সাকিব আল হাসানের কাছে কিছুদিন আগে জানতে চাওয়া হয়েছিল, পাকিস্তান বা ভারত সফরে টেস্ট সিরিজ খেলতে চান কিনা? তিনি ঝটপট উত্তর দিয়েছিলেন– ‘রাখলে (দলে) অবশ্যই খেলব।’
দেশের কিংবদন্তি অলরাউন্ডারের সেই দিনের উত্তর শুনে মনে হয়েছিল, তিনি নিজেকে বোধ হয় আগের মতো আর অটো চয়েস ভাবতে পারেন না। সেজন্যই বলেছেন, দলে রাখা হলে খেলবেন। গতকাল জানা গেল, ৩৭ বছর বয়সী অলরাউন্ডার পাকিস্তান সফরে থাকছেন। বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস জানান, সাকিবের সম্মতি নিয়ে তাঁকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব অনেক দিন ধরে চোখের সমস্যায় ভুগলেও তা প্রকট আকার ধারণ করে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকে। বিপিএলের প্রথম দিকে তো ব্যাটিংই করতে পারছিলেন না। চোটের পাশাপাশি চোখে সমস্যা থাকায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোম ও অ্যাওয়ে সিরিজ খেলা হয়নি তাঁর। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন তিনি। টি২০ বিশ্বকাপ শেষ করে খেলেছেন ফ্র্যাঞ্চাইজি টি২০ লিগে। যুক্তরাষ্ট্রের মেজর ক্রিকেট লিগ শেষ করে কানাডার গ্লোবাল টি২০ লিগে যোগ দিয়েছেন তিনি। গ্লোবার লিগে খেলার জন্য ১২ আগস্ট পর্যন্ত বিসিবির ছাড়পত্র পেয়েছেন। আগের পরিকল্পনা ঠিক থাকলে ১৩ আগস্ট ঢাকায় থাকার কথা তাঁর।
এ ব্যাপারে জালাল ইউনুস বলেন, ‘সাকিব টেস্ট খেলবে। বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে। নির্বাচকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমার সঙ্গেও কথা হয়েছে তার। সময় না থাকলে দুবাই থেকে সে সরাসরি পাকিস্তান চলে যেতে পারে। তবে তাকে বলা হয়েছে, ঢাকায় এসে দু-এক দিন অনুশীলন করে দলের সঙ্গে যেতে।’
সাকিবের ক্যারিয়ার এখন আর ক্রিকেটীয় কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ নেই। মাগুরা সদর থেকে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সংসদ সদস্য তিনি। টানা খেলা থাকায় নির্বাচনী এলাকায় সময় দিতে পারেননি। এলাকার নেতাকর্মীকে সমন্বয়ের কাজটি তিনি বাবাকে দিয়েই করাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রে ফ্র্যাঞ্চাইজি টি২০ লিগে খেলতে যাওয়ার আগের দিন মাগুরার রাজনৈতিক সহকর্মীদের কাছ থেকে তিন মাস সময় চেয়ে নেন ফোনে।
তখন তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিন মাস পরে ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাওয়া হলে সাকিব সমকালের এ প্রতিবেদককে বলেছিলেন, ‘ওরকম কোনো পরিকল্পনা নেই। এই বছরে সব খেলতে চাই। এর পর হয়তো বেছে বেছে খেলব। দেশে যে সিরিজগুলো হবে, সেগুলোতে খেলার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।’
রাজনীতি, এন্ডোর্সমেন্ট, ব্যবসা এবং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত পরিবারকে সময় দিয়ে ৩৭ বছর বয়সী সাকিবের পক্ষে টানা ক্রিকেট খেলে যাওয়া সত্যিই কঠিন। সে উপলব্ধি থেকে বেছে বেছে খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া তাঁর। তবে ২০২৫ সালে পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, ২০২৬ সালের টি২০ এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপেও খেলতে পারেন সাকিব। কারণ তিনি বলেছেন, যতদিন ভালো লাগবে, ততদিন খেলা চালিয়ে যাবেন। বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার চাইলে বিসিবিও খেলার সুযোগ করে দেবে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বিশ্বকাপ-পরবর্তী বোর্ড সভা শেষের সংবাদ সম্মেলনে সেটা নিশ্চিত করে দিয়েছেন।