উচ্চশিক্ষায়, কর্মক্ষেত্রে কেন হোঁচট খাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

0
219
শিক্ষার্থীদের অনেকেই ঘাটতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসেন

প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে যেসব দক্ষতা অর্জন করার কথা, অধিকাংশ শিক্ষার্থী তা ঠিকমতো অর্জন করতে পারছে না। এই ঘাটতির প্রভাব পড়ছে উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট (স্নাতক-সম্মান) ভর্তি পরীক্ষায় এবার অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তীর্ণ (ভর্তিযোগ্য) হয়েছেন মাত্র ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। পরিষ্কার করে বললে, তাঁরা পাস নম্বর পেয়েছেন। উচ্চমাধ্যমিকের বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক—এই তিন শাখার শিক্ষার্থীরাই এই অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।

শুধু এবার নয়, কয়েক বছর ধরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত কলা অনুষদের অধীন খ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথমে ইংরেজি বিভাগে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন মাত্র দুজন। অথচ এই ইউনিট থেকে তখন বিভাগটিতে আসন ছিল ১২৫টি। পরে অবশ্য অন্যভাবে সমস্যার সমাধান করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় নির্ধারিত আসনের বিপরীতে শিক্ষার্থী বাছাই করা হয়। ফলে পাসের হার বেশি হলে সবাই ভর্তি হয়ে যাবেন, এমনটা নয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী কেন ন্যূনতম পাস নম্বর পান না। শুধু ভর্তি পরীক্ষায় নয়, ভর্তি হয়েও অনেকেই উচ্চশিক্ষায় পড়াকালে অসুবিধায় পড়েন। আবার ‘কোনোমতে’ উচ্চশিক্ষা শেষ করে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সময় অনেক তরুণ-তরুণী বড় ধরনের ধাক্কা খান। একদিকে দক্ষতার অভাবে পিছিয়ে পড়েন, অন্যদিকে চাকরির বাজারে কাঙ্ক্ষিত সুযোগ না পাওয়ায় অনেকেই বেকার থাকছেন।

শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, আসলে দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাতেই বড় ধরনের গলদ রয়েছে। এই স্তরে দুর্বলতার কারণেই মূলত পরবর্তী সময়ে উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে প্রভাব পড়ছে।

সরকারি-বেসরকারি একাধিক গবেষণার তথ্য বলছে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাক্রম অনুযায়ী যতটুকু শেখার কথা, বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী তা শিখতে পারছে না। ফলে এই পর্যায়ে যতটুকু দক্ষতা অর্জন করার কথা, তা না করেই অনেক শিক্ষার্থী ওপরের শ্রেণিতে উঠছে। এই ঘাটতি পূরণ না হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পরও পরবর্তী পর্যায়ে গিয়ে ধাক্কা খায়। যেমন প্রথম শ্রেণি থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত ইংরেজি বাধ্যতামূলক। অথচ উচ্চমাধ্যমিক পাসের পরও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ইংরেজিতে ভাষাগত দক্ষতায় খুবই দুর্বল।

বেসরকারি সংগঠন ওয়েব ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৫ থেকে ১৬ বছর বয়সী ১ হাজার ৫০০-এর বেশি শিশুর ওপর এক জরিপ চালানো হয়। ১৪ জুন প্রকাশিত ওই জরিপের তথ্য বলছে, ১০ শতাংশের বেশি ছেলে এবং প্রায় ৯ শতাংশ মেয়ে বাংলায় বর্ণই পড়তে পারেনি। ইংরেজিতে এই হার আরও বেশি। ইংরেজিতে বর্ণ পড়তে পারেনি ১৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ ছেলে এবং ১৫ দশমিক ২২ শতাংশ মেয়ে। এ ছাড়া বাংলায় গল্প পড়তে পারেনি প্রায় ৬২ শতাংশ ছেলে ও ৫৩ শতাংশ মেয়ে। আর ইংরেজিতে গল্প পড়তে পারেনি প্রায় ৮৫ শতাংশ ছেলে ও প্রায় ৮৩ শতাংশ মেয়ে। গণিতে একক অঙ্ক শনাক্ত করতে পারেনি ১৪ দশমিক ১৯ শতাংশ ছেলে এবং ১৩ শতাংশ মেয়ে। আর ভাগ করতে পারেনি প্রায় ৯৬ শতাংশ ছেলে ও ৯৭ শতাংশের বেশি মেয়ে।

বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ৭৫১ ছেলে ও ৭৮২ মেয়েশিশুর ওপর এই জরিপ চালানো হয়েছে। ৫ থেকে ১৬ বছর বয়সী প্রান্তিক শিশুদের বাড়িতে গিয়ে এই ‘নাগরিক কর্তৃক মূল্যায়ন’ করা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বইয়ের বিষয়বস্তুর ভিত্তিতে জরিপটি করা হয়।

এই জরিপের কিছুদিন আগে সরকারি প্রতিষ্ঠান জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) এক গবেষণায় উঠে এসেছে, করোনার আগে ২০১৯ সালে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। অর্থাৎ তখনই প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী শিক্ষাক্রম অনুযায়ী যা অর্জন করার কথা ছিল, তা করতে পারেনি। এখন এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও আগের তুলনায় অবনতি হয়েছে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী জটিল বাক্য ও শব্দ পড়তে পারে না।

এসব গবেষণার তথ্য বলছে, বড় ধরনের দক্ষতার ঘাটতি নিয়ে ওপরের ক্লাসে উঠছে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা। মাধ্যমিকে গিয়েও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ইংরেজি ও গণিতে দক্ষতা অর্জনে পিছিয়ে থাকে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অব সেকেন্ডারি স্টুডেন্ট (মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জাতীয় মূল্যায়ন) প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৬১ শতাংশ শিক্ষার্থীর ইংরেজিতে অবস্থা খারাপ। একই শ্রেণিতে গণিতে ৪৩ শতাংশের অবস্থা খারাপ বা গড়পড়তা।

দুর্বলতার কারণ কী

মাউশির মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণ শাখা মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জাতীয় মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরির পর সবচেয়ে এগিয়ে থাকা এবং পিছিয়ে পড়া দেশের দুটি উপজেলার ফলাফল পর্যালোচনা ও সুপারিশমালা প্রস্তুতের লক্ষ্যে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। মাউশির ওই কর্মশালায় দুর্বলতা ও সাফল্যের কিছু কারণ উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া উপজেলা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা এবং সবচেয়ে এগিয়ে থাকা ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তারা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় দীঘিনালার বানছড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয় চাকমা তাঁর প্রতিষ্ঠানের খারাপ ফলের জন্য কিছু কারণ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক খুবই কম। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদানের জন্য প্রধান শিক্ষক ছাড়া মাত্র পাঁচজন শিক্ষক আছেন। বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের কোনো শিক্ষক নেই। অন্য বিষয়ের শিক্ষকেরা ‘প্রক্সি’ হিসেবে এসব ক্লাস নিয়ে থাকেন। এ ছাড়া পাহাড়ি এলাকায় দূরদূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসতে পারে না।

১৫ জুন মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে বিজয় চাকমা বলেন, বিদ্যালয়ে তিনিসহ এখন ছয়জন শিক্ষক আছেন। ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের শিক্ষক নেই। মোট শিক্ষার্থী প্রায় ২৮৫। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় তাঁদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে আছে।

অন্যদিকে সবচেয়ে ভালো উপজেলা ঝালকাঠির রাজাপুরের মনোহরপুর উচ্চবিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মো. এনামুল হক কর্মশালায় বলেন, বেশির ভাগ শিক্ষক নিয়মিত বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন এবং তাদের পড়ালেখায় উদ্বুদ্ধ করেন। বিদ্যালয়ে প্রতিটি শ্রেণির সব শিক্ষার্থীর অভিভাবকের মুঠোফোন নম্বর রয়েছে। ফলে কোনো শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকতে পারে না। শিক্ষা কর্মকর্তারা বিদ্যালয়ে নিয়মিত পরিদর্শনে আসেন।

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন মো. ইলিয়াসও কর্মশালায় বলেন, তাঁদের বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক রয়েছেন। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়মুখী, অভিভাবকেরাও সচেতন।

মাউশির ওই কর্মশালার প্রতিবেদনই বলে দিচ্ছে, পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকা, না-থাকার ওপর বিদ্যালয়ের ভালো-মন্দ নির্ভর করে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রতি বাড়তি যত্নও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। অধিকাংশ বিদ্যালয়েই এই ঘাটতি দেখা যায়।

বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যার অনুপাতে শিক্ষক কম। এর মধ্যে দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান ও সহকারী শিক্ষক মিলিয়ে ৩৭ হাজার ৯২৬ শিক্ষকের পদ শূন্য আছে।

দীর্ঘ ছুটির প্রভাব

শিক্ষক-সংকট ছাড়াও আরও কয়েকটি সাধারণ বিষয় আছে, যা সঠিক শিক্ষার পথে অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। এর অন্যতম একটি হচ্ছে, বিপুল শিক্ষার্থী নিয়ে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকেরা আলাদাভাবে শিক্ষার্থীদের বোঝাতে পারেন না। অনেক শিক্ষকই এখন আগের মতো আন্তরিক নন। আবার নিয়ম ভেঙে শ্রেণিকক্ষের বাইরে নিজেদের শিক্ষার্থীদের কোচিং-প্রাইভেট পড়ানোর প্রতি অনেক শিক্ষকের ঝোঁক আছে।

এ ছাড়া বিদ্যালয়গুলোতে বছরের বড় অংশজুড়েই ছুটি থাকে। শিক্ষাপঞ্জিতে উল্লেখিত ছুটির বাইরেও নানা কারণ ও উপলক্ষে লম্বা ছুটি থাকে। চলতি বছরের শিক্ষাপঞ্জিতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক ছুটি ৭৬ দিন। শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, পবিত্র রমজান, পবিত্র ঈদুল ফিতরসহ কয়েকটি উপলক্ষে ২৩ মার্চ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি। বাস্তবে এই ছুটির বাইরেও আরও এক মাসের বেশি সময় অনেক বিদ্যালয়ে ছুটি ছিল। এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র থাকায় অনেক বিদ্যালয়ে ছুটি ছিল। যেমন ঢাকা গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল ২৩ মার্চ থেকে ৩ জুন পর্যন্ত টানা ক্লাস বন্ধ ছিল।

এভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঠিকমতো শ্রেণি কার্যক্রম না থাকলে শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবেই পড়ালেখা থেকে দূরে থাকে। এতে তারা পিছিয়ে পড়ছে। এমন একটি প্রক্রিয়ায় বিদ্যালয়ের পাশাপাশি কোচিং-প্রাইভেট মিলিয়ে পরীক্ষার বৈতরণি পার হলেও একেকটি শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের যেসব দক্ষতা অর্জন করার কথা, তা আর ঠিকমতো অর্জিত হয় না। এর প্রভাব পড়ে উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে।

২০২১ সালে বিআইডিএসের করা এক জরিপের তথ্য বলছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলো থেকে পাস করা ৬৬ শতাংশ শিক্ষার্থী বেকার থাকছেন। বেকার শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বাইরে অন্যান্য বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।

আলোচনা আছে, দক্ষ জনবলের অভাবে অনেক বিদেশি নাগরিক এ দেশে বিভিন্ন খাতে কাজ করেন। কয়েক দিন আগে জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১১৫টি দেশের ২০ হাজার ৯৮৮ জন ওয়ার্ক পারমিট (কাজের অনুমতি) নিয়ে বাংলাদেশে কাজ করছেন।

শিক্ষার্থীদের দক্ষতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান। সম্প্রতি ঢাকায় শিক্ষাবিষয়ক এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এখন যারা মাধ্যমিকে আছে, ১০ বছর পর তারা শ্রমবাজারে প্রবেশ করবে। তারা কোন ধরনের শ্রমে বা কাজে ঢুকবে, সেটি অনেকটাই তাদের এই সময়ের শিক্ষার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়ে যাবে।

করণীয় কী

মাউশির ওই প্রতিবেদনে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দেশের অনগ্রসর, পিছিয়ে পড়া এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ এবং বাংলা, ইংরেজি ও গণিতে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিশ্চিত করা।

মাউশির মাধ্যমিক শিক্ষার্থীর জাতীয় মূল্যায়ন শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, যেসব শিক্ষার্থী পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অন্যান্য বই পড়ে, তাদের ফল কিছুটা ভালো। সুতরাং শ্রেণি কার্যক্রম চলাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগার খোলা রাখা, ভাষাগত সমস্যা দূর করার জন্য এনসিটিবির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

ওয়েব ফাউন্ডেশনের গবেষণা প্রতিবেদনেও শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষকসংখ্যা বাড়ানো, শ্রেণির পড়া শ্রেণিতেই শেষ করা, শিক্ষকদের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাসহ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে।

শিক্ষকদেরও প্রস্তুতি দরকার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান  বলেন, বেশ কয়েকটি কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে শিক্ষার্থীদের পুরোপুরি শিখন অর্জিত হয় না। শিক্ষার্থীদের অনেকেই ঘাটতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসেন।

দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে শিখন ঘাটতির একটি বড় কারণ হচ্ছে, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের তুলনায় শিক্ষার্থী বেশি। ফলে একজন শিক্ষক আলাদাভাবে শিক্ষার্থীর ফিডব্যাক (ফলাবর্তন) বুঝতে পারেন না। এ জন্য শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর অনুপাতে শিক্ষকের সংখ্যা বাড়াতে হবে। শিক্ষকদেরও প্রস্তুতি নিয়ে শ্রেণিকক্ষে যেতে হবে।

চলতি বছর চালু নতুন শিক্ষাক্রম ঠিকমতো বাস্তবায়ন করা গেলে শিক্ষার্থীদের শেখানোর ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন হাফিজুর রহমান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.