আবারও বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী

৪ ঘণ্টায় ২ হাজার নতুন রোগী, মৃত্যু ৪ জনের

0
774
ঈদের ছুটিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমলেও গত দুই দিন ধরে আবার তা বেড়েছে

ঈদের ছুটিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমলেও গত দুই দিন ধরে আবার তা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২ হাজার নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে।

তবে ঢাকায় রোগী কিছুটা কম। ঈদের ছুটির কয়েক দিন আগে থেকে গ্রামে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বৃহস্পতিবারও ঢাকার বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ছিল। বিভাগের মধ্যে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় সর্বোচ্চ সংখ্যক এবং সিলেট বিভাগে সর্বনিম্ন সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে আরও চারজনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সারাদেশে ডেঙ্গুতে নতুন করে ১ হাজার ৯২৯ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৮১১ জন এবং বিভিন্ন বিভাগ, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে ১ হাজার ১১৮ জন। এ নিয়ে ৪৮ হাজার ২৮০ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চলতি বছর। তাদের মধ্যে ৪০ হাজার ৬৭০ জন চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়েছেন। এখনও ৭ হাজার ৫৭০ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের।

আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেলে ৬০১ জন, মিটফোর্ডে ৩৪৮ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১১১ জন, সোহরাওয়ার্দীতে ৪৩২ জন, বিএসএমএমইউতে ১৩৬ জন, পুলিশ হাসপাতালে ৭৭ জন, মুগদায় ৩৬৫ জন, বিজিবি হাসপাতালে ২৪ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১২৩ জন, কুর্মিটোলায় ২৬৩ জন, বাংলাদেশ মেডিকেলে ৬৬ জন, হলি ফ্যামিলিতে ১৩৭ জন, বারডেমে ৪১ জন, ইবনে সিনায় ৬৩ জন, স্কয়ারে ৭০ জন, কমফোর্টে ৭ জন, শমরিতায় ৩৩ জন, ডেল্‌টা মেডিকেলে ৩৮ জন, ল্যাবএইডে ৩৬ জন, সেন্ট্রালে ৯৪ জন, হাই কেয়ারে ১৪ জন,হেলথ অ্যান্ড হোপে ৬ জন, গ্রীন লাইফে ৩০ জন, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ১২১ জন, ইউনাইটেডে ৪৮ জন, খিদমায় ৪৭ জন, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেলে ৪ জন, সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলে ৪৭ জন, এ্যাপোলোতে ৬৩ জন, আদ্‌-দ্বীনে ৮৭ জন, ইউনিভার্সেল মেডিকেলে ৬৮ জন, বিআরবি হাসপাতালে ৬ জন, আজগর আলীতে ৪২ জন, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ২৮ জন, উত্তরা আধুনিকে ৮০ জন, সালাউদ্দিনে ৪৭ জন, পপুলারে ২০ জন, উত্তরা ক্রিসেন্টে ৩৪ জন, আনোয়ার খান মডার্নে ৪৫ জন, কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে ৮ জনসহ ৩ হাজার ৯১০ রোগী ভর্তি আছেন।

এ ছাড়া রাজধানীর বাইরে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ৭৭৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৭৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৬১ জন, খুলনা বিভাগে ৬৬৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৯৯ জন, রংপুর বিভাগে ২৮১ জন, বরিশাল বিভাগে ৫৬৩ জন, সিলেট বিভাগে ৪০ জনসহ মোট ৪ হাজার ১৬২ জন চিকিৎসাধীন।

বৃহস্পতিবার ঢাকা শিশু হাসপাতালে রাজ চৌধুরী নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। তার বাবা ডা. নির্মল কান্তি চৌধুরী রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার। ঢাকা শিশু হাসপাতালের এপিমেডিওলজিস্ট কিংকর ঘোষ জানান, বুধবার দুপুরে রাজকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পরপরই তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে আক্রান্ত ছিল।

মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের বড়াইলবাড়ী গ্রামে তপন কুমার মণ্ডল নামে এক স্বাস্থ্য সহকারীর মৃত্যু হয়েছে। মাদারীপুর সদরে কর্মরত ছিলেন তিনি। সরকারি আদেশে ১৬ দিন আগে তাকে ঢাকায় বদলি করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেখানে দায়িত্বরত অবস্থায় গত ১১ আগস্ট তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। জ্বর নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যান। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে মৃত্যু হয় তার। এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৌসুমী নামে এক পোশাক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায়।

মাগুরা সদর উপজেলার নরসিংহাটি গ্রামে জয়নাল শরীফ নামে পঞ্চাশোর্ধ একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.