উত্তরপত্র কিনতে যশোর শিক্ষা বোর্ডের বাড়তি ব্যয় ২ কোটি টাকা

0
101
যশোর শিক্ষা বোর্ড

যশোর শিক্ষা বোর্ডে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র সরবরাহের কার্যাদেশ প্রদানে বড় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ১ কোটি ৩০ লাখ উত্তরপত্র সরবরাহের এই কাজে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ না দেওয়ায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি হবে ২ কোটি টাকার বেশি। সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ঢাকার এশিয়া বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েটসে অভিযোগ তুলেছে।

দরদাতা প্রতিষ্ঠানটির অভিযোগ, বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি হবে জেনেও গোপন আঁতাতের মাধ্যমে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। এতে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবেন। তবে বোর্ড কর্তৃপক্ষের দাবি, শর্ত পূরণ না করায় সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পায়নি।

জানা যায়, যশোর শিক্ষা বোর্ড ২০২৪ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র সরবরাহের জন্য গত নভেম্বরে দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্র অনুযায়ী, ৪৫ লাখ ওএমআরসহ মূল উত্তরপত্র, ৪৫ লাখ এমসিকিউ ওএমআর শিট, ৩০ লাখ অতিরিক্ত উত্তরপত্র এবং ১০ লাখ ব্যবহারিক উত্তরপত্র সরবরাহ করার কথা। দরপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল গত ২০ নভেম্বর।

এতে ঢাকার এশিয়া বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েটস সর্বনিম্ন ১৩ কোটি ৭৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা দর দাখিল করে। এ ছাড়া এলিট প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজেস লিমিটেড ১৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৩ হাজার, বাংলাদেশ মনোসপুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং কো. লিমিটেড ১৬ কোটি ৬৭ লাখ ৭৭ হাজার ৫০০, প্রিন্ট মাস্টার প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড ১৬ কোটি ৮৫ লাখ ৫০ হাজার এবং মাস্টার সিমেক্স পেপার লিমিটেডের ১৬ কোটি ৯৯ লাখ ৫৫ হাজার টাকা দর দাখিল করে।

বোর্ড সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, এশিয়া বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েটস সর্বনিম্ন দর দাখিল করলেও গেল সপ্তাহে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে এলিট প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজেস লিমিটেডকে। সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে তাদের দর ২ কোটি ১২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বেশি।

অভিযোগ রয়েছে, দরপত্র আহ্বানের আগেই এলিট প্রিন্টিংয়ের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের আঁতাত হয়েছে। এ কারণে কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতার শর্ত সংযুক্ত করা হয়েছে। এই শর্তের বেড়াজালে আটকে সর্বনিম্ন দরদাতাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহসান হাবীবের দাবি, পিপিআর মেনে এই কাজে ১২ কোটি টাকার একক কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে। দরপত্রের শর্ত পূরণ না করায় সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। তাছাড়া সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানটি কয়েকটি কাজের ক্ষেত্রে কালো তালিকাভুক্ত হয়। এ কারণে বোর্ড কোনো ঝুঁকি নিতে চায়নি।

এশিয়া বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েটসের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মান্নান বলেন, তিনি একাধিক বোর্ডে উত্তরপত্র সরবরাহের কাজ করেছেন। কিন্তু এখানে অযৌক্তিক শর্ত দেওয়া হয়েছে। কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। তিনি এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.