আলোচনা করে যৌক্তিক সমাধান করতে হবে

0
50
কোটা ইস্যুতে বিশিষ্টজন

আক্রমণাত্মক মনোভাবের পরিবর্তে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের যৌক্তিক সমাধানে সরকারকে এগিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্টজন। গতকাল মঙ্গলবার আন্দোলনে ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে তারা বলেছেন, আন্দোলনরত ছাত্রীদের মারধর খুবই লজ্জার ও পীড়াদায়ক।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, কোটায় নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা ও অনগ্রসরদের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে কিছু থাকতে হবে। পাশাপাশি নারীদের জন্যও একটি অংশ থাকতে হবে। জেলা কোটার কোনো দরকার নেই।

তিনি বলেন, সংঘাত কোনো সমাধান দিতে পারে না। রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ে যারা আছেন, তাদের ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে হবে। আগ্রাসী না হয়ে মায়া-মমতার সঙ্গে বিষয়টির যৌক্তিক সমাধান করতে হবে।

কোটা পদ্ধতি সংস্কারে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানালেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘রাজাকার’ স্লোগানে মর্মাহত শিক্ষাবিদ ও লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। গতকাল সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কোটা সংস্কার করতে হবে– একে আমি সমর্থন করি। তবে আন্দোলনের নামে মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মান করার ব্যাপার কোনোভাবেই সমর্থন করি না।

এর আগে সোমবার ফেসবুকে মুহম্মদ জাফর ইকবালের হাতে লেখা একটি চিরকুট ছড়িয়ে পড়ে। তাতে লেখা, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার বিশ্ববিদ্যালয়, আমার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আমি মনে হয় আর কোনো দিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইব না। ছাত্রছাত্রীদের দেখলেই মনে হবে, এরাই হয়তো সেই ‘রাজাকার’। আর যে কয় দিন বেঁচে আছি, আমি কোনো রাজাকারের মুখ দেখতে চাই না। একটাই তো জীবন, সেই জীবনে আবার কেন নতুন করে রাজাকারদের দেখতে হবে?” চিরকুটের বিষয়ে জাফর ইকবাল বলেন, ‘হ্যাঁ, এটি আমারই লেখা।’

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, কোটা সংস্কার নিয়ে সৃষ্ট সংকট খুব সহজে নিরসন করা যেত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এবং ছাত্রলীগের আক্রমণাত্মক ভূমিকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। কোটা পদ্ধতির সংস্কার জরুরি। বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যৌক্তিক সমাধানে আসা যেত। কিন্তু সেই রাস্তা সরকারই রাখেনি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে সারাদেশে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমেছেন। একযোগে এভাবে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ বিরল। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলায় প্রাণ ঝরছে, এটি কাম্য নয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে এখন সরকারকেই উদ্যোগী হতে হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.