয়নি। তবে অতিথিদের জন্য হোটেলের খোলা মাঠে ডিনারের ব্যবস্থা রয়েছে।