আবারও স্পিকার হলেন শিরীন শারমিন চৌধুরী

0
120
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও শিরীন শারমিন চৌধুরী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে শিরীন শারমিন চৌধুরীকে স্পিকার হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকালে সংসদ শুরু হওয়ার পর ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক হাউজে তা উত্থাপন করেন। পরে সর্বসম্মতিক্রমে বিষয়টি পাস। এরপরে সংসদে বিরতি ঘোষণা করা হয়।

এরপর নতুন এমপিদের উদ্দেশে প্রথমবারের মতো ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরে তার ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেবেন এমপিরা।

এরআগে, দুপুর থেকেই সংসদ ভবনে নতুন সংসদ সদস্যদের একের পর এক গাড়িবহর ঢুকতে দেখা যায়। অনেকেই তাদের প্রিয় নেতাকে বরণ করতে ভিড় জমিয়েছেন এখানে। কেউ কেউ আবার গাড়ি থামিয়ে তুলছেন সেলফি। কেউ এসেছেন ফুলের তোড়া সঙ্গে নিয়ে। হাসিমুখে হাত নাড়িয়ে ঢুকছেন সংসদ সদস্যরা। এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে সংসদ ভবন এলাকায়।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৬ আসন থেকে নির্বাচিত হন শিরীন শারমিন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে আবারও স্পিকার নির্বাচনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্পিকার ছাড়াও ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু আবারও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হচ্ছেন।

পেশায় আইনজীবী শিরীন শারমিনের জন্ম ১৯৬৬ সালে ৬ অক্টোবর ঢাকায়। তার বাবা সাবেক সচিব রফিকউল্লাহ চৌধুরী ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সচিব; মা অধ্যাপক নাইয়ার সুলতানা সরকারি বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য ছিলেন।

শিরীন শারমিন চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৯ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এলএলবি (অনার্স) এবং ১৯৯০ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে ২০০০ সালে যুক্তরাজ্যের এসেক্স ইউনিভার্সিটি থেকে ‘দ্যা রাইট টু লাইফ’ অর্থাৎ, মানুষের জীবনের অধিকার, মানবাধিকার ও সাংবিধানিক আইন বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে জনস্বার্থ, মানবাধিকার ও সংবিধান বিষয়ক বিভিন্ন মামলা পরিচালনা করেছেন। ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা বিভিন্ন মামলার প্যানেল আইনজীবী ছিলেন।

২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শিরীন শারমিন চৌধুরী নবম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তৎকালীন স্পিকার আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলে ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল দেশের প্রথম নারী স্পিকার নির্বাচিত হন শিরীন শারমিন। এরপর থেকে টানা তিনি এই দায়িত্বে আছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হয়েছে সোমবার (২৯ জানুয়ারি)। বিদায়ী এ সংসদের যাত্রা শুরু হয় ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি, শেষ হয় ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর। এতে কার্যদিবস কম হলেও সর্বোচ্চ সংখ্যক ২৫টি অধিবেশন বসেছে।

সংসদ নেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর উপনেতা মতিয়া চৌধুরী। বিরোধী দলীয় নেতা হয়েছেন জাতীয় পার্টির জি এম কাদের ও উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যার মধ্যে ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২২৩টিতে জয় পায় আওয়ামী লীগ। এছাড়া স্বতন্ত্রদের মধ্যে বিজয়ী হন ৬২ জন, যাদের মধ্যে ৫৯ জনই আওয়ামী লীগ নেতা। আর জাতীয় পার্টি জয় পেয়েছে ১১টি আসনে। দুটিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এবং একটিতে জয় পেয়েছে কল্যাণ পার্টি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.