ভারতে নতুন করে কোভিড সতর্কতা

0
128
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডবীয়র উদ্যোগে আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আজ বুধবার করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয় ছবি: এএনআই

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডবীয়র উদ্যোগে আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আজ বুধবার করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। এরপর সরকারিভাবে বলা হয়, ভিড় জায়গায় সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। সেই জায়গা বদ্ধ স্থান হতে পারে, খোলা জায়গাও হতে পারে। যাঁরা প্রবীণ ও যাঁদের কো-মর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের কঠোরভাবে এ বিধি মেনে চলতে হবে।

বৈঠক চলাকালে সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে পিটিআই জানায়, চীনে করোনার নতুন যে রূপটি এখন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, অমিক্রনের সেই ‘বিএফ.৭’–এ আক্রান্ত তিন রোগীর সন্ধান ভারতে পাওয়া গেছে। এ সংক্রমণের প্রথমটি পাওয়া যায় গুজরাটে, গত অক্টোবরে। গুজরাট বায়োটেকনোলজি রিসার্চ সেন্টার ওই রূপের হদিস দিয়েছিল। দ্বিতীয় নমুনার সন্ধানও মিলেছিল গুজরাটে। তৃতীয়টির দেখা পাওয়া গেছে ওডিশায়।

চীনসহ বিভিন্ন দেশে নতুন করে কোভিডের সংক্রমণ (বিএফ.৭) শুরু হয়েছে। আগামী দিনে তা ভয়ংকর রূপ নিতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা। এ রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বুধবারের বৈঠক ডাকেন। সেই বৈঠকে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা। বৈঠকের পর মান্ডবীয় বলেন, ‘পৃথিবীর কয়েকটি দেশে নতুন করে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এই অতিমারি এখনো শেষ হয়নি। পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সর্বস্তরে নজরদারি আরও বাড়াতে বলা হয়েছে। সরকার যেকোনো পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুত।’

ভিড় জায়গায় মাস্ক পরা ও বুস্টার ডোজ নেওয়ার পরামর্শ ছাড়া সরকার এখনই নতুন করে কোনো কড়াকড়ির রাস্তায় হাঁটতে চাইছে না। এমনকি মাস্ক পরা বাধ্যতামূলকও করা হচ্ছে না। স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিষয়েনীতি নির্ধারণবিষয়ক সদস্য বিনোদ কুমার পল বৈঠক শেষে জানান, খোলা অথবা বদ্ধ স্থানে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হলেও সবার জন্য এখনই তা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে না। মাস্ক পরা ও বুস্টার ডোজ নেওয়া বাধ্যতামূলক না হলেও যাঁরা প্রবীণ ও যাঁদের কো–মর্বিডিটি আছে, তাঁদের জন্য এটা আবশ্যক। তিনি বলেন, দেশে মাত্র ২৭-২৮ শতাংশ মানুষ কোভিডের বুস্টার ডোজ নিয়েছেন। এ সাবধানতামূলক ডোজ যথেষ্ট কার্যকর।

গতকাল মঙ্গলবারই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে কোভিডের নয়া বাড়বাড়ন্ত নিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ রাজ্যগুলোকে জানান, নতুন করে সংক্রমণ দেখা দিলে প্রতিটি নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পরীক্ষাগারে পাঠাতে হবে। এসব পরীক্ষাগারে করোনাভাইরাসের নতুন রূপ ও প্রজাতি নিয়ে গবেষণা জারি রয়েছে। তিনি বলেন, নতুন করে বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ বাড়ছে বলে দেশে জিনোম সিকোয়েন্সিং প্রক্রিয়া দ্রুতগামী করতে হবে, যাতে নতুন প্রজাতি ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই তার মোকাবিলায় নামা যায়।

সরকারি সূত্রের খবর, পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখনই বিদেশ থেকে আসা বিমানযাত্রীদের জন্য কোনো কড়াকড়ি করা হচ্ছে না। বিমানবন্দরে বাধ্যতামূলক বাড়তি ব্যবস্থাও করা হচ্ছে না।

ভারতে এ মুহূর্তে কোভিডের প্রকোপ নিতান্তই কম। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মাত্র ১১২টি নতুন সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের কম। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.