আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারি

0
47
গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পুনর্বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত সামগ্রিকভাবে বাতিলের পর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ প্রজ্ঞাপন জারি করে। গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এখন থেকে সরকারি চাকরিতে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নেয়া হবে। বাকি ৭ শতাংশ নেয়া হবে কোটায়। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা হয়েছে ৫ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য রাখা হয়েছে ২ শতাংশ।
 
এর আগে সোমবার (২২ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডে সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে ছাত্ররা যেভাবে চেয়েছেন আদালত সেভাবে রায় দিয়েছেন। অর্থাৎ আপিল বিভাগের আদেশটি সেভাবেই হয়েছে। আমরা সেভাবেই প্রজ্ঞাপন করতে চেয়েছি।’
 
সরকারকে সংশোধনের যে সুযোগ আপিল বিভাগ দিয়েছেন, সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো সংশোধন কিংবা পরিবর্ধন করছি না। হাইকোর্টের রায় যেভাবে আছে, সেভাবেই প্রজ্ঞাপন হবে।’
তিনি বলেন, সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে নবম গ্রেড থেকে শুরু করে অন্যসব চাকরিতে অর্থাৎ ২০তম গ্রেডে নিয়োগের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর করা হবে।
 
সংরক্ষিত যে সাত শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে, তার মধ্য থেকে যদি কোনো শিক্ষার্থী না থাকেন, তাহলে কী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে; জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা আগেও চালু ছিল। আগে যে কোটা ছিল, সেখানে যারা বিসিএস ক্যাডারদের আগে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় টিকতে হতো, তার মৌখিক পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হতে হতো। যারা আগে কোটা থেকে আসতেন, তারাও মেধাবী ছিলেন।’
 
‘তখন কোটায় যদি কেউ সুযোগ না পেতেন, তখন বাকিটা মেধা নেয়া হতো। ৩৮তম বিসিএসে ২৮ শতাংশ কোটা থেকে সুযোগ পেয়েছিলেন। বাকিটা মেধা থেকে নেয়া হয়েছিল,’ বলেন ফরহাদ হোসেন।
 
এর আগে, রোববার (২১ জুলাই) কোটা পুনর্বহাল করে দেয়া হাইকোর্টের রায় বাতিল করেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অর্থাৎ সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিতে নিয়োগ পাওয়ার জন্য কোটাপ্রথা হিসেবে মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
 
গত ৫ জুন কোটা বহালে হাইকোর্টের রায়ের পর থেকেই কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে এই আন্দোলনে ঢুকে পড়ে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। দেশজুড়ে জ্বালাও-পোড়াও আর ধ্বংসযজ্ঞে মেতে ওঠে একটি মহল। তবে কোটা আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, নাশকতার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। নাশকতা সমর্থনও করেন না তারা।
আতাউর রহমান রাইহান

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.