সাড়ে সাত ঘণ্টা পর অবশেষে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে। পণ্যবাহী ট্রেনের লাইনচ্যুত দুটি বগি উদ্ধার শেষে রাত ৯টায় রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। এর আগে শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া স্টেশনের পশ্চিম পাশে পণ্যবাহী ট্রেনের দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এর পর থেকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এতে দুর্ভোগে পড়েন কয়েক হাজার যাত্রী।
উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার গোলাম ফেরদৌস জানান, পাকশী থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উল্লাপাড়া স্টেশনে পৌঁছে। প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টার পর লাইনচ্যুত বগি দুটি মূল লাইনে তোলা হয়। এর পর লাহিড়ী মোহনপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ঢাকাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি দিয়ে এই পথে রাত ৯টায় পুনরায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এর পর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা আপ ও ডাউন ট্রেনগুলো চলাচল শুরু করে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, গাফিলতির কারণে এমন দুর্ঘটনা কিনা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে তদন্ত করার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। চার সদস্যের এ কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে পাকশী বিভাগের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনোয়ার হোসেনকে। তদন্তে কারও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পণ্যবাহী ট্রেনের দুটি বগি লাইনচ্যুতির ঘটনায় উল্লাপাড়ার পশ্চিমে শরৎনগর স্টেশনে ঢাকা-কুড়িগ্রামগামী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, ঈশ্বরদীতে খুলনা-ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস, লাহিড়ী মোহনপুর স্টেশনে কলকাতা-ঢাকাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং জামতৈল স্টেশনে ঢাকা-দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেসসহ দু’পাশে বেশ কয়েকটি ট্রেন আটকা পড়ে। রেল যোগাযোগে ব্যাপক শিডিউল বিপর্যয় দেখা দেয়। এতে ট্রেনগুলোর হাজার হাজার যাত্রী বিড়ম্বনায় পড়েন।
ভারত থেকে ভুট্টা পরিবহনকারী একটি ট্রেন উল্লাপাড়ায় আসার পর কিছু পণ্য খালাস করা হয়। শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে লাইন পরিবর্তনের সময় স্টেশনের পশ্চিমে তিন নম্বর লাইনের ওপর দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনার পর পরই পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগের পক্ষ থেকে পাকশী ও রাজশাহীকে জানানো হয়। পাকশী থেকে সন্ধ্যায় রিলিফ ট্রেন উল্লাপাড়ায় আসে। বগিগুলো খালি করার পর রিলিফ ট্রেন দিয়ে চলে উদ্ধারকাজ।