আবু সাঈদ হত্যা: বাধ্যতামূলক অবসরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন দুই কর্মকর্তা

0
62
মো.মনিরুজ্জামান ও মো. আবদুল বাতেন; পুলিশের এই দুই কর্মকর্তা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ও রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক ছিলেন। তাঁরা এখন আর পুলিশের চাকরিতে নেই, ছবি: সংগৃহীত

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ওই সময় দায়িত্বে থাকা রংপুরের ঊর্ধ্বতন দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।

এই দুই কর্মকর্তা হলেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো.মনিরুজ্জামান এবং রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক মো. আবদুল বাতেন।

আজ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এই দুই কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর কথা জানানো হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ শাখা–১–এর সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রজ্ঞাপন দুটিতে স্বাক্ষর করেন।

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ ছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। শিক্ষার্থীদের মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্কের মোড়ে এলে তিনি ছিলেন সবার আগে। গত ১৬ জুলাই একপর্যায়ে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়তে শুরু করলেও সাঈদ দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকেন
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ ছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। শিক্ষার্থীদের মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্কের মোড়ে এলে তিনি ছিলেন সবার আগে। গত ১৬ জুলাই একপর্যায়ে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়তে শুরু করলেও সাঈদ দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকেন, ছবি: যমুনা টেলিভিশনের ভিডিও চিত্র থেকে নেওয়া

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে অবসরে পাঠানোর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের সদস্য ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানকে সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন)–এর ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হলো। জনস্বার্থে এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।

আর রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি মো. আবদুল বাতেনকেও ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন)–এর ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হলো বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছিল, সেই সময় গত ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২২ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র–জনতার বিক্ষোভের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।

আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় করা মামলায় প্রথমে ১৬ বছরের এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে নানামুখী চাপে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন ও পুলিশ কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.