বিভিন্ন দেশ ঘুরে ভ্রমণ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে। সময়-সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ি দূরে কোথাও। অভিনয় ও ব্যক্তিগত কাজে প্রায়ই দেশের বাইরে যাওয়া হয়। এবার শুটিংয়ে গিয়েছি ব্যাংককে। গত ১৭ আগস্ট একটি টিভিসির দৃশ্যধারণ হয়েছে সেখানে। টানা ছয় দিনের এই ট্যুরে তিন দিনই ঘুরেছি। কাজ ও ঘোরাঘুরি মিলিয়ে এবারের ভ্রমণটি ছিল বেশ আনন্দদায়ক। জাপানি অ্যানিমেশন আমার পছন্দের। এ কারণে স্টুডিও গিবলি গিয়েছি। স্টুডিওতে বিখ্যাত সব জাপানি অ্যানিমেশন সিনেমা তৈরি হয়। স্টুডিওতে একটি প্রদর্শনী ছিল। সেখানে সময় কাটিয়েছি। বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ভ্যান গগের প্রদর্শনীতে ঢু মেরেছি। এসবের মধ্যে কখন যে তিন দিন শেষ হলো টেরই পাইনি।
অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, ভিয়েতনামসহ কয়েকটি দেশে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। আমেরিকা গিয়েছি বেশ কয়েকবার। কারণ সেখানে আমার বোন ও মামা থাকেন। অস্ট্রেলিয়ায় আমার ভাই-ভাবি বসবাস করেন। পরিবারের সবাইকে নিয়ে অনেক যাওয়া হয়েছে সেখানে। অনেক বছর পর সবার সঙ্গে দেখা হয়। পরিবারের মানুষের সঙ্গে ঘোরার অনুভূতিই আলাদা। অস্ট্রেলিয়া আমার খুব পছন্দের। ক্যাঙারুর দেশে বারবার যেতে মন চায়। ভ্রমণ নিয়ে বিপাকেও পড়ি মাঝে মাঝে। আমি প্রায়ই ফ্লাইট মিস করি। অনেক ফ্লাইট শেষ মুহূর্তেও ধরেছি। এ নিয়ে অনেক বকা খেয়েছি।
যখন খুব ছোট ছিলাম নাচের একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মা-বাবার সঙ্গে প্রথম ওমানে গিয়েছি। একদমই ছোট ছিলাম বলে সেই সময়ের স্মৃতি অনেকটাই ভুলে গিয়েছি। যখন বুঝতে শিখেছি তখন আমেরিকায় বোনের কাছে গিয়েছি, সেটা ২০১৩ সালে। একে তো দেশের বাইরে, আবার বোন-দুলাভাইয়ের সঙ্গে দেখা হওয়ার দ্বিগুণ আনন্দ ছিল মনে। তখন আমি ও লেভেলের শিক্ষার্থী ছিলাম। এটি এখনও আমার চোখে ভাসে।
বিদেশ গেলে মনটা পড়ে থাকে দেশে। দেশের বাইরে যখনই যাই, প্রথম কয়েক দিন ভালো লাগে। তারপর মনে হয় কখন দেশে ফিরব। প্রিয়জনদের সঙ্গে কখন আবার দেখা হবে। শুধু বিদেশে নয়, দেশের মধ্যে ঘুরতেও ভালো লাগে।
স্বামীর সঙ্গে প্রায়ই ঘুরতে যাওয়া হয়। সম্প্রতি গিয়েছিলাম কক্সবাজারে। শিগগিরই বান্দরবানে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকৃতি আমাকে ভীষণ টানে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত কোনো দেশে গেলে প্রথমেই পাহাড় দেখার চেষ্টা করি। ওই দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানি। দেশটির স্যুভেনির সংগ্রহ করে নানা বিষয় জানি। মায়ের হাতের গরুর মাংস রান্না ও রুটি পেলে আমার আর কিছু লাগে না। বিদেশে গেলে সেটা খুব মিস করি। কোথাও গেলে সে দেশের স্থানীয় খাবারের স্বাদ নেওয়া চাই-ই চাই। তবে খাবারটি হালাল কিনা সেদিকে বিশেষ নজর থাকে। ভ্রমণে শৈশবের দিনগুলোও ছিল মধুর। শৈশবে চট্টগ্রাম অনেক যাওয়া হতো। পেশাগত ব্যস্ততার কারণে এখন যাওয়ার সুযোগ কমই মেলে। সব কাজিন মিলে ঈদের দিনে কোনো একটা ড্রাইভে চলে যেতাম। দিনভর আড্ডা চলত। গ্রামের বাড়ি পটিয়া চলে যেতাম। খুব মিস করি সেইসব দিন।
সাবিলা নূর