উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কুমারী পূজা উদযাপন

0
19
কুমারী পূজা উদযাপন
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার তৃতীয় দিন মহাষ্টমী শুক্রবার (১১ অক্টোবর)। প্রতিবছরের মতো এবারও মহাষ্টমীতে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দুর্গাপূজার বিশেষ পর্ব ‘কুমারী পূজা’। রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনসহ সারাদেশে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) পূজা মণ্ডপগুলোতে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
 
দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় শুরুতে মহাঅষ্টমীতে এবার কুমারী পূজা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে পূজা কমিটি। শনিবার (৫ অক্টোবর) নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
 
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কুমারী পূজার সার্বিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পূজা উদযাপন কমিটি।
 
ঢাকার রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের স্বামী শান্তিকরানন্দ মহারাজ (কিশোর মহারাজ) জানান, এর আগে করোনা মহামারির সময়ও মহাঅষ্টমীতে কুমারী পূজা বাদ পড়েছিল। কারণ, সংক্রমণ রোধে তখন সরকারের পক্ষ থেকে বেশি লোককে এক জায়গায় একত্রিত হতে নিষেধ করা হয়েছিল।
 
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, কুমারী পূজার ধারাটা রামকৃষ্ণ মিশনেই সীমাবদ্ধ, এটি মিশনেই হয়। কুমারী পূজা রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের প্রবর্তিত একটি প্রথা। কুমারী মেয়েদের মধ্যে তিনি দেবীর উপস্থিতি দেখতেন। এ কারণে ছোট মেয়েদের তিনি অষ্টমীর দিন পূজার ব্যবস্থা করেন। ৮-১০ বছর বয়সের কুমারী মেয়েকে দেবীরূপে পূজা করা হয়।
 
এদিকে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) কুমারী পূজা উপলক্ষে সরেজমিনে রাজধানীর রামকৃষ্ণ মঠে গেলে দেখা যায়, ঢাক, খোল, করতালের বাজনা আর উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে মঞ্চে অধিষ্ঠিত করা হচ্ছে কুমারীকে। নিবেদন করা হচ্ছে শ্রদ্ধা।
 
মাতৃভাবে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা করে তাতে জগজ্জননীর উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করাই কুমারীপূজা। শাস্ত্র মতে, এদিন মা দুর্গার অপর কোনো নামে কুমারীর নামকরণ করা হবে। এ পূজার মাধ্যমে নারী হয়ে উঠবে পবিত্র ও মাতৃভাবাপন্ন। প্রত্যেকে নারীর প্রতি হবে শ্রদ্ধাশীল।
 
পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ১৬টি উপকরণ দিয়ে। এরপর অগ্নি, জল, বস্ত্র, পুষ্প ও বাতাস– এই পাঁচ উপকরণে দেয়া হয় কুমারী মায়ের পূজা। অর্ঘ্য প্রদানের পর দেবীর গলায় পরানো হয় পুষ্পমাল্য। কুমারী পূজা শেষে ভক্তরা মহাষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি দেবেন।
 
হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, কুমারী কন্যার পূজা একাধারে সৃষ্টিকর্তার উপাসনা, মানবের বন্দনা আর পৃথিবীতে নারীর মর্যাদার প্রতিষ্ঠা। নারীর সম্মান, মানুষের সম্মান আর সৃষ্টিকর্তার আরাধনাই কুমারী পূজার অন্তর্নিহিত শিক্ষা।
 
কুমারী পূজা ছাড়াও আজ মহাষ্টমীতে রাজধানীর শাঁখারী বাজার, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রমনা কালী মন্দিরসহ সারাদেশে বিভিন্ন মন্দিরে বেলা একটা থেকে দিনভর ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হবে। মন্দির ও মণ্ডপগুলোতেও পূজা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করা হবে।
 
প্রসঙ্গত, বুধবার (৯ অক্টোবর) মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হয় শারদীয় দুর্গোৎসবের দুর্গাপূজা। রোববার (১৩ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবের।
 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.