ইডিএফের সুদ নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি, বাড়ছে ডলার ঋণের সুদহার

0
47
ডলার

রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে ডলারে দেওয়া ঋণের সুদের হার নির্ধারণে পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে সোফরের ওপর ভিত্তি করে এই সুদহার নির্ধারিত হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বৈশ্বিক আর্থিক বাজারের প্রবণতার সঙ্গে মিল রেখে ইডিএফের সুদের হার নির্ধারণের এই পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে।

দেশের সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকগুলো সোফর সুদের হারের সঙ্গে বার্ষিক শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ সুদ যোগ করে ইডিএফ থেকে ঋণ নিতে পারবে। ডিলার ব্যাংকগুলো উৎপাদক বা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে সোফর হারের সঙ্গে ১ দশমিক ৫০ শতাংশ সুদ আদায় করতে পারবে।

সোফর হলো সিকিউরড ওভারনাইট ফিন্যান্সিং রেট, যা ঋণের সুদহার নির্দেশ করে। প্রতি কার্যদিবসে নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ বা মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিউইয়র্ক শাখা স্থানীয় সময় সকাল আটটায় সোফর সুদহার প্রকাশ করে। বৈশ্বিক সুদহার নির্ধারণের মাপকাঠি লাইবর উঠে যাওয়ার পর বাংলাদেশে গত বছরের জুলাই থেকে সোফর ব্যবহার করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এর আগে ইডিএফ থেকে দেওয়া অর্থের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ৩ শতাংশ সুদ আদায় করত। ডিলার ব্যাংকগুলো তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে পণ্য উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের মার্কিন ডলারে ঋণ দিত। এর জন্য ব্যাংকগুলো ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ সুদ নিত।

ইডিএফ থেকে দেওয়া অর্থের সুদ আগে নির্ধারিত ছিল। কিন্তু সোফরের হার যেহেতু সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে পরিবর্তন হয়, তাই রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের ঋণের সুদের হার এখন থেকে আর নির্ধারিত থাকবে না। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ডিলার ব্যাংকগুলো সোফরের হার জেনে তার ওপর অতিরিক্ত সুদ আদায় করবে।

নিউইয়র্ক ফেডের তথ্যানুযায়ী, আজ সোমবার সোফরের হার ছিল ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সে ক্ষেত্রে ইডিএফ থেকে এখন ঋণ নিলে আগের তুলনায় বেশি সুদ দিতে হবে। অর্থাৎ রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের ঋণের সুদের হার কার্যত আগের তুলনায় বেড়ে গেছে এবং সুদের হার বাজারভিত্তিক হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে জানানো হয়েছে, ইডিএফের সুদ নির্ধারণের এই পদ্ধতি অবিলম্বে কার্যকর হবে। তবে ইডিএফ–সংক্রান্ত অন্যান্য নিয়মকানুনে আর কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।

রপ্তানি বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে গঠিত ইডিএফের আকার একসময় ৭ বিলিয়ন বা ৭০০ কোটি ডলারে উন্নীত করা হয়েছিল। তবে পরে তীব্র ডলার–সংকটের মধ্যে এই তহবিলের আকার সীমিত করা হয়। গত বছরের এপ্রিল মাসে ইডিএফ থেকে ঋণ নেওয়ার সীমা কমিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে যে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ দিয়েছে, তার শর্ত হিসেবে রিজার্ভের অর্থের প্রকৃত হিসাব করতে সুপারিশ করে সংস্থাটি। এর অংশ হিসেবে ধীরে ধীরে এই তহবিলের আকার ছোট করার কাজ শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সে লক্ষ্যে রপ্তানিকারকদের ঋণের সীমা সে সময় ৫০ লাখ ডলার করে কমিয়ে দেওয়া হয়। ফলে রিজার্ভের অর্থে গঠিত এই তহবিল থেকে আগের চেয়ে কম ঋণ পাচ্ছেন রপ্তানিকারকেরা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.