এবার পাইকারিতে বেড়েছে আটা ও মসুর ডালের দাম

0
91
আটা ও মসুর ডাল

পাইকারি বাজারে এবার আটার দাম বেড়েছে। দাম বেড়েছে মোটা দানার মসুর ডালেরও। এ দুটি পণ্যের বড় অংশই আমদানি করা হয়। আমদানিকারক, পাইকারি ও খুচরা বাজারে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার-সংকটের কারণে আমদানি বিল পরিশোধে ব্যয় বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে আটা ও ডালের দামে।

প্যাকেটজাত আটার একটি বস্তায় ২৪ কেজি (১২ প্যাকেট) আটা থাকে। গতকাল শনিবার ডিলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে এই বস্তার দাম ছিল ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ৬০ টাকা। ডিলার পর্যায়ে দাম বেড়ে বর্তমানে ১ হাজার ১২০ টাকা থেকে ১ হাজার ১৩০ টাকায় উঠেছে।

সাধারণত প্যাকেটের আটার দাম বাড়লে খোলা আটার দামও বাড়ায় কোম্পানিগুলো। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পাইকারিতে খোলা আটার দাম কেজিতে ১-২ টাকা বেড়ে ৪২-৪৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল রাজধানীর পাইকারি এবং খুচরা বাজারে ডাল ও আটা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আটা বিপণনকারী কোম্পানির প্রতিনিধিরা খুচরা দোকানে এসে জানিয়ে গেছেন, তাঁরা দুই কেজির প্যাকেটের আটার দাম ১০ টাকা করে বাড়াতে যাচ্ছেন। অর্থাৎ প্রতি কেজি আটায় দাম বাড়বে ৫ টাকা করে।

অবশ্য বাড়তি দামের প্রভাব গতকাল খুচরা বাজারে দেখা যায়নি। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে নতুন দামের প্যাকেটজাত আটা বাজারে আসতে পারে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। বর্তমানে খুচরা বাজারে দুই কেজি আটার প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের হিসাব বলছে, খুচরা পর্যায়ে প্যাকেটের আটার দাম ছিল প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। প্রতি কেজি খোলা আটা দাম ছিল ৪২ থেকে ৪৫ টাকা।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে গত সপ্তাহে মোটা দানার মসুর ডালের ২৫ কেজির বস্তা দাম ছিল ২ হাজার ৫০০ টাকা। গতকাল যা ছিল ২ হাজার ৬০০ টাকা। অর্থাৎ পাইকারি বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ চার টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, খুচরা বাজারে এসব পণ্যের দামে প্রভাব পড়তে সাধারণত কয়েক দিন সময় লাগে। গতকাল খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা দানার মসুর ডাল বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকার আশপাশে। অবশ্য মাঝারি ও সরু মসুর ডালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

টিসিবির হিসাবে, গতকাল খুচরা বাজারে এক কেজি মোটা দানার মসুর ডালের দাম ছিল ১০৫ থেকে ১১০ টাকা।

কারওয়ান বাজারের রব স্টোরের বিক্রেতা নাঈম হাসান বলেন, ‘মোটা দানার মসুর ডালের দাম নতুন করে আবার বাড়ছে। আটার দাম একটা জায়গায় স্থির ছিল। সেটাও বাড়ানোর কথা জানানো হয়েছে। দু-একটি কোম্পানি নতুন দামে ক্রয়াদেশও নিচ্ছে।’

দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য চাল। এরপরই রয়েছে আটা-ময়দা। ময়দার দাম বেশি হওয়ার কারণে সাধারণ মানুষ আটার ব্যবহার বেশি করে থাকেন। বড় কোম্পানিগুলো গম আমদানি করে আটা ও ময়দা বানিয়ে প্যাকেটজাত করে বিক্রি করে। আবার খোলা অবস্থায়ও বিক্রি করে। দেশে মসুর ডাল কিছু পরিমাণে উৎপাদিত হলেও বেশির ভাগ ডাল আমদানি করতে হয়।

শীর্ষস্থানীয় ভোগ্যপণ্য বিপণনকারী কোম্পানি টি কে গ্রুপের পরিচালক (ফাইন্যান্স অ্যান্ড অপারেশনস) মো. শফিউল আতহার গতকাল বলেন, বেশি দামে ডলার কেনার কারণে আমদানিতে ব্যয় বেড়েছে। ফলে এই দুই পণ্যের দাম বাড়তির দিকে। তবে বাজারে যাতে পণ্যের সংকট না হয়, সে জন্য বাড়তি দামে ডলার কিনে হলেও আমদানি অব্যাহত রাখা হয়েছে।

আমদানিতে প্রতি ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তাঁদেরকে বেশি দামে ডলার কিনে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে হয়।

অন্য পণ্যের দাম

বাজারে উচ্চমূল্যে বিভিন্ন পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। গতকাল খুচরা বাজারে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের ডজন ছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ থেকে ২১০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম রাখা হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকা। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি। রুই মাছের কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। আর পাঙাশ ও তেলাপিয়ার দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।

সাধারণ আলুর কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ১০০ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে কাঁচা মরিচের দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি। অধিকাংশ সবজির কেজি পড়ছে ৮০ টাকার ওপরে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.