মূলত পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে ইউরোপিয়ান সিনেমার শীর্ষ আবেদনময়ী অভিনেত্রী হিসেবে বিবেচনা করা হয় জিনাকে; পর্দায় তাঁর উপস্থিতি ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে দর্শকের হৃদয়ে। একের পর এক চরিত্রে আলো ছড়িয়ে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়েছিলেন এ অভিনেত্রী। জিনার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন তাঁর দীর্ঘদিনের সহশিল্পী, ইতালির আরেক কিংবদন্তি অভিনেত্রী সোফিয়া লরেন।
কয়েক দশক আগেই অভিনয় ছেড়েছেন জিনা, ইতালির রোমে বাস করছিলেন তিনি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে শরীরে একটি অস্ত্রোপচারের পর কয়েক সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরে বিশ্রামে ছিলেন তিনি। এর মধ্যেই তাঁর মৃত্যুর খবর এল।
চল্লিশের দশকের শেষ ভাগে ইতালির সিনেমায় ক্যারিয়ার শুরুর পর ১৯৫৩ সালে ‘বিট দ্য ডেভিল’ দিয়ে ইংরেজি ভাষার সিনেমায় যাত্রা করেন জিনা। ক্যারিয়ারজুড়ে দুই ডজনের বেশি ইউরোপিয়ান সিনেমায় পাওয়া গেছে তাঁকে। হলিউডের শীর্ষ নায়কদের বিপরীতে কয়েকটি হলিউডি সিনেমায় অভিনয় করলেও ইউরোপিয়ান সিনেমাগুলোর জন্যই স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তিনি।
২০১১ সালে সবশেষ একটি সিনেমায় বিশেষ চরিত্রে পাওয়া গেছে জিনাকে; তারপর আর কোনো সিনেমায় দেখা যায়নি তাঁকে। অভিনয়কে বিদায় জানিয়ে ফটোগ্রাফি ও নির্মাণে মনোযোগ দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর তোলা ছবি নিয়ে একটি বই প্রকাশিত হয়েছে ১৯৭৩ সালে। কিউবা নেতা ফিদেল কাস্ত্রোকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন জিনা; যেটি ১৯৭৫ সালে বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে। ফটোগ্রাফি, নির্মাণের পাশাপাশি রাজনীতিতেও দেখা গেছে তাঁকে।
শৈশবেই বেশ কয়েকটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় দ্যুতি ছড়ানো জিনা ১৮ বছর বয়সে নাম লেখান মঞ্চনাটকে; এরপর তাঁর আবির্ভাব ঘটে সিনেমায়। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকজুড়ে নিয়মিত অভিনয় করেছেন তিনি; এরপর অনিয়মিত হয়ে পড়েন, একসময় অভিনয় ছেড়ে দেন। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে ষাটের দশকে ইতালির সম্মানজনক পুরস্কার ডেভিড ডি ডোনাটেলো পেয়েছেন জিনা। এ ছাড়া বাফটা পুরস্কার, গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারে মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি।
মিকো স্কোফিক নামে এক চিকিৎসকে বিয়ে করেছিলেন জিনা, ১৯৭১ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়।