চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় পিকআপের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই ভাই নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের রাউজানের পাহাড়তলী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই ভাইয়ের নাম কাজী মুহাম্মদ আক্কাস উদ্দিন (৬০) ও তাঁর বড় ভাই মুহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন (৬২)। তাঁরা উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাজীপাড়ার কাজী নাদের হোসেনের ছেলে। আক্কাস উদ্দিনের তিন ছেলে এবং মমতাজ উদ্দিনের দুই ছেলে ও তিন মেয়ে আছে। দুর্ঘটনায় আরও দুজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন হলেন একই গ্রামের জয়নাল আবেদীন (৫০) আর অটোরিকশাচালকের নাম জানা যায়নি।
নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা জানিয়েছেন, নিহত দুই ভাইয়ের মধ্যে মুহাম্মদ আক্কাস উদ্দিনের লাশের জানাজা ও দাফন গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সম্পন্ন হলেও আরেক ভাই মুহাম্মদ মমতাজ উদ্দিনের লাশ এখনো হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। স্বজনেরা এখনো থানা-পুলিশ আর হাসপাতালে দৌড়ে সময় পার করছেন। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিহত ছোট ভাইয়ের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া হস্তান্তর করা হলেও বড় ভাইয়ের লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। আজ শুক্রবার বিকেল নাগাদ লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুই ভাই মিলে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে অনুষ্ঠানস্থলের খুব কাছাকাছি পৌঁছে যান তাঁরা। গন্তব্যের মাত্র ১০০ মিটার আগে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপ তাঁদের অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ছোট ভাই আক্কাস উদ্দিন। আহত হন বড় ভাই মমতাজ উদ্দিনসহ আরও দুজন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মারা যান মমতাজ উদ্দিন।
নিহত দুই ভাইয়ের ভাগনে ও স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতা মুহাম্মদ জিয়াউর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলের ১০০ মিটার পরেই ছিল তাঁদের গন্তব্যস্থল। সেখানে নেমে দাওয়াতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু অল্প দূরত্বের মধ্যেই সব শেষ হয়ে গেল। তিনি বেপরোয়া পিকআপ ভ্যানচালকের শাস্তির দাবি করেন।
ঘটনাস্থলের সঙ্গে লাগোয়া চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) জয়নাল আবেদীন বলেন, দুটি গাড়িই ফাঁড়িতে জব্দ রাখা হয়েছে। পিকআপ ভ্যানচালকের বৈধ লাইসেন্স পাওয়া যায়নি।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ছোট ভাইয়ের পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে পরিবারের কাছে গতকাল রাতে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ বিকেলে বড় ভাইয়ের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় পিকআপের চালক ও চালকের সহকারী আটক রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।