ইতালির সিসিলি দ্বীপের দক্ষিণ উপকূল থেকে ৫ দশমিক ৩ টন কোকেন জব্দ করেছে পুলিশ। দেশটিতে এত পরিমাণ কোকেন জব্দের ঘটনা আগে ঘটেনি। গত বুধবার চোরাচালানের সময় মাদকটি জব্দ করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ইতালি পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লাতিন আমেরিকা থেকে আসা একটি জাহাজে করে ওই কোকেন আনা হয়েছিল। জাহাজটির ওপর নজর রাখছিল পুলিশ। বুধবার পুলিশের একটি নজরদারি উড়োজাহাজ থেকে দেখা যায়, জাহাজটি থেকে সিসিলি প্রণালির পানিতে কিছু প্যাকেট ফেলা হচ্ছে। পানিতে থাকা একটি ট্রলারে ওই প্যাকেটগুলো তোলা হচ্ছিল। এরপর ট্রলারটি থামিয়ে সেটি থেকে বিপুল পরিমাণ কোকেন জব্দ করা হয়। ওই কোকেনের আনুমানিক মূল্য ৯৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে তিউনেশিয়ার দুজন, ইতালির একজন, আলবেনিয়ার একজন ও ফ্রান্সের একজন নাগরিক রয়েছেন।
এদিকে বিপুল পরিমাণ কোকেন জব্দের এ ঘটনাকে মাদক চোরাচালানের বিরুদ্ধে বড় অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেছেন সিসিলির আঞ্চলিক প্রেসিডেন্ট রেনাতো স্কিফানি। তিনি বলেছেন, ‘মাদক আমাদের সমাজের একটি অভিশাপ। এর পেছনে রয়েছে বিবেকহীন লোকজন, যারা মানুষের আশা এবং বহু পরিবার ধ্বংস করে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।’
এর আগে গত এপ্রিলে সিসিলির পূর্বে সাগরে ভাসমান অবস্থায় প্রায় দুই টন কোকেন উদ্ধার করেছিল ইতালির পুলিশ। চোরাচালানকারীদের সংগ্রহের জন্য ওই মাদক সাগরে ফেলে রাখা হয়েছিল বলে ধারণা পুলিশের।
ইতালিসহ ইউরোপজুড়েই গত কয়েক বছরে মাদক সেবন বেড়েছে। ইউরোপের মাদক পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইউরোপিয়ান মনিটরিং সেন্টার ফর ড্রাগ অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডিকশন (ইএমসিডিডিএ)। তাতে ২০১১ ও ২০২২ সালের মাদক গ্রহণের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, ইউরোপে কোকেন ও হেরোইনসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের ব্যবহার বেড়েছে প্রায় কয়েক গুণ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পশ্চিম ও দক্ষিণ ইউরোপ কোকেনের প্রধান বাজার। এই মাদকের সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে রয়েছে ইতালি, অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, গ্রিস, স্পেন ও জার্মানি।