ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে সহিংসতায় জড়িত ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পশ্চিম তীরে সহিংসতা নিয়ে ইসরায়েলকে কয়েক দফা সতর্ক করার পর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভিসা নিষেধাজ্ঞার এ ঘোষণা দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
গতকাল বুধবার বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। ব্লিংকেন বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি সেটলার বা বসতি স্থাপনকারীদের পরিকল্পিত হামলার বিরুদ্ধে তিনি এ ব্যবস্থা নিয়েছেন। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু হলে পশ্চিম তীরে সহিংসতা বেড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, এ নিষেধাজ্ঞা উগ্রপন্থি কয়েক ডজন ইসরায়েলি ও তাদের পরিবারের কিছু সদস্যের ওপর প্রযোজ্য হবে। তবে কোনো ফিলিস্তিনি অভিযুক্ত হলে তাকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এ পদক্ষেপকে বসতি স্থাপনকারীদের প্রতি ইসরায়েল সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হতাশার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইসরায়েলের ডানপন্থি মন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির ও বেজালেল স্মতরিচ উভয়েই এর আগে পশ্চিম তীরের সহিংসতাকে আড়াল করার চেষ্টার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। এ দুই মন্ত্রী নিজেরাও সেটলার।
গত কয়েক সপ্তাহে পশ্চিম তীরে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা বিবিসিকে জানান, ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা আরও ভূমি দখলের জন্য গাজার যুদ্ধকে ব্যবহার করছে।
১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীর দখলে নেওয়ার পর থেকে অন্তত আড়াইশ সেটেলমেন্ট বা বসতি নির্মাণ করেছে ইসরায়েল, যেখানে ৭ লাখেরও বেশি ইহুদি বসবাস করে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় অংশই এভাবে বসতি নির্মাণকে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় অবৈধ মনে করে। যদিও ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাখ্যাকে গ্রহণ করে না।
জাতিসংঘ বলছে, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর ৩১৪টি হামলার ঘটনা তারা রেকর্ড করেছে। এতে ফিলিস্তিনি হতাহত হওয়া ছাড়াও ফিলিস্তিনি মালিকানাধীন সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে, একই সময়ে ফিলিস্তিনিদের হাতে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর তিন সদস্যসহ চারজন নিহত হয়েছে।
এক বিবৃতিতে ব্লিংকেন বলেন, ‘পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার জন্য যেসব উগ্রপন্থি সেটলার দায়ী তাদের জবাবদিহির আওতায় আনার জন্য ইসরায়েল সরকারকে আমরা জোর দিয়ে বলছি।’