ঈদের সকালে বা বিকেলে মেহমান আসবেই। মচমচে বা মিষ্টি কিছু পদ তৈরি করে রাখতেই হয়। মেহমান আপ্যায়নে নতুন খাবার পরিবেশন করার চেষ্টা থাকে সবারই। তেমনই কিছু রেসিপি দিয়েছেন ফারাহ্ সুবর্ণা।

বিস্কুট ফল ককটেল
উপকরণ: ডাইজেস্টিভ বিস্কুটের গুঁড়ো ১ কাপ, গলানো মাখন ৪ টেবিল চামচ, বাদামি চিনি ৩ টেবিল চামচ, হুইপড ক্রিম ১ প্যাকেট, তরল দুধ আধা কাপ, ছোট কিউব করে কাটা পাকা আম আধা কাপ, ছোট কিউব করে কাটা মিষ্টি আনারস আধা কাপ, ছোট করে কাটা সবুজ আঙুর আধা কাপ, খোসাসহ ছোট কিউব করে কাটা লাল আপেল আধা কাপ।

নুডলসে প্যাঁচানো মচমচে মুরগি
উপকরণ: মুরগির বুকের মাংস ৩০০ গ্রাম, স্টিক (এগ) নুডলস ১ প্যাকেট, ডিম ১টা, মুরগির কিউব ১টি, কর্নফ্লাওয়ার সিকি কাপ, সয়া সস ১ টেবিল চামচ, টমেটো সস ১ চা-চামচ, মরিচগুঁড়ো সিকি চা-চামচ, গোলমরিচের গুঁড়ো স্বাদমতো, রসুনবাটা আধা চা-চামচ, আদাবাটা আধা চা-চামচ, লেবুর রস ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো ও তেল ভাজার জন্য।
প্রণালি: গরম পানিতে লবণ দিয়ে নুডলস সেদ্ধ করে নিন। পানি ঝরিয়ে ঠান্ডা পানিতে আবারও দিন। পানি ঝরিয়ে একটা ট্রেতে ছড়িয়ে রাখতে হবে, যাতে নুডলস ঝরঝরে হয়ে যায়। মুরগির হাড় ছাড়ানো বুকের মাংস পাতলা ও চিকন লম্বা আকারে কেটে নিতে হবে। তারপর কর্নফ্লাওয়ার ও তেল বাদে বাকি উপকরণ দিয়ে মেখে আধা ঘণ্টার জন্য ম্যারিনেট করুন। ম্যারিনেশন হয়ে গেলে এর সঙ্গে কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে ভালো করে মেখে একেক টুকরা মুরগি নিয়ে তার চারদিকে সেদ্ধ নুডলস পেঁচিয়ে রাখুন। এভাবে সব কটি মুরগির মাংসে নুডলস পেঁচিয়ে নিন। প্যানে তেল গরম করে তাতে সাবধানে নুডলস প্যাঁচানো মুরগির স্ট্রিপগুলো দিয়ে সোনালি করে ভেঁজে তুলে নিন। সুইট চিলি সস দিয়ে গরম-গরম পরিবেশন করুন।

দুধ দুলারি
উপকরণ: ভাজা সেমাই ১০০ গ্রাম, তরল দুধ দেড় লিটার, গুঁড়ো দুধ ২ টেবিল চামচ, কন্ডেন্সড মিল্ক আধা টিন (স্বাদমতো দিলে ভালো), এলাচি ৪ থেকে ৫টি, জেলো লাল–সবুজ–হলুদ ১ প্যাকেট করে, ছোট মিষ্টি (লাল লালমোহন ১০টা, ছোট সাদা রসগোল্লা ১০টি), পেস্তা ও বাদামকুচি সিকি কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ।
প্রণালি: প্যাকেটের নির্দেশনা অনুযায়ী আলাদা আলাদা করে তিন রকমের জেলো তৈরি করে কিউব আকারে কেটে নিন। প্যানে ঘি গরম করে তাতে সেমাই দিয়ে লালচে করে ভেজে তুলে রাখুন। অন্য একটা পাত্রে দুধ ও এলাচি জ্বাল দিতে হবে। দুধ মোটামুটি ঘন হয়ে এলে অল্প দুধে গুঁড়ো দুধ গুলিয়ে মিশিয়ে দিন। এরপর এলাচিগুলো তুলে ফেলে ভাজা সেমাই দিয়ে রান্না করুন। এরপর চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে পরিবেশন পাত্রে ছোট মিষ্টি, তিন রঙের জেলো আর পেস্তাবাদামকুঁচি সাজিয়ে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।

মুরগির চিজ কাবাব
উপকরণ: মুরগির বুকের মাংস ৩ টুকরো, পাউরুটি ২ টুকরা, পেঁয়াজ ১টা (বড় আকারের কুঁচি করে কাটা), মোজারেলা চিজ আধা কাপ (কুঁচি), আদাবাটা আধা চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচের এক-তৃতীয়াংশ, মরিচগুঁড়ো আধা চা-চামচ, জিরাগুঁড়ো ১ চা-চামচের এক-তৃতীয়াংশ, গরমমসলার গুঁড়ো সিকি চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১টি (স্বাদমতো), ধনেপাতাকুঁচি ১ চা-চামচ, ডিম ১টি, ব্রেডক্রাম্ব বা বিস্কুটের গুঁড়ো প্রয়োজনমতো, লবণ স্বাদমতো, তেল ভাজার জন্য।
প্রণালি: হাড় ছাড়ানো মুরগির বুকের মাংস মিক্সিতে দিয়ে পেস্ট করে নিন। পাউরুটি দুটি পানিতে ভিজিয়ে ভালো করে পানি নিংড়ে মুরগির মাংসের সঙ্গে রাখুন। এবার একটা প্যানে অল্প তেল দিয়ে একে একে পেঁয়াজ-মরিচকুঁচি, আদা-রসুনবাটা, মরিচ-জিরা-গরমমসলার গুঁড়ো, ধনেপাতা আর স্বাদমতো লবণ দিয়ে ভাজা ভাজা করে নামিয়ে ঠান্ডা করে নিন। মুরগির মাংসের পেস্টের সঙ্গে ভালো করে মেখে নিতে হবে। এরপর দুই হাত পানিতে ভিজিয়ে নিন। মাখানো মুরগির মাংসের মিশ্রণ থেকে বল আকারে তৈরি করে নিয়ে মাঝে খানিকটা গর্ত করে চিজের পুর ভরে দিন। ভালো করে মুখ বন্ধ করে কাবাবের আকার দিয়ে (একটু পাতলা বা চ্যাপ্টা করে বানাতে হবে) ফেটানো ডিমে ডুবিয়ে নিন। এবার ব্রেডক্রাম্বে গড়িয়ে ফ্রিজে ঘণ্টা দুয়েক রেখে দিন। গরম তেলে কম আঁচে দুই দিক সোনালি করে ভেজে কিচেন টাওয়েলে নামিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে গেল মজাদার মুরগির চিজ কাবাব। পরোটা, পোলাওয়ের সঙ্গে ভালো লাগবে। স্ন্যাক্স হিসেবেও এটি অনন্য।

আমের কুলফি
উপকরণ: পূর্ণ ননিযুক্ত দুধ ১ লিটার, গুঁড়ো দুধ ৩ টেবিল চামচ, পাকা আমের ক্বাথ ১ কাপ, চিনি স্বাদমতো, এলাচিগুঁড়া ১ চা-চামচের এক-তৃতীয়াংশ।
প্রণালি: একটা পাত্রে অল্প দুধ আলাদা করে রেখে বাকি দুধ জ্বাল দিন। ঘন হয়ে অর্ধেকে কমে এলে তাতে চিনি, পাকা আমের ক্বাথ আর এলাচিগুঁড়ো মেশাতে হবে। আগে থেকে আলাদা করে রাখা তরল দুধের সঙ্গে গুঁড়ো দুধ মিশিয়ে সেটা আমমিশ্রিত দুধের সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রণটি চুলা থেকে নামিয়ে পুরোপুরি ঠান্ডা করে নিন। মিশ্রণ অবশ্যই বেশ ঘন হতে হবে। ঠান্ডা হয়ে গেলে তা ঘণ্টা দুয়েকের জন্য ফ্রিজে রেখে দিন। তারপর ফ্রিজ থেকে নামিয়ে কুলফি মোল্ডে ঢেলে ঢাকনা এঁটে সাত থেকে আট ঘণ্টার জন্য অথবা সারা রাত ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন।
কুলফি মোটামুটি জমে এলে তাতে মাঝ বরাবর কাঠি ঢুকিয়ে দিয়ে পুরোপুরি জমার জন্য আবারও ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময় পরে ফ্রিজ থেকে বের করে কুলফির মোল্ড দুই হাতে কিছুক্ষণ ডলে তারপর সাবধানে মোল্ড থেকে কুলফি বের করে সঙ্গে সঙ্গেই পরিবেশন করতে হবে। কুলফি মোল্ড না থাকলে পছন্দসই ছোট গ্লাসে বা ডিসপোজিবল গ্লাসেও এই কুলফি তৈরি করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে গ্লাসের মুখ অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে আটকে দিন। একটা ব্যাপার লক্ষ রাখুন, চিনির পরিমাণ যেন কম না হয়; তাতে কুলফি খুব শক্ত হবে।