আমাদের দেশের বেশির ভাগ পুরুষ সেক্সুয়ালি হতাশাগ্রস্ত: অভিনেত্রী মাহি

0
14
সামিরা খান মাহি

অভিনেত্রী সামিরা খান মাহির নতুন নাটক ‘বকুল ফুল’ ইউটিউবে প্রকাশ পেয়েছে। কাজ করছেন নতুন ধারাবাহিকের। সম্প্রতি তাঁর কয়েকটি ছবি ফেসবুকে প্রকাশের পর ট্রলের শিকার হন, অনেকেই তাঁকে পর্নোতারকা মিয়া খলিফার সঙ্গে তুলনা করে কটাক্ষ করেন। পরে ফেসবুকে এর জবাবও দেন অভিনেত্রী। এসব নানা প্রসঙ্গে গতকাল দুপুরে তাঁর সঙ্গে কথা বললেন মনজুর কাদের

প্রশ্নঃএমন তুলনার ঘটনা জানার পরপরই আপনার প্রতিক্রিয়া কীভাবে প্রকাশ পায়?

সামিরা খান মাহি : যারা এই ধরনের সমালোচনা করে, এদের নিয়ে আর কিছু বলার নেই। আমি জানি না, এই সিগনেচারটা কে তৈরি করেছে? চশমা পরলেই আমাকে অন্য কারও মতো লাগতে হবে, এমন তো কথা না। আসলে আমার কাছে মনে হয়েছে, আমাদের দেশের বেশির ভাগ পুরুষ সেক্সুয়ালি হতাশাগ্রস্ত। হতাশাগ্রস্ত বলেই রিডিংগ্লাস পরা এ রকম ছবি দেখে তাদের কাছে মনে হয়েছে, এটা ওই রকম। এ ছাড়া আমি কোনো কারণ খুঁজে পাই না। একজন আর্টিস্ট অনেক ধরনের ছবি আপলোড করতে পারে। সেটা নিয়ে মানুষ নানান মন্তব্য করতেই পারে। কিন্তু এই ধরনের স্টুপিডিটি, অসভ্যতা তো মানা যায় না। এর আগে আমার বর্ণ নিয়ে, পরনের কাপড় নিয়েও অকারণ সমালোচনা, বিতর্ক তৈরি করল! এবার একটা গ্লাস, রিডিং গ্লাস! সেক্সুয়ালি হতাশাগ্রস্ত মানুষ ছাড়া এই ধরনের চিন্তা সুস্থ মানুষের মাথায় আসার কথা নয়। ব্যাপারটা হচ্ছে, আমি তো আসলে ওইটা বুঝাইনি—যেমন অনেকে বলছে, মিয়া খলিফা, মিয়া খলিফা। সে অন্য রকম, তার একটা পেশা আছে, তার জীবন আলাদা—সে জীবনে সে কী করবে, না করবে, এটা একান্ত তার সিদ্ধান্ত। সে আবার থাকে অন্য একটা দেশে। তাকে নিয়ে তো আমাদের মাথাব্যথা হওয়ার কিছু নেই। সে কোনোভাবেই আমাদের কাছের কেউ না। আমাকে ওর সঙ্গে তুলনা করছে, সেটা সমস্যা না, কিন্তু তারা তুলনা করছে নেগেটিভ উপায়ে, এটাতেই আমার আপত্তি।

একজন আর্টিস্ট অনেক ধরনের ছবি আপলোড করতে পারে। সেটা নিয়ে মানুষ নিয়ে মন্তব্য করতেই পারে। কিন্তু এই ধরনের স্টুপিডিটি, অসভ্যতা তো মানা যায় না। এর আগে আমার বর্ণ নিয়ে, পরনের কাপড় নিয়েও অকারণ সমালোচনা, বিতর্ক তৈরি করল!

প্রশ্নঃ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য পড়লে কি উত্তর দেন?

সামিরা খান মাহি : আমি কখনোই উত্তর দিই না। কিন্তু এবার বিষয়টা এত হাস্যকর ও বেশি বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে, তাই ভাবলাম কথা বলি।

সামিরা খান মাহি
সামিরা খান মাহিছবি : সামিরা মাহির সৌজন্যে

প্রশ্নঃ অনেকে এমনও বলেন, ট্রলে প্রচারণা বাড়ে, ক্যারিয়ারে সুবিধা দেয়…

সামিরা খান মাহি : আমি কখনোই এ ধরনের নেতিবাচক, সস্তা ও অরুচিকর প্রচারণা চাই না। কারণ ছাড়াই যারা উল্টাপাল্টা মন্তব্য করে বেড়ায়, তারা পুরোপুরি অসুস্থ, তাদের সঠিক চিকিৎসা দরকার।

আমি জানি না তারা এসব করে কী পায়, কেন তারা এসব করে! এটা ভুল, অন্যায় এবং অপরাধ। আর নারীদের তো যুগের পর যুগ দাবায়ে রাখার চেষ্টা চলে।

সামিরা খান মাহি

প্রশ্নঃ আপনি কি মনে করেন, গ্ল্যামারাস ইমেজের জন্য নারী শিল্পীরা বেশি সমালোচনার শিকার হন?

সামিরা খান মাহি : এটা যে শুধু আমার সঙ্গে হচ্ছে তা কিন্তু না। এটাও ঠিক, পুরুষ শিল্পীদের তুলনায় নারীরা বেশি বুলিংয়ের শিকার হয়। কোনো মেয়েমানুষ সেভাবে পাবেন না, যারা পুরুষদের মতো নোংরা ভাষায় মন্তব্য করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষেরাই বাজে সব মন্তব্য করে। তারা সব সময় নারীদের নেতিবাচক ভাবে। তারা আসলে হতাশাগ্রস্ত পুরুষ, আমি জানি না তারা এসব করে কী পায়, কেন তারা এসব করে! এটা ভুল, অন্যায় এবং অপরাধ। আর নারীদের তো যুগের পর যুগ দাবায়ে রাখার চেষ্টা চলে। এটা তো খুব স্বাভাবিক, ছেলেদের নিয়ে যা কথা হবে, মেয়েদের নিয়ে হবে না। স্বামী–স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়ে গেছে, কোনো ধরনের কিছু জানা ছাড়াই শুরুতেই বলে বসবে, স্ত্রীর দোষ ছিল। আমাদের সামাজিক কাঠামোটাই এ রকম। বছরের পর বছর এসব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

সামিরা খান মাহি
সামিরা খান মাহিছবি : সামিরা মাহির সৌজন্যে
প্রশ্নঃ এসব কি আপনাকে হতাশ করে?

সামিরা খান মাহি : অনেক সময় অবচেতন মনে উড়িয়ে দিই। কিন্তু কিছু না কিছু প্রায় সময় থেকেই যায়। এই ধরনের নোংরা কথা বলা মানুষদের প্রতিরোধে আমি বা আমরা কীই–বা করতে পারি। একবার একটা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ডিফারেন্ট চুল পরে গিয়েছিলাম, সেটাও নিয়ে তুমুল বিতর্কের শিকার হয়েছি। তাই যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি।

আমি কখনোই এ ধরনের নেতিবাচক, সস্তা ও অরুচিকর প্রচারণা চাই না। কারণ ছাড়াই যারা উল্টাপাল্টা মন্তব্য করে বেড়ায়, তারা পুরোপুরি অসুস্থ, তাদের সঠিক চিকিৎসা দরকার।

সামিরা খান মাহি

প্রশ্নঃ এখন কাজের খবর বলুন।

সামিরা খান মাহি : সম্প্রতি ‘বকুল ফুল’ নামে আমার নাটক মুক্তি পেয়েছে। আমার ভীষণ পছন্দের কাজ। যারাই দেখেছে, প্রশংসা করেছে, ভিন্ন ধরনের চরিত্র এবং গল্পেরও অন্য রকম উপস্থাপন। এতে আমি মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের চরিত্রে অভিনয় করেছি। এই চরিত্রের জন্য আমি অনেক পরিশ্রম করেছি। নাটক প্রচারের পর মনে হয়েছে, কষ্ট সার্থক।

প্রশ্নঃ তার মানে আপনি কি গ্ল্যামারার্স চরিত্রের বাইরেও ব্যতিক্রম চরিত্রে অভিনয় করতে চান?

সামিরা খান মাহি : আমি একজন আর্টিস্ট, সব ধরনের চরিত্রে নিজেকে উপস্থাপন করতে চাই। আমি তো মডেলিংয়ে ছিলাম, মডেলরা হচ্ছেন হ্যাঙ্গার। তাদের যে কাপড় পরানো হবে, সেটাতেই মানিয়ে যায়। অভিনয়শিল্পীও সে রকম হবে, যে চরিত্র দেওয়া হবে, সেটা ফুটিয়ে তুলবে। কারণ, একই রকম চরিত্রে বারবার অভিনয় করলে তো আমার বৈচিত্র্যও থাকল না। আমি তো এক্সপেরিমেন্টাল কাজ করতে চাই, যদিও স্ক্রিপ্ট খুব বেশি মেলে না। আবার এক্সপেরিমেন্টাল কাজ করলে মানুষ দেখবেও কি না, এটাও একটা বিষয় কাজ করে। আজকাল সবাই তো ট্রেন্ডি গল্পে কাজ করতে চায়, নিরাপদে বেরিয়ে আসতে চায়।

সামিরা খান মাহি
সামিরা খান মাহি, ছবি : সামিরা মাহির সৌজন্যে
প্রশ্নঃ কাজের জন্য কি কখনো নিজের ব্যক্তিগত কমফোর্ট জোন ছাড়তে হয়েছে?

সামিরা খান মাহি : অনেকবার ছাড়তে হয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে আমরা যে রকম কমফোর্ট জোন চাই, পেশাগত জীবনে মোটেও তা পাওয়া যায় না। খুবই ডিফিকাল্ট। এই অঙ্গনে কাজ করতে হলে ব্যক্তিগত জীবনের কমফোর্ট জোনের কথা ভুলে যেতে হবে। ভালো কাজের অংশ হতে হলেই এটা করতে হবে। সব অভিনয়শিল্পীকে এমন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।

প্রশ্নঃ ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বলা যায় আপনি একরকম খোলামেলা। প্রেম নিয়ে খোলামেলা থাকার পেছনে আপনার যুক্তি কী?

সামিরা খান মাহি : আমি স্বচ্ছতা পছন্দ করি। আমার মনে হয়, সম্পর্কের ব্যাপারে যদি খোলামেলা থাকি, অন্য কোনো মানুষ আমাকে অন্যভাবে দেখার কোনো সুযোগ পাবে না। অবশ্যই অভিনয়শিল্পী হিসেবে মানুষ আমাকে ভালোবাসে, আমি তাদের স্বপ্নের মানুষ—তা আমার জন্য ভালো লাগার। কিন্তু যারা বেশির ভাগ সময় আমার চারপাশে ঘুরঘুর করে, সুযোগ নিতে চায়—তারা জানুক আমারও একজন আছে। সম্পর্কের বিষয়ে খোলামেলা থাকার এটাই একটা প্রধান কারণ।

আমার মনে হয়, সম্পর্কের ব্যাপারে যদি খোলামেলা থাকি, অন্য কোনো মানুষ আমাকে অন্যভাবে দেখার কোনো সুযোগ পাবে না। অবশ্যই অভিনয়শিল্পী হিসেবে মানুষ আমাকে ভালোবাসে, আমি তাদের স্বপ্নের মানুষ—তা আমার জন্য ভালো লাগার।

সামিরা খান মাহি

সামিরা খান মাহি
সামিরা খান মাহি, ছবি : সামিরা মাহির সৌজন্যে

প্রশ্নঃ গণমাধ্যমের কাছে প্রেম বা সম্পর্কের কথা বলে কি কখনো বিপদে পড়েছেন?

সামিরা খান মাহি : একবার হয়েছিল। মন খারাপ করে একবার স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, সবাই ভেবেছিল আমার বুঝি ব্রেকআপ হয়ে গেছে। (হাসি) সবাই নিজের মতো করে গল্প সাজায়। তাই প্রেমিকের সঙ্গে এখন ছবি আপলোড করি না। প্রেমিক যদি করে, সেখানে গিয়ে মানুষ নানান মন্তব্য করে, বেশি হলে এক বছর টিকবে। হ্যাঁ দেখব নে, কয় দিন এই প্রেম টেকে। তবে সবাইকে বলতে চাই, আমরা ঠিকঠাক আছি।

প্রশ্নঃবিয়ে নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে?

সামিরা খান মাহি : আশা করছি, আমাদের বিয়েটা হবে। আমার প্রেমিকের যখন মনে হবে, সে এখন স্ট্যাবল, তখন বিয়ে করব। আমরা এরই মধ্যে পরিকল্পনা করেছি, বছর তিনেকের মধ্যে বিয়ে করার। কারণ, সে একটা নতুন ব্যবসা শুরু করেছে, তাই একটু সময় নেওয়া দরকার। আসলে সবাই চায় যে তার প্রিয় নারী ভালো থাকুক। আমাদের সমাজে একটা প্রচলিত প্রথা হচ্ছে, ছেলেদের ওপর দায়িত্বটা বেশি। তবে আমি যদিও বলি, আমি স্বাবলম্বী। আমার দায়িত্ব তোমার নেওয়ার কিছু নেই। কিন্তু বিষয়টা এ রকম হয়ে গেছে, পুরুষের দায়িত্বটা নেওয়া উচিত, হয়তো সে জায়গা থেকে ও (প্রেমিক) ভাবে আরকি।

প্রশ্নঃ আপনি কি মনে করেন, একজন শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবন দর্শকের জানার অধিকার আছে?

সামিরা খান মাহি : এটা যেকোনো শিল্পীর একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আমার মনে হয় না যে, ব্যক্তিগত জীবনের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলো আমার ভক্তদের জানার প্রয়োজন আছে। আমি মানুষকে জানাতে চাই, আমার জীবনে একজন আছে— এটা একান্তই নিজের পছন্দ। তবে আমি যতটুকু জানাতে চাই, ঠিক ততটুকই জানাই, এর বাইরে সবকিছু আমার।

সামিরা খান মাহি
সামিরা খান মাহিছবি : সামিরা মাহির সৌজন্যে

প্রশ্নঃসম্পর্কের সময় কি কখনো পেশাগত সিদ্ধান্তে প্রভাব পড়েছে?

সামিরা খান মাহি : আজ পর্যন্ত এটা কখনোই হয়নি। আমার ভালোবাসার মানুষ আমার কাজে যেমন খুব উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জোগায়, আমিও তার কাজে সব সময় পাশে থাকি। অনুপ্রেরণা দিই।

প্রশ্নঃআপনাকে যদি ‘বোল্ড’ বলা হয়, সেটা কি আপনি ইতিবাচকভাবে নেন, নাকি নেতিবাচকভাবে?

সামিরা খান মাহি : মাঝেমধ্যে কমপ্লিমেন্ট হিসেবে নিই। কিন্তু আমি দেখেছি, এত বেশি নেগেটিভ কথা বলে মানুষ আমাকে নিয়ে, মনে হয়—এটা মোটেও কমপ্লিমেন্ট নয়, খোঁচা দেওয়ার জন্য বলে। তাই মিশ্র অনুভূতি হয়। আর সত্যি বলতে এখন আমি এসবে কমই মাথা ঘামাই।

প্রশ্নঃ সোশ্যাল মিডিয়ার লাইক, শেয়ার, কমেন্ট—এসব কি আপনার আত্মবিশ্বাসে প্রভাব ফেলে?

সামিরা খান মাহি : এসব আমার আত্মবিশ্বাসে মোটেও প্রভাব ফেলে না। কারণ, আমি আমার জীবনের সেরা সময়, খারাপ সময় দুটোই দেখেছি। যে পেশায় আমি এখন আছি, তাই এটি এখন আমার কাছে ক্যারিয়ারের প্রকৃতি ও অংশ মনে হয়। এটা ভেবেছি, অনেক উন্নতি হলে একটা সময় অবনতিও আসবে। ওই পরিস্থিতির জন্য সব সময় প্রস্তুতি থাকাও উচিত।

প্রশ্নঃনিজেকে গ্ল্যামারাস রাখার পেছনে কতটা প্রস্তুতি ও পরিশ্রম থাকে?

সামিরা খান মাহি : আমি সব সময় আপ–টু–ডেট থাকতে চাই। সত্যি বলতে, সব সময় থাকা যায়ও না। শুটিং যখন থাকে, এত ভিন্নরকম চরিত্রে থাকি, মাঝেমধ্যে এ রকম হয় যে শুটিং করার পর নিজে কিছু করতে চাই, তখন সেটা কনফ্লিক্ট করে। চাইলে সব সময় গ্লামারাসভাবে থাকতে পারি না। ব্যক্তিগত জীবনে যখন বাইরে কোথাও যাই, মেকআপও করি না। মনে হয়, থাক, অনেক হয়েছে, এবার মেকআপ ছাড়াই চলি।

সামিরা খান মাহি
সামিরা খান মাহিছবি : সামিরা মাহির সৌজন্যে

প্রশ্নঃভাবমূর্তি ধরে রাখার চাপ কি কখনো বিরক্তিকর লাগে?

সামিরা খান মাহি : আসলে সব সময় ওভাবে থাকতে আমার ভালো লাগে না। আমি বাস্তব জীবনে যখন থাকি, আমার পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সার্কেল—অনেক চেষ্টা করি, যত মিনিমাম থাকতে পারি। কমফোর্টেবল থাকতে পারি। সব সময় মোটেও শোবিজের সেই বেশভূষা ধরে থাকতে পারব না। আমাকে এ রকম থাকতে হবে, সে রকম থাকতে হবে—এই সেই, আমার জন্য এটা কষ্টসাধ্য।

প্রশ্নঃ কোন ঘরানার চরিত্রে নিজেকে সবচেয়ে বেশি দেখতে চান—রোমান্টিক, অ্যাকশন, থ্রিলার নাকি কমেডি?

সামিরা খান মাহি : সব মিলিয়ে আমার অভিনয়ের জীবন ৪ বছরের। সব সময় আমি চেয়েছি, জীবনে এমন কিছু চরিত্র হোক, যেটা সিগনেচার হয়ে থাকবে। অনেক বছর পরও মানুষ আমার সেই চরিত্র নিয়ে কথা বলবে। সারা জীবনে যদি এ রকম একটা চরিত্র হয়, তা–ই হোক। মানুষ যাতে ওই একটা চরিত্রের জন্য আমাকে মনে রাখে। এখনো অবশ্য তেমন চরিত্রের দেখা পাইনি। নাটকে দেখা পেলেও দেখা গেছে, স্ক্রিপ্টে তা ফুটে ওঠেনি। নাটকে আসলে সে রকম চরিত্র করলেও মানুষ বেশি দিন মনেও রাখে না। এ ক্ষেত্রে সিনেমার শক্তিটা সবচেয়ে বেশি। সিনেমার একটা ভালো চরিত্র আজীবনের জন্য অভিনয়শিল্পীর অর্জন হয়। একজন শিল্পীর একটা সিনেমা যখন অনেক জনপ্রিয় হয়, এরপর কয়েক বছরও যদি সেই শিল্পী কাজ না করে, তার ওই চরিত্রটা ঠিকই মানুষ মনে রাখে। সিনেমায় অভিনয় ছাড়া আমার সেই আশা বা স্বপ্নপূরণ হবে না।

সামিরা খান মাহি
সামিরা খান মাহিছবি: অভিনেত্রীর ফেসবুক
প্রশ্নঃ স্বপ্ন বা আশা পূরণে উদ্যোগ কবে নেবেন?

সামিরা খান মাহি : জানি না, কখনো যদি সুযোগ পাই। আমি যদি একটা স্ক্রিপ্ট পাই, তাহলে হয়তো  সিদ্ধান্ত নিতে পারব। প্রস্তুতিও নিতে পারব।

প্রশ্নঃ জীবন ও ক্যারিয়ার নিয়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় শিক্ষা কী পেয়েছেন?

সামিরা খান মাহি : কী শিখে আমার মধ্যে কী পরিবর্তন হয়েছে, সেটা বলতে পারব। আমি এমনিতে খুব নরম মনের মানুষ। আগে অনেক কিছু খারাপ লাগলেও বলতাম না। কিন্তু এখন আমি স্ট্রেট ফরোয়ার্ড। একরকম জোরপূর্বক আমি এমনটা হয়েছি। সময় আমাকে এটা হতে শিখিয়েছে। আমি যদি স্ট্রেট ফরোয়ার্ড না হই, একটা সময় বড় সমস্যা হয়। একটা সময় সেটার বিস্ফোরণ ক্ষতিকর হয়। তাই আমার জীবন ও ক্যারিয়ার থেকে সবচেয়ে বড় যে শিক্ষা পেয়েছি, সব সময় যেকোনো সমস্যায় ইউ নিড টু ডিসকাস। সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে। ইতিবাচকভাবে সেটার আলোচনা করতে হবে।

সামিরা খান মাহি ও সাদাত শাফি নাবিল
সামিরা খান মাহি ও সাদাত শাফি নাবিলছবি : সামিরা মাহির সৌজন্যে

প্রশ্নঃ কঠিন সময়ে আপনাকে সবচেয়ে বেশি শক্তি কে বা কী দিয়েছে?

সামিরা খান মাহি : আমার বন্ধুরা। বন্ধুদের নিয়ে আমার একটা গ্রুপ আছে। যখন খুবই হতাশ হই, তখন তারা আমাকে সাহস দেয়। আমাকে এমনিতে দেখে এক্সট্রোভার্ট মনে হয়, কিন্তু আমার মনের সব কথা আমি ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছাড়া কাউকে বলতে পারি না। বলিও না। তারা আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করে, সাহস দেয়, শক্তি জোগায়। আমার ৪–৫ জনের বন্ধু আছে। এর মধ্যে মিথিলা (তানজিয়া জামান মিথিলা) আপু, তমা (তমা মির্জা) আপু এখন আমার অনেক ভালো বন্ধু। এর বাইরে আমার আরও কয়েকজন বন্ধু আছে।

প্রশ্নঃ সমালোচনা আর প্রশংসার মধ্যে কোনটা আপনাকে বেশি প্রেরণা দেয়?

সামিরা খান মাহি : দুটোই। গঠনমূলক সমালোচনা আমাকে অনেক কিছু শিখতে সাহায্য করে। আর প্রশংসা আমাকে আরও ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা জোগায়।

সামিরা খান মাহি
সামিরা খান মাহি, ছবি : সামিরা মাহির সৌজন্যে

প্রশ্নঃ নতুন কাজ শুরু করেছেন?

সামিরা খান মাহি : এখন কিন্তু কাজ তুলনামূলক কম। ‘খুশবু’ নামে একটা ধারাবাহিকের শুটিং শুরু করেছি। এটাতে আমার চরিত্রের দৈর্ঘ্য খুব বেশি না, তবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অভিনয়জীবনের একদম শুরুতে তরুণ তুর্কি নামে একটা ধারাবাহিকে অভিনয় করেছিলাম, এরপর আর করা হয়নি। এবার আবার শুরু করছি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.