ভারতে শুল্ক ৭ টাকা, দেশে বাড়ল ১৫ টাকা

0
107
পেঁয়াজ

পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারত আজ সোমবার শুল্ক আদায় শুরু করেছে। প্রতি কেজিতে গড়ে শুল্ক আদায় করা হচ্ছে সাত টাকা। এ হিসাবে দেশেও প্রতি কেজিতে সাত টাকা বাড়ার কথা আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম। তবে শুল্ক আরোপের খবরে গত দুই দিনে বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা।

গত শনিবার ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানায়। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর এই শুল্ক বহাল রাখা হবে বলে ভারত সরকারের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়। এই খবরে আমদানিকারক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। এক দিনের ব্যবধানে খুচরায় ৫৫ টাকার ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়।

দেশের নয়টি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানির তথ্য পাওয়া গেছে। এসব স্থলবন্দরের তথ্যে দেখা যায়, ভারত থেকে গড়ে প্রতি কেজি ১৬ সেন্টে বা ১৭ টাকায় ঋণপত্র খুলে পেঁয়াজ আমদানি করছেন ব্যবসায়ীরা। এর অর্থ, ভারতের ব্যবসায়ীরা গড়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৬ সেন্টে রপ্তানি করছেন। আজ সোমবার ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই রপ্তানিমূল্যের ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই শুল্ক আদায় করে ভারতীয় অংশ থেকে পণ্য ছাড় শুরু হয়।

জানতে চাইলে হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ বলেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ প্রথমে বাজারমূল্যের ওপর শুল্ক আরোপ করতে চেয়েছিল। তবে সেখানকার ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে রপ্তানিমূল্যের ওপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেজিতে সাত টাকার মতো শুল্ক আদায় করছে তারা। তবে চালানভেদে কেজিপ্রতি এই শুল্ক কমবেশি হতে পারে।

ভারত শুল্ক আদায় শুরুর আগেই অবশ্য দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। রোববার আড়ত, পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দামে অস্থিরতা শুরু হয়। এর প্রভাব পড়ে খুচরা বাজারে। গত দুই দিনে খুচরায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও এই পেঁয়াজের দাম উঠেছে প্রতি কেজি ৭৫ টাকা।

জানতে চাইলে চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে হামিদুল্লা মিঞা মার্কেট কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস  বলেন, ভারতের শুল্ক আরোপের খবরে সাময়িক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল বাজারে। এখন যেহেতু তারা ঋণপত্রের মূল্যের ওপর শুল্ক আদায় শুরু করেছে, তাতে এই  অস্থিরতা কমবে বলে আশা করছেন। পাইকারি বাজারেও এখন বেচাকেনা কমেছে।

দেশে চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজ উৎপাদন কম। এ কারণে প্রতিবছর চাহিদার অন্তত ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। আবার দেশের উৎপাদন মৌসুমে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কম থাকে। এ কারণে কৃষকদের সুরক্ষা দিতে গত জুন পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র (আইপি) দেওয়া বন্ধ রেখেছিল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। তবে মে মাসের শেষ দিকে পেঁয়াজের দাম দফায় দফায় বেড়ে ৪০-৪৫ থেকে ৮০-৯০ টাকা হয়। বাজার ঠিক রাখতে শেষ পর্যন্ত আমদানির অনুমতি দেয় সরকার।

রাজস্ব বোর্ডের তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে সোয়া দুই লাখ টন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.