সাভারের আশুলিয়ায় বিভিন্ন দাবিতে গত কয়েক দিনের শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে ২২টি তৈরি পোশাক কারখানা অর্নিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বুধবার এই ঘোষণা দেয় সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া আরও অন্তত আটটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আশুলিয়ায় শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১।
শ্রম আইন-২০০৬ এর ১৩ (১) ধারাতে বলা হয়েছে, কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো শাখা বা বিভাগে বে-আইনি ধর্মঘটের কারণে মালিক উক্ত শাখা বা প্রতিষ্ঠান আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে পারবেন; এমন বন্ধের ক্ষেত্রে ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকেরা কোনো মজুরি পাবেন না।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাঠগড়া থেকে জিরাবো এলাকায় অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানার মূল ফটকে অর্নিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাঠগড়া এলাকায় আজমাত গ্রুপের ফটকের নোটিশে বলা হয়েছে ‘গাজীপুর, সাভার ও আশুলিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পোশাক শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিকে কেন্দ্র করে গার্মেন্টস ভাঙচুরসহ হট্টগোল চলছে। বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে আমাদের কারখানায় ভাঙচুর চালানোর চেষ্টা করে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বুধবার (আজ) থেকে আজমাত এ্যাপারেলস লিমিটেড, জেড-থ্রি কম্পোজিট নিটওয়্যার লিমিটেড ও জি-থ্রি ওয়াশিং প্ল্যান্ট লিমিটেড শ্রম আইন-২০০৬ এর ১৩ (১) ধারা অনুসারে অর্নিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো।’
আবদুল্লাহপুর থেকে বাইপাইল পর্যন্ত সড়কের আশুলিয়ার নরসিংহপুর, ইউনিক, জামগড়া, বেরন এলাকার হা-মীম, শারমিন, এনভয় কমপ্লেক্স, হলিউড গার্মেন্টস প্রাইভেট লিমিটেড, স্টারলিং এ্যাপারেলস লিমিটেড, এনভয় কমপ্লেক্সসহ অধিকাংশ কারখানার সামনের ফটকে একই ধারায় নোটিশ টানানো হয়েছে।
কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকেরা নির্দিষ্ট সময়ে কারখানায় উপস্থিত হলেও বন্ধ থাকায় নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে যান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী শ্রমিক বলেন, ‘সকালে আসছি কাজ করতে। হা-মীম, শারমিন গার্মেন্টস বন্ধ দিছে দেখে অনেকে কাজ করে নাই। তাই আমাদের কারখানাও ছুটি দিছে।’
এমন পরিস্থিতিতে এসব এলাকার সড়কে টহল দিচ্ছেন যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। বিভিন্ন কারখানার সামনে মোতায়েত রয়েছে অতিরিক্ত সেনা, পুলিশ ও এপিবিএন সদস্য।
এ বিষয়ে শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, ইতিমধ্যে কারখানা কর্তৃপক্ষ ২২টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। আরও অন্তত আটটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। যাঁরা পারছেন, কারখানা চালাচ্ছেন, যাঁরা পারছেন না, ছুটি দিয়ে দিচ্ছেন। তবে শিল্পাঞ্চলের কোথাও কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।