আফগানিস্তানে ২৫ জনকে হত্যার কথা স্বীকার করলেন প্রিন্স হ্যারি

0
195
আফগানিস্তানে ২০১২-১৩ মেয়াদে অ্যাটাক হেলিকপ্টারের পাইলট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন প্রিন্স হ্যারিছবি: রয়টার্স

৩৮ বছর বয়সী ডিউক অব সাসেক্স তালেবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আফগানিস্তানে দুই দফা দায়িত্ব পালন করেন। প্রথমবার ২০০৭-০৮ মেয়াদে বিমান হামলার ফরওয়ার্ড এয়ার কন্ট্রোলার কলিংয়ে দায়িত্ব পালন করেন প্রিন্স হ্যারি। পরে ২০১২-১৩ মেয়াদে অ্যাটাক হেলিকপ্টারের পাইলট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

প্রিন্স হ্যারির আত্মজীবনী ‘স্পেয়ার’ আগামী সপ্তাহে সারা বিশ্বে একযোগে প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে। এতে ব্রিটিশ রাজপরিবারের এই সদস্য লিখেছেন, পাইলট হিসেবে তিনি ছয়টি অভিযান পরিচালনা করেন। এসব অভিযানে তাঁকে ‘মানুষের প্রাণ নিতে হয়েছে’।

প্রিন্স হ্যারি বলেন, এই কাজ করার জন্য তিনি গর্বিতও নন, কিংবা লজ্জিতও নন। হামলায় লক্ষ্যবস্তুকে নিকেশ করে দেওয়ার মুহূর্তকে বোর্ড থেকে ‘দাবার গুটি সরিয়ে’ দেওয়ার মতো বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ব্রিটিশ রাজপরিবারের এই সদস্য সেনাবাহিনীতে ১০ বছর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ক্যাপ্টেন পদমর্যাদা পর্যন্ত পদোন্নতি পান। সেনাবাহিনীতে নিজের দায়িত্ব পালনের সময়কে গঠনমূলক বছর হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রিন্স হ্যারি।

নিরাপত্তার কারণে প্রিন্স হ্যারির আফগানিস্তান সফরের খবর প্রকাশে কঠোর কড়াকড়ি ছিল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমও বিষয়টি মেনে নেয়। তবে একটি বিদেশি পত্রিকা এই নিষেধাজ্ঞা ভেঙে খবর প্রকাশ করলে তিনি দেশে ফিরতে বাধ্য হন।

কতজন তালেবানকে হত্যা করেছেন, তা নিয়ে প্রিন্স হ্যারি কখনো প্রকাশ্যে কথা বলেননি।

অ্যাপাচি হেলিকপ্টারে বসানো ক্যামেরা প্রিন্স হ্যারিকে তাঁর অভিযান মূল্যায়নের সুযোগ করে দিয়েছে। এর ফলে কতজনকে তিনি হত্যা করেছেন, সেটা নিশ্চিতভাবে বলতে পারেন।

প্রিন্স হ্যারি লেখেন, ‘আমার সংখ্যাটা ছিল ২৫। এটি এমন একটি সংখ্যা নয়, যা আমাকে তৃপ্ত করে, তবে এটি আমাকে বিব্রতও করে না।’

যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনে হামলার স্মৃতি এবং হতাহতদের পরিবারে সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি তুলে ধরে প্রিন্স হ্যারি নিজের এই কাজকে ন্যায্যতা দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার জন্য যারা দায়ী এবং তাদের সহানুভূতিশীলেরা ‘মানবতার শত্রু’। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রতিশোধ নেওয়ারই একটি কাজ।

পারিবারিক বিরোধের জেরে রাজপ্রাসাদ ছেড়ে স্ত্রী মেগান মার্কেলকে নিয়ে ২০২০ সালে উত্তর আমেরিকায় পাড়ি জমান প্রিন্স হ্যারি। বিবাদ মিটিয়ে রাজপ্রাসাদে ফেরার ইচ্ছা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সিংহাসনের উত্তরাধিকারী বড় ভাই প্রিন্স অব ওয়েলস উইলিয়ামের বিরুদ্ধে শারীরিকভাবে আঘাতেরও অভিযোগ এনেছেন হ্যারি। আত্মজীবনীর উদ্ধৃতি দিয়ে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

প্রিন্স হ্যারি লেখেন, অভিনেত্রী মেগানকে বিয়ে করায় দুই ভাইয়ের সম্পর্ক ভেঙে যায়। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে এ সংঘাত চরম আকার ধারণ করে। প্রিন্স হ্যারি লেখেন, উইলিয়াম ‘আমার কলার চেপে ধরে, গলার চেইন ছিঁড়ে ফেলে এবং…মেঝেতে ছিটকে ফেলে দেয়’। এতে পিঠে জখম হয় হ্যারির।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.