বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া বাজারের আরেকটি চায়ের দোকান যুবলীগ নেতা-কর্মীরা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা ওই দোকানে বসে চা পান করতেন। এ কারণে আজ রোববার দোকানটি খুলতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী চা-দোকানি নুরুল ইসলাম (৭০)।
এর আগে গত শুক্রবার যুবদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মো. কামরুজ্জামান দুলাল মাহিলাড়া বাসস্ট্যান্ডে মো. জাকির হোসেনের দোকানে বসে চা পান করেন। এ কারণে শনিবার সকালে ওই দোকান বন্ধ করে দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ২৪ ঘণ্টা পার হলেও খোলা হয়নি দোকানের তালা।
চা-দোকানি জাকির হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু তাঁরা দোকানের তালা খুলে দেননি। এমনকি থানা-পুলিশকে জানানো হলেও দোকান খোলার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেননি।
দোকানে তালা দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম। আজ সকালে যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক আজিজুর রহমান আকন্দ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তাঁরা বলেন, এ ধরনের ঘটনা আওয়ামী লীগের তমসাচ্ছন্ন বর্বরতা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা মানুষের জীবিকার ওপর আঘাত হানতে সামান্য কুণ্ঠাবোধ করেননি।
জানতে চাইলে মাহিলাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলমগীর কবিরাজ আজ রোববার সকালে বলেন, ‘তালা ঝোলানোর সিদ্ধান্তটি আমার একার নয়, এটি দলীয় সিদ্ধান্ত। তাই সবার মতামতের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা ছাড়া জাকির দোকানে অবাঞ্ছিত লোকজন জড়ো করে সমাজ তথা দেশবিরোধী কাজ করে থাকে। এ কারণে দোকান খোলার বিষয়টি একটু জটিল।’
গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন এ বলেন, ‘আমাকে কেউ ঘটনা জানায়নি। খোঁজখবর নিয়ে তালা খোলার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মাহিলাড়া বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে ফুটপাতে ৩০ বছর ধরে চা-বিস্কুট বিক্রি করেন উপজেলার ভীমেরপাড় গ্রামের নুরুল ইসলাম (৭০)। তিনি বলেন, শনিবার রাতে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. রাসেল রারী (৩০), সাংগঠনিক সম্পাদক আলীম খান (২৭), সহসভাপতি আনোয়ার মাতবরসহ (২৮) ১৫-২০ নেতা-কর্মী দোকান বন্ধ করতে বলেন। কারণ জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, ‘বিএনপির পোলাপান তোমার দোকানে চা খেয়ে আড্ডা দেয়, এটাই অপরাধ।’ রোববার সকাল সাতটায় দোকান খুলতে চাইলে যুবলীগ নেতারা খুলতে দেননি।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মাহিলাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো রাসেল রারী বলেন, ‘চায়ের দোকান বন্ধ সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।’ সাংগঠনিক সম্পাদক আলীম খানও অভিযোগ অস্বীকার করেন।
গৌরনদী থানার ওসি মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘কেউ অভিযোগ না করলে আমরা কী করে ঘটনা জানব। খবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’